শাহিনুর ইসলাম, লালমনিরহাট প্রতিনিধি:
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুনের পকেট থেকে জোর পূর্বক ৫০ হাজার টাকা বের করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিরুর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় উপজেলা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন বাদী হয়ে গত ১৫ নভেম্বর স্থানীয় থানায় পাল্টা একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে দাবি করলেও হাতীবান্ধা থানার ওসি শাহা আলম বলছে, এ সংক্রান্ত কোন অভিযোগ তিনি পায়নি।
ওই অভিযোগে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি লিয়াকত হোসেন বাচ্চুকেও আসামী করা হয়েছে।
এ ছাড়া নারী ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহারের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি নিচে ফেলে দেয়ার অভিযোগও তুলেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান।
প্রাপ্ত অভিযোগ ও উপজেলা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন জানান, গত ৭ নভেম্বর ২ ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহার ও আনোয়ার হোসেন মিরু তার অফিসে গেলে তিনি এডিপি ও টিআর প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে কোন উত্তর না দিয়ে তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে জেসমিন নাহার নিজ অফিসে গিয়ে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি নিচে ফেলে দেয়।
এ ঘটনায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি লিয়াকত হোসেন বাচ্চুসহ অন্যান্যদের ডেকে পরামর্শ করে তার অফিসে প্রবেশ করে। অফিসের চেয়ার ভাংচুর করে এবং তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে নারী ভাইস চেয়ারম্যানের স্বামী সুলতান আহম্মেদ রাজন তার গলা চিপে ধরে। এ সময় উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মিরু তার পকেট থেকে জোর পূর্বক ৫০ হাজার টাকা বের করে নেয় এমনটি জানান মশিউর রহমান মামুন।
এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি লিয়াকত হোসেন বাচ্চু, দুই ভাইস চেয়ারম্যানসহ ৭ জনকে আসামী করে গত ১৫ নভেম্বর স্থানীয় থানায় পাল্টা একটি অভিযোগ দায়ের করেন এমন দাবী উপজেলা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুনের।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি লিয়াকত হোসেন বাচ্চু জানান, তিনি শুনেছেন তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। উপজেলা পরিষদের কোনো বিষয়ের সাথে তিনি জড়িত নয়, তাকে সামাজিক ভাবে হয়রানী করা উদ্দেশ্যেই উপজেলা চেয়ারম্যান নিজের দুর্নীতি ঢাকতেই তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। দুই ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহার ও আনোয়ার হোসেন মিরু জানান, টিআর-কাবিখা-কাবিটাসহ নানা প্রকল্পের অনিয়মের প্রতিবাদ করায় নারী ভাইস চেয়ারম্যানকে মারধর ও তার অফিস ভাংচুর করেন চেয়ারম্যানের লোকজন।
হাতীবান্ধা থানার ওসি শাহা আলম জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান বাদী হয়ে দুই ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ পায়নি। এ সংক্রান্ত অভিযোগ যদি পাই তাহলে তা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন ও ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহারের মধ্যে গত ৭ নভেম্বর উপজেলা পরিষদের ভিতরে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ, মারধর ও অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহারের একটি মামলায় বুধবার উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন।
সময় জার্নাল/এলআর