স্পোর্টস ডেস্ক:
রেকর্ড পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। সেই দলটা বিশ্বকাপে ফেভারিট হিসেবে যাবে, সেটাই তো স্বাভাবিক! নেইমার-রিচার্লিসনরা মাঠের খেলাতেও তার প্রমাণ দিলেন এবার। সার্বিয়াকে হারালেন ২-০ গোলে, পুরো ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে খেললেন, বুঝিয়ে দিলেন ব্রাজিল এসেছে চ্যাম্পিয়ন হতেই।
শেষ ২০ বছর ধরে বিশ্বকাপ নেই ব্রাজিলের। সে প্রশ্ন সংবাদ সম্মেলনেও ধেয়ে এসেছিল কোচ তিতের কাছে। ‘প্রফেসর’ অবশ্য একটা দারুণ ‘বডি ডজে’ সেটা সামলেছিলেন; বলেছিলেন ‘মানুষ স্বপ্ন নিয়ে বাঁচে। আমরাও স্বপ্নপূরণের জন্য চেষ্টা করি। কখনো সফল হই, কখনো হই না।’
তবে মাঠের খেলায় অবশ্য তার দল অতো কূটনীতির ধার ধারল না। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখল একচেটিয়া আধিপত্য। জানান দিল, এই দল খরা কাটাতেই এসেছে।
শুরু থেকে বললে অবশ্য ভুল হবে, শুরুর মিনিটগুলোয় খানিকটা রঙহীন মনে হচ্ছিল ব্রাজিলকে; অন্তত পুরো ম্যাচে যা দেখিয়েছে, তার তুলনায় তো বটেই। তবে সময় যত গড়াল, ব্রাজিল ম্যাচের লাগামটা হাতে তুলে নিল ততই। ১৩ মিনিটে কর্নার থেকে নেইমারের অলিম্পিক গোলের চেষ্টা থেকে শুরু। এরপর মুহুর্মুহু আক্রমণে উঠেছেন রাফিনিয়া, ভিনিসিয়াসরা।
যদিও গোলের দেখা পেতে সময় লাগল ৬২ মিনিট। খানিকটা দুর্ভাগ্য আর প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক ভানজা মিলিঙ্কোভিচ-স্যাভিচের কৃতিত্বও তাতে মিশে ছিল বৈকি! গোটা পাঁচেক দারুণ সেভ আর ক্লিয়ারেন্সে তিনিই ম্যাচের ঘণ্টাখানেক পর্যন্ত ম্যাচে জিইয়ে রেখেছিলেন সার্বদের। চেষ্টা করেছিলেন ৬২ মিনিটেও। ভিনিসিয়াস জুনিয়রের শটটা দিয়েছিলেন ঠেকিয়ে, তবে রিচার্লিসনের ফিরতি শটটা আর পারেননি। সহজ ট্যাপ ইনে গোলটা করেন শেষ ছয় ম্যাচে সাত গোল করা রিচার্লিসন।
দারুণ খেলেও গোলের জন্য হাঁসফাঁস করতে থাকা ব্রাজিলকে সে মুহূর্তটা এনে দিয়েছিল একরাশ স্বস্তি। আর শুরুর এক ঘণ্টায় চোয়ালবদ্ধ রক্ষণে ব্রাজিলকে আটকে রাখা সার্বিয়ার মনোবলটা ভেঙে গেল সেখানেই।
মিনিট দশেক পর রিচার্লিসন যা করলেন, তা সার্বিয়ার কফিনে শেষ পেরেকটাই ঠুকে দিলো। ভিনিসিয়াসের নিচু ক্রস একটা হেভি টাচে নিলেন আয়ত্বে, এরপর দারুণ এক ব্যাক ভলিতে বলটা আছড়ে ফেললেন সার্বদের জালে। যেভাবে পুরো প্রক্রিয়াটা সারলেন, তা দেখে কে ভাববে প্রতিপক্ষের বিপদসীমায় এই ম্যাচে এটা নিয়ে তৃতীয় বারের মতো বল ছুঁয়েছেন তিনি?
ব্রাজিল গোল পেতে পারত আরও একটা। ক্যাসেমিরোর শটটা যদি না লাগত ক্রসবারে। তাতে ব্যবধানটা বাড়েনি বটে, তবে সেলেসাওদের আধিপত্যটা তাতে খাটো হয়নি একটুও। ২-০ গোলের জয়ে ঠিকই নিজেদের ফেভারিট প্রমাণ করেন নেইমাররা।
বিশ্বকাপের ফেভারিট কে? এমন প্রশ্ন বিশ্বকাপের আগে উঠেছে, তার উত্তরে এসেছে তিনটে নাম। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা আর ফ্রান্স। আর্জেন্টিনা হেরেছে সৌদি আরবের কাছে, ফ্রান্সও নিজেদের ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শুরুতে পা হড়কেছে। কিন্তু ফেভারিট ব্রাজিল সে পথে হাঁটেনি। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আধিপত্য ধরে রেখেছে, ওপাশে নেইমাররা একের পর এক আক্রমণে উঠেছেন, এপাশে গোলরক্ষক অ্যালিসন রীতিমতো মশা মেরেছেন পুরো ম্যাচে। ব্রাজিল জিতেছে প্রতিপক্ষকে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়ে। ফেভারিটের খেলা তো এমনই হতে হয়!
এমআই