নিজস্ব প্রতিনিধি: মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর সংঘাতের জেরে সেখান থেকে কেউ যেন সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থানে থাকতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ কথা জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
শাহরিয়ার আলম বলেন, মিয়ানমারের যে জোন থেকে শরণার্থী বা রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসেছিল, সেই জোন অর্থাৎ রাখাইন রাজ্যে মাসখানেক ধরে কিছু ঘটনার খবর মিলছে। বিশেষ করে গত ২০ ও ২৮ আগস্ট দুটো সুনির্দিষ্ট ঘটনা ঘটেছে।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ কোনো সংঘাতের কারণে সেখানকার দুটি মর্টারশেল বা শেলের অংশবিশেষ বাংলাদেশের সীমানায় পড়েছিল। তার পরপরই ২১ ও ২৯ আগস্ট আমরা ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদপত্র দিয়েছি, আমাদের উদ্বেগের কথা বিস্তারিতভাবে জানিয়েছি।
‘২-৩ দিন ধরে সেখানকার অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। যদিও এটা মিয়ানমারের বিষয়, তবে সেই সমস্যার প্রভাব যেন বাংলাদেশের সীমান্তে না পড়ে সে বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি। অনেকে আশঙ্কা করছেন, এ সংঘাতের জেরে আগের মতো রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে চলে আসেন কি না। আমরা এ বিষয়টাতেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।
কারণ ২০১৬-১৭ সালে রোহিঙ্গাদের স্রোত আমরা ঠেকাতে পারিনি। আসলে আমরা ঠেকাতে চাইনি, তখন মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের (রোহিঙ্গা) জায়গা দিয়েছেন। এবার কিছু তথ্য আছে, সেজন্য আমাদের সংস্থাগুলো ভালোভাবে প্রস্তুত আছে, বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, যেন মিয়ানমারের একজন নাগরিকও বাংলাদেশে ঢুকতে না পারেন।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা কোনো উসকানিতে পা দিতে চাই না। কারণ এ ধরনের বিষয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারলে তাদের কৌশলগত কোনো ফায়দা হতে পারে। রোহিঙ্গাদের নিয়ে আমরা যে সমস্যায় আছি, তার দায় আমাদের দিকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে আমরা সতর্ক।
এমন হয়েছে, মিয়ানমারে সংঘাতে লিপ্ত বিদ্রোহীগোষ্ঠীকে সমর্থন করে যারা ,তাদের দু-একজন সীমানা পেরিয়ে এদেশে এসেছেন, তাদের গ্রেফতার করে আমরা আবার মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তর করেছি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের সত্যিকারের উদ্দেশ্যটা জানে।
মিয়ানমার সীমান্তের চলমান ঘটনা প্রবাহ সরকার কূটনৈতিক মহলে জানিয়ে রাখবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখানে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তারা যেন বুঝতে পারেন, সে জন্য আমরা অগ্রিম বিষয়গুলো কূটনীতিকদের জানিয়ে রাখবো।
সময় জার্নাল/এলআর