মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

পাটকেলঘাটায় ছাত্রীকে ধর্ষণ, মামলা না নেয়ার অভিযোগ

শুক্রবার, অক্টোবর ৭, ২০২২
পাটকেলঘাটায় ছাত্রীকে ধর্ষণ, মামলা না নেয়ার অভিযোগ

মুহা: জিললুর রহমান, সাতক্ষীরা প্রতিনিধি:

সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় ১০ শ্রেণীর এক মাদ্রাসার ছাত্রীকে অপহরণের পর পাঁচ দিন ধরে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। পাটকেলঘাটা থানায় অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ দেওয়ার পরও ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে মামলা না নিয়ে তার বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ধর্ষিতা ওই মাদ্রাসা ছাত্রীকে সাতক্ষীরা সদর  হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, থানায় যেতে দেরী করায় ওই ভিকটিমের চা বিক্রেতা বাবাকে বাড়ি থেকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। মেয়েকে না নিয়ে গেলে বাবাকে  মোবাইল কোর্টে সাজা দেবেন বলে হুমকি দিয়েছেন পাটকেলঘাটা থানার উপপরিদর্শক রমজান আলী।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পাটকেলঘাটা থানাধীন ধানদিয়া ইউনিয়নের একটি দাখিল মাদ্রাসার ১০ম শ্রেণীর ওই ছাত্রী (১৫) জানান, পার্শ্ববর্তী শানতলা গ্রামের সাহেব আলী গাজীর ছেলে মামুন গাজী তার সহপাঠী। তাদের সঙ্গে ভালবাসার সম্পর্ক ও ছিল। গত পহেলা অক্টোবর রাত ৯টার দিকে বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় তিনি বাড়ির সামনে রাস্তায় এসে দাঁড়ান। এ সময় মামুন ও তার ভাই আল আমিন একটি মোটর সাইকেলে তাকে তুলে নিয়ে সেনেরগাঁতি গ্রামে তার (মামুন)ফুফুর বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে বিয়ে করার কথা বলে তিনদিন ধর্ষণ করা হয়। ৪ অক্টোবর ভারে তাকে শানতলা গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যায় মামুন। সেখানে তাকে দুই দিন ধর্ষণ করা হয়। ৫ অক্টোবর রাতে পুলিশ মামুনের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করে পাটকেলঘাটা থানায় নিয়ে যায়।

ধর্ষিতা মাদ্রাসা ছাত্রীর বাবা শার্শা বাজারের এক চা বিক্রেতা জানান, পহেলা অক্টোবর রাতে তার মেয়েকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ায় পরদিন তিনি পাটকেলঘাটা থানায় শানতলা গ্রামের মামুন ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন। পুলিশ ৫ অক্টোবর রাতে মামুনের বাড়ি থেকে মামুনকে আটক ও তার মেয়েকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। 

এ সময় তাকে থানায় যেতে বলা হয়। পরদিন থানায় যেতে দেরী হওয়ার অভিযোগ তুলে উপপরিদর্শক রমজান আলী তাকে সকাল ১১টার দিকে মারতে মারতে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে থানায় যান।  মামলা না নিয়ে মেয়েকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে তিনি রাজী না হওয়ায় তাকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দুই বছরের সাজা দেওয়ার হুমকি দেন রমজান আলী।একপর্যায়ে তিনি মেয়েকে নিয়ে এসে শুক্রবার (৭ অক্টোবর) বিকালে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ মীর মাহাফুজুল আলম জানান, শুক্রবার বিকাল সোয়া চারটায় ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের কথা  বলে ভর্তি করা হয়। তবে  তার শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। যেহেতু মেয়েটির সাথে ছেলেটির প্রেমের সম্পর্ক ছিল সেক্ষেত্রে স্বেচ্ছায় শারীরিক সম্পর্ক হতে পারে। বিষয়টি সদর থানাকে অবহিত করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে পাটকেলঘাটা থানার উপপরিদর্শক রমজান আলী তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন। শানতলা গ্রামের মামুন শেখ বলেন, সহপাঠীর বাবা জোরপূর্বক মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দিতে চাইলে তার মা পহেলা অক্টোবর মেয়েকে তার হাতে তুলে দিয়েছে। সহকারি ভূমি কর্মকর্তার কাছে মুচলেকা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরও এখন মামলা দিতে মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে।

পাটকেলঘাটা থানার পুলিশ পরিদর্শক বিশ্বজিৎ অধিকারী জানান, গত ৫ অক্টোবর মেয়েটিকে উদ্ধারের পর বৃহষ্পতিবার দুপুরে তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে মোবাইল কোর্টের জন্য ভিকটিম ও মামুনকে পাটকেলঘাটা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রুহুল কুদ্দুসের কাছে পাঠানো হয়। ছেলে ও মেয়ে উভয়েই অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় উভয়পক্ষের কাছে থেকে মুচলেকা নিয়ে বাবা ও মায়ের কাছে ভিকটিমকে তুলে দেওয়া হয়। বাবার কাছে তুলে দেওয়া হয় মামুনকে। উপপরিদর্শক রমজান আলীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।

সাতক্ষীরা সদর থানার উপপরিদর্শক হাসানুর রহমান জানান, সদর হাসপাতাল থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি ১০ম শ্রেণীর ওই ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি পাটকেলঘাটা থানার অর্ন্তগত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট থানাকে অবহিত করা হয়েছে।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল