মাইদুল ইসলাম:
শীতের সকাল। গাজীপুরের জয়দেবপুর উপজেলার লাঘালিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায় আলবারাকাহ্ পোল্ট্রি ফার্মে মুরগীর পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মো: নাফীজ আহাম্মেদ। এভাবেই নিজের পরিশ্রম দিয়ে করোনাকালে (২০২০ সালে) স্বল্প পরিসরে শুরু করে এখন সফল উদ্যোক্তা এই শিক্ষার্থী। যেখানে তৈরি হয়েছে কর্মসংস্থানও।
নাফিজের শুরুটা হয়েছিল একেবারে শূন্য থেকে। করোনাকালে যখন বেকার সময় কাটছিল সে সময়ে এলাকাবাসীকে দেখে খারাম করার অনুপ্রেরণা পান তিনি। বাবার থেকে ৫০০টাকা নিয়ে শুরুটা করেন। পরিবর্তীতে ২৫ মুরগী নিয়ে পথচলা, খামারের যার নাম দেন আলবারাকাহ্ পোল্ট্রি ফার্ম। এখন প্রায় দেড় হাজার মুরগী রয়েছে নাফীজের এই খামারে।
স্বল্প পুঁজিতে গড়ে তুলেছিলেন সোনালি মুরগির খামার। এভাবেই একটু একটু করে বেড়ে ওঠা নাফিজের শখের খামার এখন তার আয়ের উৎসে পরিণত হয়েছে। নিজেকে স্বাবলম্বী করে পাশে দাঁড়িয়েছেন বাবা-মায়ের।
খামারে ব্যস্ত সময় পার করছেন নাফিজ
মো. নাফিজ আহমেদ সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের (২০১৯-২০২০ সেশনের) শিক্ষার্থী। তিনি গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর উপজেলার লাঘালিয়া গ্রামের সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুর রহীমের বড় ছেলে। এই উদ্যোগে মা-বাবাকে সব সময় পাশে পেয়েছেন বলে জানান তিনি। কখনো কোনো ব্যতিক্রমী উদ্যোগে নিষেধ না করে বরং সাহস জুগিয়েছেন তার পরিবার।
শুধু মুরগীর খামার করে বসে থাকেননি এই তরুণ। আল বারাকাহ্ (প্র:) লি: কোম্পানি গড়ে তুলেছেন। খামারের সফলতার পরে এখন তিনি মাছ চাষ ও একটি লুব্রিকেন্ট কোম্পানির ডিলারশিপ নিয়েছেন। তার কোম্পানিতে চারজনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করেছেন উদ্যোক্তা নাফিজ। ভবিষ্যৎ লক্ষ্য আরও বড় এই তরুণের। একটা রেস্টুরেন্ট, একটা পার্লার, একটা এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাবসার শুরুর পরিকল্পনা নিয়ে আগাচ্ছেন তিনি।
মাত্র ৫০০টাকার পুঁজি নিয়ে শুরু করা খামারে এখন বছরে আয় প্রায় সাত লাখ টাকা।
তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে আপনি কোনো বার্তা দিতে চান কি জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমার সমবয়সী বা আমার ছোট-বড় যারা স্বপ্ন দেখছেন নিজে কিছু করে পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন। তারা যে যেই কাজে পারদর্শী সেই কাজের দ্বারা নিজেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলুন।
কেননা আজকাল চাকরির বাজারে সবার জায়গা হয় না। বেকারত্বের খাতায় নাম উঠে যায়। সেই সব ভাই-বোনদের কাছে আমার বার্তা থাকবে যদি অবসর থাকে তাহলে বসে না থেকে অলস সময়টুকু নিজেকে গড়তে কাজে লাগান।
এমআই