আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলোর যে বাণিজ্যিক স্যাটেলাইট মহাকাশে আছে, রাশিয়া তা ধ্বংস করতে পারে। পশ্চিমা দেশগুলো যেভাবে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিচ্ছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে একথা বলেছেন তিনি। বস্তুত, ওই কর্মকর্তার হুমকি, এরপরেও ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিলে পশ্চিমা দেশগুলোকে বড়সড় ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে।
রাশিয়ার ওই কর্মকর্তার নাম কনস্ট্যানটিন ভরোনৎসভ। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর। রাশিয়ার সংবাদসংস্থা তাস মিডিয়া তার এই বক্তব্য প্রচার করেছে।ভরোনৎসভ কোনো নির্দিষ্ট স্যাটেলাইট সংস্থার নাম উল্লেখ করেননি। তবে ইলন মাস্কের স্পেস এক্স অন্যতম টার্গেট হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা।
মস্কের স্পেস এক্স রকেটের সাহায্যে মহাকাশে স্টার লিঙ্ক স্যাটেলাইট স্থাপন করা হয়েছে। এই স্যাটেলাইট থেকে পাওয়া ইন্টারনেটের ওপর ইউক্রেনের প্রশাসন নির্ভর করে আছে। বস্তুত, যুদ্ধেও এই ইন্টারনেট প্রভূত সাহায্য করছে। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া মাস্কের ওই উপগ্রহ ধ্বংস করলে বিরাট ক্ষতির মুখোমুখি হবে যুক্তরাষ্ট্র।
বস্তুত, এ বিষয়ে গত সপ্তাহে মাস্ক সরব হয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, ইউক্রেনের ইন্টারনেটের জন্য মার্কিন প্রশাসন মাস্কের সংস্থাকে আর্থিক সাহায্য দেবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা করা হয়নি।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, রাশিয়ার এই হুমকি যদি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে এই প্রথম মহাকাশে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে। রাশিয়া উপগ্রহ ধ্বংস করলে অন্য দেশগুলোও সেই পথে এগোতে পারে তাদের আশঙ্কা।
যুদ্ধে রাশিয়ার কত সেনা মারা গেছে, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত মস্কো কোনো সরকারি বিবৃতি দেয়নি। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে সম্প্রতি পুতিন-ঘনিষ্ঠ রামজান কাদিরভ জানিয়েছেন, তার ২৩ জন সেনার মৃত্যু হয়েছে।
দক্ষিণ রাশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত চেচনিয়া অঞ্চলের নেতা রামজান। টেলিগ্রামে তিনি লিখেছেন, ইউক্রেনের শেলিংয়ে খেরসন অঞ্চলে চেচনিয়ার ২৩ জন যোদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। ৫৮ জন আহত। এর আগে তিনি বলেছিলেন, তার সেনা ৭০ জন ইউক্রেনীয় সেনাকে হত্যা করতে সমর্থ হয়েছে।
ইউক্রেন তীব্র বিদ্যুৎসঙ্কটের মুখোমুখি হয়েছে। রাজধানী কিয়েভ-সহ মধ্য ইউক্রেনে প্রায় ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ কমে গেছে। অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে রাশিয়া প্রতিটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে আক্রমণ চালাচ্ছে। সেখানে লাগাতার বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে। ফলে রাজধানীতেও বিদ্যুতের সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এর ফলে অনন্ত সময়ের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকতে পারে সতর্ক করে দিয়েছে কিয়েভের প্রশাসন।
ক্রমশ ঠাণ্ডা বাড়ছে ইউক্রেনে। ঠাণ্ডায় হিটিং ছাড়া কিভাবে বাঁচবেন বেসামরিক মানুষ, তাও এক বড় প্রশ্ন।
সময় জার্নাল/এলআর