সর্বশেষ সংবাদ
সময় জার্নাল ডেস্ক:
প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপব্যবহারের ব্যাপক অভিযোগ পাওয়া গেছে। যিনি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) থাকাবস্থায় চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও বিএনপি ঘরানার কর্মকর্তাদের প্রাইজপোস্টিং দেন।
এমনকি এসব বদলি বাণিজ্যে ওই কর্মকর্তার পরিবারের ঘনিষ্ঠ লোকজনও জড়িয়ে পড়েন। কৌশল হিসাবে তিনি প্রকাশ্যে অফিস চালাতেন সিএসপি স্টাইলে, কিন্তু নীরবে চলত তদবির বাণিজ্য।
প্রসঙ্গত, অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুস সবুর মন্ডল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে বদলি হয়ে এপিডি হিসাবে পোস্টিং পান গত মে মাসের শেষদিকে। তিনি অফিসিয়ালি এ অধিদপ্তর থেকে ১ জুন বিদায় নেন। বিদায় নেওয়ার প্রাক্কালে মাত্র পাঁচ দিনে ২৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে তিনি বদলি করেন, যা ছিল খুবই আলোচিত ও বিতর্কিত বদলি। কারণ তাদের অনেকে চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও বিএনপি-জামায়াত ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারী। এ ধরনের বদলি অধিদপ্তরের অনেককে হতবাক করে।
সূত্র বলছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সবচেয়ে লোভনীয় পোস্টিং হিসাবে পরিচিত ঢাকা মেট্রোর গুলশান সার্কেলে পোস্টিং পান বিএনপি ঘরানার কর্মচারী নাজমুল হোসেন খান। যুগান্তরের মাগুরা প্রতিনিধি জানান, নাজমুল হোসেন খানের পুরো পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তার ছোট চাচা হাসান ইমাম সুজা বর্তমানে মাগুরা জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক। আরেক চাচা জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি। ১৯৯৯ সালে বিএনপি সরকারের সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাসের সুপারিশে তার চাকরি হয়। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এলে নাজমুলকে পাঠানো হয় ঢাকার বাইরে। কিন্তু সবুর মন্ডলের হাত ধরে তিনি এখন ‘মধুর হাঁড়ি’ গুলশানে।
সূত্রমতে ডিএনসির প্রাইজ পোস্টিংয়ের র্যাংকিংয়ে গুলশানের পরই রমনা সার্কেল। ইন্সপেক্টর তমিজউদ্দীন মৃধাকে রমনায় পোস্টিং করা হয়েছে। তার বাড়ি পাবনা। অধিদপ্তরের সবাই জানেন তমিজ উদ্দিন বিএনপি ঘরানার লোক। সাবেক জোট সরকারের সময় তিনি প্রভাবশালী ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে এ কর্মচারীর রমনায় পোস্টিং দেখে বিস্মিত হন অনেকে।
সূত্র বলছে, মোটা অঙ্কের মাসোহারা আদায়ের সুযোগ থাকায় প্রাইজ পোস্টিং হিসাবে পরিচিত সূত্রাপুর সার্কেল। সাধারণত দক্ষ কর্মকর্তাদের সূত্রাপুরে পোস্টিং দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু বিতর্কিত এবং দুর্নীতিগ্রস্ত ইন্সপেক্টর জিল্লুর রহমানকে সূত্রাপুরে পোস্টিং দেন সবুর মন্ডল। জিল্লুরের বাড়ি মানিকগঞ্জ। অধিদপ্তরে তিনিও বিএনপি ঘরানার কর্মচারী হিসাবে পরিচিত।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মামলায় গড়িমসি এবং নির্ধারিত অপারেশন কার্যক্রম প্রতিপালন না করায় একাধিকবার তাকে শোকজ করা হয়। কিন্তু বদলাননি জিল্লুর। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ঘুস বাণিজ্যের অভিযোগ বহু পুরোনো। সর্বশেষ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কর্মরত থাকাকালে বিভাগীয় তদন্তে জিল্লুরের বিরুদ্ধে ঘুস বাণিজ্য প্রমাণিত হয়। শাস্তিমূলকভাবে প্রথমে তাকে নোয়াখালী এবং পরে টেকনাফে বদলি করা হয়। তবে সবুর মন্ডলের হাত ধরে সব বাধা ডিঙিয়ে জিল্লুর এখন সূত্রাপুরে।
সূত্র বলছে, কয়েকটি বড় হোটেল এবং মদের বার থাকায় অধিদপ্তরের মতিঝিল সার্কেলও লোভনীয়। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাবেক ইন্সপেক্টর মিজানুর রহমানকে মতিঝিলে পোস্টিং দেওয়া হলে হইচই পড়ে যায়। কারণ ঘুস ও গ্রেফতার বাণিজ্যের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলছে। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে আরেকটি ঘুস লেনদেনের অভিযোগ তদন্ত করছে অধিদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা। এছাড়া তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
সূত্র জানায়, এসআই মাহবুবুর রহমান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর) মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করে উত্তরা সার্কেলে পোস্টিং নেন। তার বদলিতে মধ্যস্থতা ও ঘুস লেনদেনের মূল ভূমিকায় ছিলেন সিপাহি সাজ্জাদ হোসেন। বর্তমানে তিনি অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের ওয়্যারলেস অপারেটর। সাজ্জাদ নিজেকে সবুর মন্ডলের চাচাতো ভাই বলে পরিচয় দেন। সবুর মন্ডল নারকোটিক্সে যোগ দেওয়ার পরপরই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি।
অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুস সবুর মন্ডল
প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ক্ষমতা অপব্যবহারের ব্যাপক অভিযোগ পাওয়া গেছে। যিনি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) থাকাবস্থায় চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও বিএনপি ঘরানার কর্মকর্তাদের প্রাইজপোস্টিং দেন।
এমনকি এসব বদলি বাণিজ্যে ওই কর্মকর্তার পরিবারের ঘনিষ্ঠ লোকজনও জড়িয়ে পড়েন। কৌশল হিসাবে তিনি প্রকাশ্যে অফিস চালাতেন সিএসপি স্টাইলে, কিন্তু নীরবে চলত তদবির বাণিজ্য।
আলোচিত এই কর্মকর্তার নাম মো. আব্দুস সবুর মন্ডল। যিনি বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিবের পরই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদ এপিডি (নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ) অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব হিসাবে কর্মরত। অথচ চাকরি জীবনের শুরু থেকে তিনি সরকারি দল আওয়ামী ঘরানার কর্মকর্তা হিসাবে পরিচিত। কথায় কথায় ‘আমার শাশুড়ি আওয়ামী লীগের এমপি’ বলে নিজের শক্ত অবস্থান জানান দেওয়ার চেষ্টা করেন। এর ফলে তাকে অন্তত গত ১৪ বছরে পদোন্নতি ও প্রাইজ পোস্টিং নিয়ে কোনো বেগ পেতে হয়নি।
প্রসঙ্গত, অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুস সবুর মন্ডল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর থেকে বদলি হয়ে এপিডি হিসাবে পোস্টিং পান গত মে মাসের শেষদিকে। তিনি অফিসিয়ালি এ অধিদপ্তর থেকে ১ জুন বিদায় নেন। বিদায় নেওয়ার প্রাক্কালে মাত্র পাঁচ দিনে ২৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে তিনি বদলি করেন, যা ছিল খুবই আলোচিত ও বিতর্কিত বদলি। কারণ তাদের অনেকে চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ ও বিএনপি-জামায়াত ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারী। এ ধরনের বদলি অধিদপ্তরের অনেককে হতবাক করে।
সূত্র বলছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সবচেয়ে লোভনীয় পোস্টিং হিসাবে পরিচিত ঢাকা মেট্রোর গুলশান সার্কেলে পোস্টিং পান বিএনপি ঘরানার কর্মচারী নাজমুল হোসেন খান।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মামলায় গড়িমসি এবং নির্ধারিত অপারেশন কার্যক্রম প্রতিপালন না করায় একাধিকবার তাকে শোকজ করা হয়। কিন্তু বদলাননি জিল্লুর। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ঘুস বাণিজ্যের অভিযোগ বহু পুরোনো। সর্বশেষ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কর্মরত থাকাকালে বিভাগীয় তদন্তে জিল্লুরের বিরুদ্ধে ঘুস বাণিজ্য প্রমাণিত হয়। শাস্তিমূলকভাবে প্রথমে তাকে নোয়াখালী এবং পরে টেকনাফে বদলি করা হয়। তবে সবুর মন্ডলের হাত ধরে সব বাধা ডিঙিয়ে জিল্লুর এখন সূত্রাপুরে।
সূত্র বলছে, কয়েকটি বড় হোটেল এবং মদের বার থাকায় অধিদপ্তরের মতিঝিল সার্কেলও লোভনীয়। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাবেক ইন্সপেক্টর মিজানুর রহমানকে মতিঝিলে পোস্টিং দেওয়া হলে হইচই পড়ে যায়। কারণ ঘুস ও গ্রেফতার বাণিজ্যের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলছে। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে আরেকটি ঘুস লেনদেনের অভিযোগ তদন্ত করছে অধিদপ্তরের গোয়েন্দা শাখা। এছাড়া তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
সূত্র জানায়, এসআই মাহবুবুর রহমান (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর) মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করে উত্তরা সার্কেলে পোস্টিং নেন। তার বদলিতে মধ্যস্থতা ও ঘুস লেনদেনের মূল ভূমিকায় ছিলেন সিপাহি সাজ্জাদ হোসেন। বর্তমানে তিনি অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের ওয়্যারলেস অপারেটর। সাজ্জাদ নিজেকে সবুর মন্ডলের চাচাতো ভাই বলে পরিচয় দেন। সবুর মন্ডল নারকোটিক্সে যোগ দেওয়ার পরপরই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি।
সূত্র বলছে, ঢাকা মেট্রোর অন্যতম লোভনীয় পোস্টিং কোতোয়ালি সার্কেলে আনা হয় কুড়িগ্রামে সাংবাদিক লাঞ্ছনার ঘটনায় আলোচিত ইন্সপেক্টর জাহিদুর রহমানকে। অথচ নারি কেলেঙ্কারি ও মামলা বাণিজ্যসহ একাধিক অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা চলছে।
সূত্র জানায়, সবুর মন্ডলের শাশুড়ির তদবিরে খিলগাঁওয়ে পোস্টিং পান ইন্সপেক্টর আব্দুর রহিম। অথচ রহিম অধিদপ্তরে দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মচারী হিসাবে পরিচিত। ঢাকায় পোস্টিংয়ের পর তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। সম্প্রতি খিলগাঁওস্থ এইচ কবির নামের একটি বাংলা মদের দোকানে মাসোহারা নিয়ে দরকষাকষিতে বিপাকে পড়েন রহিম। এ ঘটনায় তাকে ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত পরিচালকের কার্যালয়ে তলব করা হয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সতর্ক করা হয় তাকে।
এভাবে জামায়াত-বিএনপিপন্থি এবং বিতর্কিতদের প্রাইজ পোস্টিং প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নারকোটিক্স এক্সিকিউটিভ অফিসার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এবং সবুজবাগ সার্কেলের ইন্সপেক্টর নজরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘এসব নিয়ে কথা বলার এখতিয়ার তাদের নেই। তবে সবগুলো পোস্টিং অর্ডার এখনো ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। তাই সরকার বা গোয়েন্দা সংস্থা চাইলে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখতে পারে।’
সূত্র বলছে, সবুর মন্ডল ডিজির চেয়ারে থাকাকালে তার বন্ধু পরিচয়ে বেশকিছু লোকের আনাগোনা শুরু হয়। এদের মধ্যে জনৈক সোহান, শফিক, রোকনুজ্জামান অন্যতম। এছাড়া অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে নিয়মিত যাতায়াত শুরু করেন সবুর মন্ডলের আপন ছোট ভাই আহাম্মেদ আলী ওরফে রুয়েল (সাবেক এনজিও কর্মী। এক পর্যায়ে অধিদপ্তরের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে বহিরাগত এ চক্রের ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। সন্ধ্যার পর তারা গোপন মিটিংয়ে মিলিত হতেন, যা ‘পোস্টিং মিটিং’ নামে পরিচিতি পায়। বেইলি রোডের ক্যাফে ৩৩ নামের রেস্টুরেন্টে এসব মিটিং হয়। বদলি হোক বা না হোক মিটিং শুরুর আগে নির্ধারিত ‘টোকেন মানি’ দেওয়া ছিল বাধ্যতামূলক। এটা ছিল তাদের মিটিং ফি। কারণ উনারা খুব প্রভাবশালী।
সূত্র বলছে, বিতর্কিত পোস্টিং ছাড়াও সবুর মন্ডলের আমলে সোর্সমানি লোপাটের অভিযোগ আছে। এক্ষেত্রে অভিনব কৌশল নেওয়া হয়। ঢাকাসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যাংক হিসাবে টাকা পাঠিয়ে নগদে ফেরত আনা হয়। এ নিয়ে মাঠ পর্যায় থেকে ক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের অনেকে বেনামে চিঠি লেখেন। এমনকি তৎকালীন সুরক্ষা সচিব মোকাব্বির হোসেনের কাছেও এ অভিযোগ দেওয়া হয়।
এছাড়া সবুর মন্ডলের আমলে নিয়োগ পাওয়া ৩শ আউটসোর্সিং জনবলের একটি বড় অংশ আসে তার নিজ জেলা গাইবান্ধা থেকে। বিতর্কিত বদলি, সোর্স মানি কেলেঙ্কারি ও আউটসোর্সিং নিয়োগ নিয়ে অধিদপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তাদের অনেকেই ক্ষুব্ধ হন। এ নিয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক আজিজুল ইসলাম দ্বিমত পোষণ করলে তার সঙ্গে সবুর মন্ডলের দূরত্বও তৈরি হয়।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অতিরিক্ত মহাপরিচালক আজিজুল ইসলাম রোববার তার কার্যালয়ে যুগান্তরকে বলেন, সবুর মন্ডল তার ঘনিষ্ঠ ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই তাকে চেনেন। চাকরি জীবনে তারা ব্যাচমেট। তাই সবুর সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক মন্তব্য করা তার পক্ষে কঠিন। তবে তিনি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করেন, কেউ ভালো কাজ করলে যেমন পুরস্কৃত হন, তেমনি খারাপ কাজ করলে জোটে তিরস্কার। হয়তো আগে কিংবা পরে।
সূত্র বলছে, সবুর মন্ডল ডিজি হিসাবে যোগদানের পর কম্প্রিহেনসিভ ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ নামের এক অভিনব কর্মসূচি চালু করেন, যা অনেকটা দিনব্যাপী কর্মশালা। পাঁচতারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। এতে খরচ হয় ৪০ লাখ টাকার বেশি। এত বিপুল পরিমাণ খরচ নিয়ে প্রশ্ন তোলে মন্ত্রণালয়। এছাড়া নতুন এই কর্মসূচির কারণে অধিদপ্তরের মাদকবিরোধী অভিযান ঝিমিয়ে পড়ে।
এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (সচিব) জামাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘তিনি যতটুকু জেনেছেন তাতে কম্প্রিহেনসিভ অ্যাকশন প্ল্যানের আওতায় মাদকের চাহিদা হ্রাসের চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু অধিদপ্তরের তিনটি সুনির্দিষ্ট অ্যাসাইনমেন্ট রয়েছে। শুধু চাহিদা হ্রাসে জনবল ব্যস্ত থাকলে অন্য কাজগুলো বাধাগ্রস্ত হবে। এছাড়া মাদক উদ্ধার ও মাদক কারবারিদের গ্রেফতার করা অধিদপ্তরের অন্যতম গুরত্বপূর্ণ কাজ।’
প্রসঙ্গত যুগ্মসচিব থাকাকালে ২০১৯ সালের ২৫ জুলাই আব্দুস সবুর মন্ডলের প্রটোকলের জন্য মাদারীপুরের কাঁঠাবাড়ি ঘাটে ৩ ঘণ্টা ফেরি আটকে রাখা হয়। এতে আটকা পড়ে ঢাকাগামী একটি অ্যাম্বুলেন্সও। এ সময় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মর্মান্তিক মৃত্যু হলে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। প্রশাসনে যা ‘ফেরি কেলেঙ্কারি’ নামে পরিচিত। নিশ্চয় প্রভাবশালী মহলের কারণে তাকে বেগ পেতে হয়নি। না হলে তাকে এ ঘটনায় অনেক খেসারত দিতে হতো। এমনকি পরবর্তী পদোন্নতি ও প্রাইজ পোস্টিং পাওয়া নিয়ে এক ধরনের অলিখিত সংকট হওয়ার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু উল্টো তার পদোন্নতির পাশাপাশি বরং প্রাইজ পোস্টিং হয়েছে।
তার শাশুড়ি একটি পোস্টিংয়ের তদবির করেছিলেন। এটা সত্য। পরে বিষয়টি নিয়ে তিনি তৎকালীন সচিবের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তার ভাই পোস্টিং নয়, আউটসোর্সিং নিয়োগের বিষয়ে তদবির করেছিলেন। তার তদবিরে কয়েকজন আউটসোর্সিং জনবল নেওয়া হয়। বাংলাদেশের বাস্তবতায় এটি অপরাধের কিছু নয়। তবে মহাপরিচালক হিসাবে তিনি সর্বোচ্চ সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন। চাকরি জীবনের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কেউ তার বিরুদ্ধে ন্যূনতম দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে পারেনি। পারবেও না।’
তিনি বলেন, ‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর একটি দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান। এজন্য অধিদপ্তরের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী বিভিন্ন লিংকে তার ভাইসহ নিকট-আত্মীয়দের কাছে পৌঁছে যায়। এতে বেশকিছু পোস্টিং তদবিরের মুখে পড়তে হয় তাকে।’ কম্প্রিহেনসিভ অ্যাকশন প্ল্যান কর্মসূচির বিষয়ে উত্থাপিত অভিযোগ প্রসঙ্গে সবুর মন্ডল বলেন, ‘এটি একটি উদ্ভাবনী কর্মসূচি। যার মাধ্যমে সমাজের সব স্তরের সম্পৃক্ততায় মাদকের অভিশাপ থেকে মুক্তির চেষ্টা করা হচ্ছে। কর্মসূচি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে মাদক নির্মূলে বিস্ময়কর সফলতা মিলবে বলে তার বিশ্বাস।’
এসএম
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল