আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিশ্বজুড়ে প্রায় এক হাজার কর্মীকে লেঅফ দিয়েছে জায়ান্ট প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট। এবিসি নিউজকে কোম্পানিটি নিশ্চিত করেছে যে, তারা সোমবার এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। বিভিন্ন পদে, বিভিন্ন পর্যায়ে এবং ভৌগলিক অঞ্চলে এই লেঅফ দেয়া হয়েছে। বিদ্যমান মুদ্রাস্ফীতি, আর্থিক মন্দার আতঙ্ক এবং শেয়ার বাজারে পতনের মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি বিষয়ক কোম্পানিগুলোর মধ্যে অন্যতম ও সর্ববৃহৎ কোম্পানি মাইক্রোসফট। তাদের এমন সিদ্ধান্ত পরিষ্কার করে দিচ্ছে যে, দুর্বল হয়ে পড়ছে প্রযুক্তি খাত।
এ বছর মাইক্রোসফটের শেয়ারের পতন হয়েছে শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ। নাসডাক কম্পোজিট ইনডেক্সের পতন হয়েছে শতকরা কমপক্ষে ৩১ ভাগ। এবিসি নিউজকে দেয়া এক বিবৃতিতে মাইক্রোসফট বলেছে, অন্য সব কোম্পানির মতো আমরাও নিয়মিত ভিত্তিতে আমাদের ব্যবসায় অগ্রাধিকার মূল্যায়ন করি। সে অনুযায়ী কাঠামোগত বিভিন্ন পরিবর্তন করা হয়। ব্যবসায় আমরা অব্যাহতভাবে বিনিয়োগ করবো।সামনের সময়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রবৃদ্ধির খাতগুলোতে লোক নিয়োগ করবো।
প্রথমে এমন লেঅফ ঘোষণা করে অ্যাক্সিওস। তার ধারাবাহিকতায় সোমবার মাইক্রোসফট যে ঘোষণা দিয়েছে তাতে বিশ্বজুড়ে তাদের যে পরিমাণ কর্মী আছেন, তার প্রায় শূন্য দশমিক ৫ ভাগ কমিয়ে ফেলা হবে। সারাবিশ্বে মাইক্রোসফটের কর্মী সংখ্যা দুই লাখ ২১ হাজার।
সর্বশেষ মাইক্রোসফট জুলাই মাসে কোম্পানির শতকরা এক ভাগেরও কম কর্মীর বিরুদ্ধে লেঅফ ঘোষণা করে। মাইক্রোসফট সম্প্রতি কোয়ার্টারলি আয়ের রিপোর্ট প্রকাশ করে জুলাই মাসে। কিন্তু বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি তা। ব্লুমবার্গের হিসেবে রাজস্ব আয়ের পরিমাণ ছিল ৫১৯০ কোটি ডলার। অথচ প্রত্যাশা ছিল ৫২৪০ কোটি ডলার।
বছর শুরুর আগে মাইক্রোসফটের প্রবৃদ্ধি মহামারির কারণে বৃদ্ধি হয়েছে। তারপরে ভোক্তা এবং ব্যবসায়িরা তাদের পণ্যের দিক থেকে একরকম মুখ ফিরিয়েছেন। ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর সময়ের মধ্যে মাইক্রোসফটের শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় শতকরা প্রায় ১০৭ ভাগ। কারণ এ সময়ে মানুষ ঘরবন্দি হয়ে প্রযুক্তি পণ্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে ওঠে। ফলে এসবের চাহিদা তুঙ্গে ওঠে। এ বছর অর্থনৈতিক মন্দা এবং করোনা মহামারি পূর্ববর্তী সময়ের দিকে ফিরতে শুরু করেন ভোক্তারা। অর্থাৎ অফিস আদালত খুলে যাওয়ায় তারা প্রযুক্তি পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে ফেলেন। ফলে প্রযুক্তি বিষয়ক কোম্পানিগুলোতে ধাক্কা লাগে। এ বছর অ্যামাজনের শেয়ার পতন হয় শতকরা প্রায় ৩০ ভাগ। ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার শেয়ার পতন হয় শতকরা ৬১ ভাগ।
এমআই