মানিক মুনতাসির : প্রেসক্লাবে পুলিশি তান্ডবের (বিএনপি কর্মী ধরপাকড়) ঘটনায় আমি মোটেও বিষ্মিত নাই। অবাকও হইনি। বেদনাহত তো অবশ্যই নই। বরং পঁচা, গলা মরা রাজনীতি আর কেঁচোমার্কা জার্নালিজম চর্চার জন্য আমি নিজেকে মৃত অনুভব করছি। ফলে নিজ ভুলে, স্বার্থের কারণে কিংবা ফাঁদে পড়ে বা লোভের মোহে হাতি যখন মরে যায় তখন চামচিকাও লাথি মারে। এটাই প্রকৃতির নিয়ম।
আবার একজন গণমাধ্যমকর্মী হয়েও আপনি যখন নিজের বিবেককে বিলিয়ে দেবেন, তখন জেনে না জেনে কিংবা চেতনার চাদরে আবৃত হয়ে অবচেতন মনে অর্থবিত্ত আর ক্ষমতার নেশায় অপরাজনীতিকেও সমর্থন দেবেন অকপটে। তখন পৃথিবীব্যাপী মুক্ত কিংবা স্বাধীন গণমাধ্যমকে মনে হবে ভুল পথে পরিচালিত হচ্ছে।
কারণ সেখানে আপনার কোন স্বার্থ নেই। আপনার মাথার চুল থেকে পা পর্যন্ত তখন এক ধরনের অদৃশ্য শৃংখল এঁটে দেয়া হবে। তখন বোতলের ছিপি খুলে জ্বিনের বাদশারা বেরিয়ে এলেও তা কোন কাজে বসবে না। কেননা, সেই জ্বিনের বাদশাও তো একজন ভৃত্য মাত্র। সে তো মালিকের হুকুমই পালন করে নিজেকে তৃপ্ত করে তুলবে।
লোক দেখানো ভালবাসা বিশেষ ব্যক্তি বন্দনা আর ছলচাতুরির দেশপ্রেমকে তখন টাকা পাচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হবে। বেশিরভাগ মানুষই তখন নিজের সম্মান বাঁচাতে নিজেকে সমাজ থেকে গুঁটিয়ে নেবে। কিন্তু শাসকেরা মনে করবে মানুষ তো বেশ সুখেই আছে। ক্ষুধার্ত, নিপীড়িত মানুষ শুধু সুযোগ খুঁজবে। শাসকেরা আকষ্মিকভাবে যে ভুল করবে তার মাশুল তিন পুরুষও দিতে ব্যর্থ হবে।
কেননা তৃপ্তির ঢেকুর তখন ক্ষমতাশালীদের পেট থেকে গলা অবদি আড়াআাড়ি চলাচল করবে।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক, বাংলাদেশ প্রতিদিন।