শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

আলোচিত ইরানের সেই ‘নীতি পুলিশ’ কারা, কাজ কী ছিল তাদের

সোমবার, ডিসেম্বর ৫, ২০২২
আলোচিত ইরানের সেই ‘নীতি পুলিশ’ কারা, কাজ কী ছিল তাদের

লাবিন রহমান:

ইরানে দুই মাসের বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভের মুখে ‘নীতি পুলিশ’ বিলুপ্ত করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। কি এই নীতি পুলিশ। তাদের কাজ কি।

ইরানের ‘নীতি পুলিশ’ মূলত ফারসি ‘গাতে-ই এরাদ’ বা ‘গাইডেনস প্যাট্রোল’ নামে পরিচিত। তাদের কাজ হলো, ইরানের কঠোর পোশাকবিধি অমান্যকারী ব্যক্তিদের আটক করে ব্যবস্থা নেওয়া।

‘নীতি পুলিশ’ ইরানের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংযুক্ত। ইরানের শীর্ষ ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের ঠিক করা ইসলামি নীতি-নৈতিকতা মানুষ মানছে কি না, তা তারা নিশ্চিত করে।

‘নীতি পুলিশের’ প্রতিটি ইউনিটে একটি করে ভ্যান আছে। এই ভ্যানগাড়িতে ‘নীতি পুলিশের’ নারী ও পুরুষ উভয় সদস্যরা থাকেন। তাঁরা ব্যস্ত জনপরিসরে টহল দেন। অপেক্ষা করেন। কেউ যথাযথ আচরণ না করলে, যথাযথ পোশাক না পরলে তাঁরা তাঁদের ধরেন।

যাঁরা ‘নীতি’ লঙ্ঘন করেন, তাঁদের সতর্ক করে নোটিশ দেয় নীতি পুলিশ। আবার কিছু ক্ষেত্রে নীতি লঙ্ঘনকারী ব্যক্তিকে আটক করে থানা বা সংশোধনাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ে গিয়ে তাঁদের কীভাবে পোশাক পরতে হবে, কী নৈতিক আচরণ করতে হবে, সে বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হয়। পরে পুরুষ অভিভাবকদের ডেকে তাঁদের জিম্মায় আটক ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

‘নীতি পুলিশ’ কিছু ক্ষেত্রে নিয়ম লঙ্ঘনকারী ব্যক্তিদের জরিমানা করে। তবে জরিমানার ক্ষেত্রে কোনো সাধারণ নিয়ম নেই।

ইরানের শরিয়া আইন অনুযায়ী, নারীদের মাথা ও চুল ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক। তাঁদের এমন লম্বা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হবে, যাতে শরীরের গঠন বোঝা না যায়।

ইরানে বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণির অনেক নারী আঁটসাঁট পোশাক পরেন। তাঁরা ঊরু-সমান দৈর্ঘ্যের কোট পরেন। তাঁরা এমনভাবে উজ্জ্বল রঙের স্কার্ফ পরেন, যাতে মাথার অনেক চুল বেরিয়ে থাকে।

ইরানের ইসলামি বিপ্লব নারীদের রক্ষণশীল পোশাক পরার বিষয়টিকে অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে গ্রহণ করে। ফলে কঠোর হিজাববিধি নিয়ে সেই সময় থেকেই দেশটিতে একটি বিরোধ আছে।

‘নীতি পুলিশের’ প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, তা ইরানে ২০০৯ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় অন্যতম বিতর্কের বিষয় হয়ে ওঠে। সংস্কারপন্থী প্রার্থীরা এই বাহিনী বিলোপের দাবি তুলেছিলেন। কিন্তু ‘নীতি পুলিশ’ বিলুপ্তে শেষ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং নানা সময়ে ‘নীতি পুলিশের’ কঠোর ব্যবস্থার ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসে।

এদিকে, কঠোর বিধি মেনে হিজাব না পরার অভিযোগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানী তেহরানে কুর্দি তরুণী মাসা আমিনিকে (২২) গ্রেপ্তার করে নীতি পুলিশ। পরে নির্যাতনে মাসার মৃত্যু হয়েছে দাবি করে ইরানের মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন।  এখন দেশটির কর্তৃপক্ষ নীতি পুলিশ বিলুপ্তির ঘোষণা দিল।

দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ জাফর মনতাজেরিকে উদ্ধৃত করে এ বিষয়ে খবর প্রকাশ করেছে ইরানের আইএসএনএ সংবাদ সংস্থা।

শনিবার রাতে জাফর মনতাজেরি বলেন, ‘বিচার বিভাগের সঙ্গে নীতি পুলিশের কোনো সম্পর্ক নেই। এটি বিলুপ্ত করা হয়েছে।প্রথমবারের মতো দেশটির নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে, ইরানজুড়ে সেপ্টেম্বর থেকে চলা ব্যাপক অস্থিরতায় দুই শর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল