আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে বিভিন্ন বিদেশি রাজনৈতিক দল ও নির্বাচনী প্রার্থীকে অন্তত ৩০ কোটি মার্কিন ডলার দিয়েছে রাশিয়া। ২০১৪ সালের পর থেকে দুই ডজনেরও বেশি দেশে গোপনে এই অর্থ পাঠিয়েছে তারা। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এমন দাবি করা হয়েছে। খবর এএফপির।
বাইডেন প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, মার্কিন গোয়েন্দাদের বিশ্বাস, এটি ন্যূনতম পরিসংখ্যান। রাশিয়া সম্ভবত গোপনে আরও বিপুল অর্থ স্থানান্তর করেছে, যা শনাক্ত করা যায়নি। আমরা মনে করি, এটি হিমশৈলের চূড়া (টিপ অব দ্য আইসবার্গ) মাত্র।
রাশিয়া কোন কোন দেশে রাজনৈতিক প্রভাব বাড়াতে অর্থ পাঠিয়েছে, তা নির্দিষ্ট করে বলেনি যুক্তরাষ্ট্র। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা এর আগে বসনিয়া ও ইকুয়েডরের মতো দেশগুলোর দিকে আঙুল তুলেছিলেন। অভিযোগ, নিজেদের অর্থনৈতিক শক্তি ব্যবহার করে এসব দেশের রাজনীতিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছে রাশিয়া।
নতুন মূল্যায়নে উদ্ধৃত সবচেয়ে গুরুতর ঘটনাগুলোর মধ্যে একটিতে মার্কিন গোয়েন্দারা বলেছেন, এশিয়ার নাম অনুল্লেখিত একটি দেশের রুশ রাষ্ট্রদূত সেখানকার এক প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে কয়েক মিলিয়ন ডলার দিয়েছিলেন।
ইউরোপে কল্পিত চুক্তি ও ভুয়া কোম্পানির নাম ব্যবহার করে রাজনৈতিক দলগুলোতে অর্থায়ন করেছে রাশিয়া। মূল্যায়নে বলা হয়েছে, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সংস্থাগুলো মধ্য আমেরিকা, এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় গোপন তহবিল পাঠাতে সরাসরি ভূমিকা রেখেছে।
মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুসারে, বেশিরভাগ সময় বিদেশি রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিদের সরাসরি নগদ অর্থ পাঠিয়েছে রাশিয়া। তবে প্রভাব বিস্তারে ক্রিপ্টো-কারেন্সি ও বিলাসবহুল উপহারের পদ্ধতিও ব্যবহার করেছে তারা।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর গোয়েন্দাদের কাছে এই মূল্যায়ন প্রতিবেদনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন।
মূল্যায়ন প্রতিবেদনটিতে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বিষয়ে কোনো কথা নেই। তবে মার্কিন গোয়েন্দারা এর আগে দাবি করেছিলেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছিল মস্কো। সেসময় রাশিয়া সোশ্যাল মিডিয়া কারসাজির মাধ্যমে মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিল বলে দাবি করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে বিশ্বজুড়ে মার্কিন দূতাবাসগুলোতে পাঠানো এক অভ্যন্তরীণ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিদেশের পরিবেশ নিজেদের অনুকূলে নিতে গোপনে প্রচারণা চালিয়েছে রাশিয়া।
রুশ কর্মকর্তারা বরবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বরং যুক্তরাষ্ট্রের দিকে তাদের পাল্টা অভিযোগ, ইরান-চিলির মতো দেশগুলোতে অভ্যুত্থানের পেছনে সিআইএ’র ভূমিকার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।
সময় জার্নাল/এলআর