মো. আবদুল্লাহ-আল-অনিক, বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি:
নাটোরের বাগাতিপাড়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে চোখ ওঠা রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। প্রতিদিন নানা বয়সের মানুষ এ ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন, তবে শিশুদের সংখ্যায় বেশি। উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে দেখা যায় শত শত নারী-পুরুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এবং প্রতিদিনই এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
এদিকে দোকানগুলোতে চোখের ড্রপ সংকট দেখা দিয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, ভাইরাস জনিত চোখ ওঠা রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তবে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
জানা গেছে, উপজেলার প্রায় প্রত্যেক গ্রামেই এ রোগ হানা দিয়েছে। পরিবারের একজন সদস্য আক্রান্ত হলে প্রায় সব সদস্যই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। প্রায় প্রতিদিনই হাসপাতাল, চক্ষু বিশেষজ্ঞ এমনকি গ্রাম্য চিকিৎসকদের কাছে চোখ ওঠা রোগীরা ভীড় করছেন।
এ রোগে সাধারনত চোখ লাল হওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখে ময়লা হওয়া, চোখে ব্যথা অনুভব ও খচ খচ করা, রোদে অস্বস্তি লাগা লক্ষণ নিয়ে রোগীরা চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন। শিশুরা আক্রান্ত হলে ৩-৪ দিনের মধ্যে ভাল হলেও বড়দের ক্ষেত্রে ৭-১০ দিন পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে। উপজেলার পাকা গ্রামের আবু হেনা বলেন, তার সোমবার চোখ ওঠা এই রোগ হয় এরপর তার স্ত্রীও বৃহস্পািতবার থেকে আক্রান্ত হয়েছেন। স্থানীয় চক্ষু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তারা চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পল্লী চিকিৎসক লিটন জানান, তিনি এক সপ্তাহ ধরে এ রোগে আক্রান্ত প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন রোগী পেয়েছেন। তবে তাদের মধ্যে বেশির ভাগ একই গ্রামের। এটি দ্রুতই গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে।
রাজশাহী মিশন হাসপাতালের অক্টোমেট্রিক্স হুমায়ূন কবির বলেন, তিনি তার গ্রামের বাড়ি বাগাতিপাড়ার তমালতলা বাজারে চেম্বার দিয়ে চক্ষু রোগীদের পরামর্শ দেন। গত এক সপ্তাহে তিনি প্রায় শতাধিক চোখ ওঠা রোগী পেয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুরা বেশি। তাছাড়াও কয়েকটি হাফেজিয়া মাদ্রাসার বেশির ভাগ ছাত্ররা এ রোগে আক্রান্ত হয়ে তার কাছে চিকিৎসা নিয়েছেন। আক্রান্তদের চিকিৎসা নেওয়ার পাশাপাশি চোখে পানির ব্যবহার না করা এবং সূর্যালোকে কালো রঙের চশমা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তিনি নিজেও কনজাংকটিভাইটিস বা চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এ রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। রোগীরা হাসপাতালে আসলে তারা চিকিৎসা প্রদান করছেন এবং করবেন। তবে রোগটি যেন অন্যদের মাঝে না ছড়ায়, আক্রান্ত ব্যক্তিকে সেদিকে সচেতন থাকতে হবে।
সময় জার্নাল/এলআর