মাদকবিরোধী অভিযানে এতদিন যাদের মারা হয়েছে বা ধরা হয়েছে তারা কি আওয়ামী লীগের—এমন প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। ‘বিএনপির মাদক ব্যবসায়ীদের খুঁজে বের করা হবে’—আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এ প্রশ্ন তোলেন মওদুদ।
বুধবার (৬ জুন) জাতীয় প্রেসক্লবে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এ একথা বলেন ।
মওদুদ বলেন,‘এটি আশ্চর্যের বিষয় যে এখন বলা হচ্ছে বিএনপির মাদক ব্যবসায়ীদের ধরা হবে। তাহলে এতদিন যাদের ধরেছেন বা মেরেছেন তারা কি সব আওয়ামী লীগের? আজকে এটা বলা হচ্ছে, কারণ অভিযানের নামে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা হবে। ইতোমধ্যে তা শুরু হয়ে গেছে। আমাদের অনেক নেতাকর্মীর নাম তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে।’
পুলিশ চাঁদাবাজি করছে অভিযোগ এনে মওদুদ বলেন, ‘চাঁদাবাজির সঙ্গে পুলিশের একটি অংশ সম্পূর্ণভাবে জড়িত। পুলিশের এই অপরাধ ঢাকার জন্য নিরীহ মানুষের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার অভিযোগে অভিযান চালানো হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত একজন প্রধান বিচারপতির অধীনে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে প্রত্যেকটি হত্যার বিচার করতে হবে।’
গত পাঁচ বছরে মাদক ব্যবসা যে প্রসার লাভ করেছে তা আগে কখনও হয়নি দাবি করে মওদুদ বলেন, ‘অতীতের সব রেকর্ড তারা ভঙ্গ করেছে। মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকাগুলো তো তাদের কাছে অনেক আগে থেকে থাকার কথা। এই তালিকা অনুযায়ী তারা কেন আগে গ্রেফতার করে নাই? কেন তারা এতদিন চুপ ছিল? কারণ, মাদক ব্যবসায়ীরা সরকারি দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাদের হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করার সুযোগ দিয়েছে এই সরকার। একইসঙ্গে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ধ্বংস করে দেওয়ারও সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।’
অভিযানের মাধ্যমে মানুষ হত্যা করার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে এমন দাবি করে তিনি বলেন, এই অভিযানের মাধ্যমে মানুষ হত্যার লাইসেন্স দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই অধিকার কে আপনাকে দিয়েছে? সংবিধানের কোথায় আছে যে আপনি একজন মানুষকে বিচার ছাড়া হত্যা করতে পারবেন? আজকে দেশে আইনের শাসন নেই বলে অবলীলাক্রমে এই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালানো সম্ভব হচ্ছে।’ যাদের মারা হচ্ছে এদের বেশিরভাগই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নন বলেও দাবি করেন মওদুদ।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদিকে বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়ার পর মাদকবিরোধী অভিযানের আর গুরুত্ব থাকে না, এমন দাবি করে মওদুদ বলেন, ‘একবার ৭৭ জনের একটি তালিকা দিয়ে বলা হয়েছিল এরা শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী। এদের একজনকেও গ্রেফতার করে নাই, মারা তো দূরের কথা। এই যে এমপি বদি, যাকে বাংলাদেশের সব মানুষ চেনে একজন মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে, তাকে আপনারা বিদেশে যাওয়ার জন্য ব্যবস্থা করে দিলেন।’
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আমাদের দেশ পত্রিকার (বর্তমানে বন্ধ) ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, বিএফইউজের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী প্রমুখ ।