আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা ঘোষণা দেওয়ার পর জার্মানি থেকে দেশে ফিরছেন ডিউক অব সাসেক্স প্রিন্স হ্যারি ও ডাচেস অব সাসেক্স মেগান মেরকেল। বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ রাজপরিবারের এই দম্পতির এক মুখপাত্র এই তথ্য জানিয়েছেন বলে খবর দিয়েছে বিবিসি।
ওই মুখপাত্র বলেছেন, ডিউক অব সাসেক্স প্রিন্স হ্যারি ও ডাচেস অব সাসেক্স মেগান মেরকেল জার্মানি থেকে দেশে ফিরে আসছেন। তারা দেশে পৌঁছানোর পর স্কটল্যান্ডে যাবেন।
ব্রিটিশ এই দম্পতি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। সম্প্রতি বেশ কিছু কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন তারা।
বর্তমানে জার্মানিতে আহত প্রবীণ সামরিক কর্মকর্তাদের এক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেই প্রতিযোগিতায় অতিথি হিসেবে তারা জার্মানিতে আছেন। তবে রানির অসুস্থতার খবরে ইতোমধ্যে তারা দেশের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন বলে জানিয়েছেন ওই মুখপাত্র।
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দীর্ঘতম রাজত্বকারী ও বিশ্বের প্রবীণতম রানি গত বছরের শেষের দিক থেকে আকস্মিকভাবে চলাফেরার সমস্যায় ভুগছেন বলে জানিয়েছে বাকিংহাম প্যালেস।
প্যালেসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আজ সকালে অতিরিক্ত পর্যালোচনার পর রানির চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং তাকে চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।’ রানি বর্তমানে স্বস্তিদায়ক পরিস্থিতিতে আছেন এবং তিনি স্কটল্যান্ডে রাজপরিবারের বাসভবন বালমোরাল ক্যাসেলে রয়েছেন বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
এদিকে, রানির আকস্মিক অসুস্থতার খবরে ইতোমধ্যে রাজপরিবারের চার সন্তান ও নাতি-নাতনিরা স্কটল্যান্ডের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছেন।
বালমোরাল ক্যাসেলে যে গুরুতর কিছু ঘটছে তা বিবিসির সাবেক রাজপ্রাসাদ সংবাদদাতা রিচার্ড সামনারের কথায় উঠে এসেছে। তিনি বলেছেন, বাকিংহাম প্যালেসের বিবৃতির সতর্কতামূলক শব্দগুলো ‘সম্ভবত গুরুতর কিছু ঘটছে’ বলে ইঙ্গিত দিয়েছে।
বিবিসির সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, রানির বয়সের পাশাপাশি অন্যান্য জটিল চিকিৎসা সমস্যাও হতে পারে। আপনার বয়স যখন ৯৬ বছর, তখন অবশ্যই আপনি ২৫ বছর বয়সী ব্যক্তির স্বাস্থ্যের মতো আশা করতে পারবেন না।
‘আমি আশা করছি এই ক্ষণস্থায়ী ঝড় কাটিয়ে ওঠা যেতে পারে। তবে প্যালেসের সতর্কতামূলক শব্দ থেকে ধারণা করা যায় যে, সম্ভবত সেখানে গুরুতর কিছু চলছে।’
ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শারীরিক অবস্থা হঠাৎ করেই খারাপ হয়েছে। চিকিৎসকরা রানির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন। বর্তমানে ৯৬ বছর বয়সী ব্রিটিশ এই রানি চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে আছেন। বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ রানির শারীরিক অবস্থার আকস্মিক অবনতির ব্যাপারে খবর দিয়েছে দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যম।
রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিকিৎসকরা ব্রিটেনের রানির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ায় রাজপরিবারের সদস্যরা তার পাশে থাকতে ইতোমধ্যে স্কটল্যান্ডে ছুটে যাচ্ছেন। তবে তিনি চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে থাকবেন।
রাজপ্রাসাদের কর্মকর্তারা বলেছেন, রানির বড় ছেলে এবং সিংহাসনের উত্তরাধিকারী প্রিন্স চার্লস ও তার স্ত্রী ক্যামিলা রাজপরিবারের স্কটিশ বাসভবন বালমোরাল ক্যাসেলে যাচ্ছেন। রানি বর্তমানে বালমোরাল ক্যাসেলে তার বড় ছেলে প্রিন্স উইলিয়ামের সাথে অবস্থান করছেন।
গত বছরের অক্টোবরে শারীরিক অসুস্থতার কারণে রানি এলিজাবেথ হাসপাতালে এক রাত কাটিয়েছিলেন। এরপর থেকে ব্যস্ততা কমাতে বাধ্য হন তিনি। বুধবার চিকিৎসকদের বিশ্রামে থাকার পরামর্শ মেনে যুক্তরাজ্যের জ্যেষ্ঠ মন্ত্রিদের সাথে অনলাইন বৈঠকে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকেন তিনি।
তার আগের দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার বালমোরাল ক্যাসেলে কনজারভেটিভ পার্টির নেতা লিজ ট্রাসকে যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করেন রানি। ব্রিটেনের রানির সাথে নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের সাক্ষাতের ছবি বাকিংহাম প্যালেস থেকে প্রকাশ করা হয়।
প্যালেসের একটি সূত্র বলেছে, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধিকারী রানির পতন ঘটেছে বলে যে গুঞ্জন ছড়িয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করে তাৎক্ষণিকভাবে পরিবারের সদস্যদের জানানো হয়েছে।
দ্বিতীয় এলিজাবেথ ১৯৫২ সাল থেকে ব্রিটেন এবং অন্যান্য এক ডজনেরও বেশি দেশের রানি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে সিংহাসনে আরোহণের ৭০তম বছর উদযাপন করেন তিনি।