নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রিসোর্ট কাণ্ডে ধর্ষণ মামলায় ষষ্ঠ দফায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয়েছে।
রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) কড়া নিরাপত্তায় তাকে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ মুন্সি মশিয়ার রহমানের আদালতে হাজির করা হয়।
এ দিন তার বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানার পুলিশ পরিদর্শক তবিদুর রহমান, সাইদুজ্জামান, এসআই ইয়াউর রহমান ও এএসআই রাকিবুল ইসলাম উজ্জ্বলসহ চার পুলিশ কর্মকর্তা ও আগের ধার্য তারিখে (১৭ জুলাই) বাকি থাকা দুই সাক্ষীসহ মোট ছয়জনের সাক্ষ্য নেওয়ার কথা থাকলেও দুই পুলিশ কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সরকারি কৌঁসুলি রকিব উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, সোনারগাঁ থানাধীন রয়েল রিসোর্টে ভুক্তভোগীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেন মামুনুল হক। সোনারগাঁ থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তা ভুক্তভোগীকে ঘটনাস্থলে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বলেন, আসামি মামুনুল হক তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছে। কিন্তু পরবর্তীতে তাকে বিয়ের কথা বললে, তিনি বিয়ে করতে অস্বীকার করেন।
তিনি আরও বলেন, এই মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত। আরও ৩০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করবে আদালত। আদালত আগামী ৩০ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করে।
এর আগে সকাল ৯টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয় মামুনুল হককে। পরে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে কাশিমপুর কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, আজ মামুনুল হকের বিপরীতে চার পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করার কথা ছিল। তবে আদালত দুই পুলিশ কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ করে। আমরা সাক্ষীদের সাক্ষ্যের কোনো মিল পাচ্ছি না। আমরা আশাবাদী তিনি এই মামলায় খালাস পাবেন।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য মামুনুল হককে নারায়ণগঞ্জ আদালতে হাজির করা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে এক নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তাকে আটক করেন। পরে স্থানীয় হেফাজতের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এসে রিসোর্টে ভাঙচুর করে তাকে ছিনিয়ে নেয়। ওই ঘটনায় ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করেন ওই নারী। তবে তিনি ওই নারীকে তার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করেছেন।
এমআই