শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

নানা ঝুঁকির মুখোমুখি জি এম কাদের

শুক্রবার, সেপ্টেম্বর ৯, ২০২২
নানা ঝুঁকির মুখোমুখি জি এম কাদের

সময় জার্নাল ডেস্ক:


সরকারবিরোধী শক্ত অবস্থান নেওয়ার পর দলের ভেতরে-বাইরে নানা ঝুঁকির মুখে পড়ছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের। তাঁকে বিরোধীদলীয় নেতা করার দলীয় সিদ্ধান্তটি এখনো ঝুলে আছে। এরই মধ্যে গুঞ্জন ছড়ায়, জি এম কাদেরকে সরিয়ে দলের কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদকে উপনেতা করছেন রওশন এরশাদ।


জানা গেছে, রওশন এরশাদ আগামী অক্টোবর মাসের শুরুতে দেশে ফিরবেন। তারপর জাপার অভ্যন্তরীণ রাজনীতি কোন দিকে গড়াবে, তা নিয়ে নানামুখী আলোচনা, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে নেতা-কর্মীদের ভেতর। তবে সব ছাড়িয়ে এ মুহূর্তে সবার চোখ জাতীয় সংসদের স্পিকারের কার্যালয়ে—রওশনকে সরিয়ে বিরোধীদলীয় নেতার পদে জি এম কাদেরকে স্থলাভিষিক্ত করতে জাপার সংসদ সদস্য ও দলে নীতিনির্ধারণী পর্ষদ প্রেসিডিয়াম সভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্তটির কী হয়, সেদিকে।এ বিষয়ে জি এম কাদের বলেন, ‘আমরা অপেক্ষায় আছি। স্পিকার আমাদের এখনো রিপ্লাই দেননি। আমরা আরেকটু দেখব।’


সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এ বিষয়ে স্পিকারের সিদ্ধান্ত কী হয়, সেটির ওপর ভিত্তি করে একটা ইঙ্গিত মিলবে জাতীয় পার্টির শীর্ষস্থানীয় নেতৃত্বের ব্যাপারে সরকারের অবস্থানটা কী। এর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জি এম কাদেরকে উপনেতার পদ থেকে সরানো, কাজী ফিরোজ রশীদকে স্থলাভিষিক্ত করাসহ নানা গুঞ্জন নতুন মাত্রা যোগ করেছে।


কাজী ফিরোজ রশীদকে উপনেতা করার বিষয়ে জানতে চাইলে রওশন এরশাদ গতকাল শুক্রবার বিকেলে ব্যাংকক থেকে মুঠোফোনে জানান, ‘চিঠি গেছে তো।’ কবে গেছে জানতে চাইলে মুঠোফোনের পাশ থেকে কেউ একজনকে কথা বলতে শোনা যায়। এরপর রওশন এরশাদ বলেন, ‘চিঠি দিইনি। দেব কেন এখন? দেওয়ার তো কথা নয়।’


প্রায় ১০ মাস ধরে রওশন এরশাদ ব্যাংককের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে তাঁর সঙ্গে ছেলে সাদ এরশাদ ও ছেলের বউ রয়েছেন।অবশ্য জি এম কাদের জানান, কাউকে উপনেতা করা হচ্ছে—এ ধরনের তথ্য তাঁর কাছে নেই। তবে চিঠি দেওয়ার অথোরিটি ওনার (রওশন এরশাদ) নেই।






জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই হঠাৎ রওশন এরশাদের সম্মেলন আহ্বান এবং এর আগে পরপর সংঘটিত তিনটি ঘটনা নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংশয়-সন্দেহের সৃষ্টি করেছে। গত আগস্ট মাসেই জি এম কাদের জীবননাশের আশঙ্কাসংবলিত বার্তা পান। এরপর সড়ক দুর্ঘটনায় তাঁর আহত হওয়া, হঠাৎ রওশন এরশাদের সম্মেলন ডাকার পরদিনই তাঁর মুঠোফোন ছিনতাই হয়। পরপর সংঘটিত ঘটনাগুলো কাকতাল, নাকি এর সঙ্গে অন্য কিছুর যোগসূত্র আছে, তা নিয়ে নানা জল্পনাকল্পনা আছে; যদিও ছিনতাইয়ের ৯ দিন পর কয়েক হাত বদল হওয়া জি এম কাদেরের মুঠোফোনটি গত বৃহস্পতিবার ।


জাপার দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট জি এম কাদেরকে তাঁর মুঠোফোনে জীবননাশের হুমকিসংবলিত একাধিক বার্তা পাঠান কাজী মামুনুর রশীদ নামের এক ব্যক্তি। এর মধ্যে কাজী মামুনুর রশীদের ব্যবহার করা মুঠোফোন থেকে জি এম কাদেরকে বরইগাছের পাতার ছবি পাঠানো হয়। এরপর তিনি কবরের ছবি পাঠান। এ ঘটনার পর ৭ আগস্ট জি এম কাদেরের জীবননাশের হুমকির কথা জানিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন বিরোধীদলীয় উপনেতার সহকারী একান্ত সচিব মো. আবু তৈয়ব।


জি এম কাদেরকে কবরের ছবি পাঠানোর কথা স্বীকার করেন কাজী মামুনুর রশীদ। তিনি বলেন, ‘আমাকে একজন এইটা (কবরের ছবি) পাঠাইছে, আমি আবার এইডা উনারে না শুধু, এক থেকে দেড় শ লোককে ফরওয়ার্ড করেছি। এইটার উদ্দেশ্য হইল আমরা প্রত্যেকে যেন কবরের চিন্তাটা করি আরকি। কারণ, আমাদের তো শেষ ঠিকানা কবর।’



খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাজী মামুনুর রশীদ একসময় জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন। দলীয় স্বার্থ ও শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে ২০২০ সালে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর তিনি বিদিশা সিদ্দিকের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কিছুদিন জাতীয় পার্টির নামে আলাদা তৎপরতা চালান। বিদিশার সমর্থনে ২০২১ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হন কাজী মামুনুর রশীদ। বিদিশার সঙ্গেও সম্প্রতি তাঁর দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে তিনি বিরোধীদলীয় নেতার রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসীহর সঙ্গে যুক্ত হয়ে জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে সক্রিয় হয়েছেন।


জীবননাশের আশঙ্কাসংবলিত বার্তা পাওয়া এবং এ বিষয়ে থানায় জিডি করার এক সপ্তাহের মাথায় বিমানবন্দর সড়কের খিলক্ষেত এলাকায় তাঁর গাড়িকে পাশ থেকে চাপা দেয় দ্রুতগামী একটি পরিবহন। এতে জি এম কাদের বুকে আঘাত পান। তাঁকে বহনকারী গাড়ির দুটি দরজাই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ১৮ দিনের মাথায় ৩০ আগস্ট হঠাৎ জাপার সম্মেলন আহ্বান করে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠান রওশন এরশাদ। পরদিনই বিমানবন্দর সড়কে জি এম কাদেরের হাত থেকে তাঁর মুঠোফোন ছিনতাই হয়।এ বিষয়ে জি এম কাদের  বলেন, ‘এসব ঘটনাকে আমি স্বাভাবিকভাবেই ধরেছি। কিন্তু দেশের পরিস্থিতি যা, তাতে রাজনীতিতে কোনো কিছুই আর অসম্ভব নয়।’


এসএম



Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল