নিজস্ব প্রতিবেদক:
ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর অপরপক্ষকেও আসামি করে পাল্টা মামলা দায়ের হয়েছে। ইডেন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিতু আক্তার বাদী হয়ে লালবাগ থানায় মামলা করেছেন। তিনি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এম এম মোর্শেদ।
তিনি বলেন, বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাতে মামলা হয়েছে। ইডেন কলেজে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। একটি কোর্টে অপরটি থানায়। তবে দুই মামলার তদন্তই লালবাগ থানা পুলিশ করছে।
জানা গেছে, বেআইনিভাবে মারপিট করে সাধারণ জখমসহ হত্যার চেষ্টা, চুরি, ক্ষতি করা ও হুমকি দেওয়ার অপরাধে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৪৩, ৩২৩, ৩০৭, ৩৭৯, ৪২৭ ও ৫০৬ ধারায় মামলা করা হয়েছে। এতে জেবুন্নাহার শিলা, সামিয়া আক্তার বৈশাখী, মারজানা আক্তার উর্মি, কল্পনা বেগম, সোনালী আক্তার, সুস্মিতা বাড়ৈ, আফরোজা রশ্মি, রুপা দত্ত, ফাতেমা খানম বিন্তি, সাদিয়া জাহান সাথী, সানজিদা পারভিন চৌধুরী, শেখ সানজিদা, এস এম মিলি, মারিয়া, শারমিন, জান্নাতুল ফেরদৌস, মনিকা তনচংগ্যা মিমি, মায়দা বেগম মায়া, তানজিলা আক্তারসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। এদের অধিকাংশই ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি ও সহ-সম্পাদক। একইসাথে কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরোধী প্যানেল হিসেবেও পরিচিত।
গত বুধবার ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসী ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মোস্তফা রেজা নুরের আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালত সেটি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। ওই মামলার আসামিরা হলেন- তামান্না জেসমিন রিভা, রাজিয়া সুলতানা, নুঝাত ফারিয়া রোকসানা, মিম ইসলাম, নূর জাহান, ঋতু আক্তার, আনিকা তাবাসসুম স্বর্ণা ও কামরুন নাহার জ্যোতি।
জান্নাতুল ফেরদৌসী ওই আটজনের নাম উল্লেখসহ ২০/২৫ জন অজ্ঞাত পরিচয় আসামির বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন। এরপর আদালত তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। শুনানি শেষে আদালত মামলার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আগামী ২৩ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার নেতৃত্বে অন্যান্য আসামিরা ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্য, অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জান্নাতুল, মামলার সাক্ষী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। এতে আসামিরা ভুক্তভোগী জান্নাতুলের ওপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে হন। পরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে আসামি রিভা ও রাজিয়ার নির্দেশে আসামি আনিকাসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৩/৪ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার কক্ষে প্রবেশ করেন। তাকে না পেয়ে তার আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। তারা ওই কক্ষ থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা ও একটি ল্যাপটপ নিয়ে যায়। ভুক্তভোগীর রুমে আসার পথে তাকে আসামিরা ঘিরে ফেলেন। তাকে বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে আসামিরা ভুক্তভোগী জান্নাতুলকে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে জখম করেন।
এমআই