নিজস্ব প্রতিনিধি:
শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার অভিযোগে বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
রোববার (১ জানুয়ারি) রাতে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স।
তিনি জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য এবং শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকায় দলীয় গঠনতন্ত্রের ৫ (গ) ধারা মোতাবেক বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তারকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ থেকে অব্যাহতি প্রদানপূর্বক বহিষ্কার করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।
আবদুস সাত্তারকে বহিষ্কার করার আগে সংবাদমাধ্যমে খবর ছড়ায়, তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন।
এদিকে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া- ২ আসন থেকে উপনির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য আবদুস সাত্তার রোববার বিকেলে মনোনয়নপত্র কিনেছেন।
এরআগে, গত বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) রাতে তিনি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা থেকে পদত্যাগ করেন।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের তার ছেলে মাঈনুল জানান, তার বাবার মনে হচ্ছিল বিএনপিতে তার এখন আর প্রয়োজন নাই। তাই তিনি অভিমানে উপদেষ্টার পদ ছেড়েছেন। এমন মনে হওয়ার কারণের বিষয়ে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে আছেন বাবা। টানা ২৭ বছর জেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। তিনি দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। কিন্তু গত নির্বাচনের পর থেকে কেন্দ্রীয় ও জেলা বিএনপির কোনো ব্যাপারেই তাকে কোনো কিছু জিজ্ঞেস করা হয় না। তাই সম্মান থাকতে আমার বাবা দল থেকে পদত্যাগ করেছেন।
তার আগে, গত ১১ ডিসেম্বর তিনি জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এই শূন্য আসনে উপনির্বাচন হবে।
আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দলটির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। একবার টেকনোক্র্যাট হিসেবে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
বিএনপির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ১৯৭৯ সালে প্রথম তৎকালীন কুমিল্লা-১ (নাসিরনগর ও সরাইলের একাংশ) ও বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া।
ওই সময়ে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সহসভাপতি ছিলেন। দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। এরপর ১৯৯১ সালে এবং ১৯৯৬ সালের দুটি সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
২০০১ সালের নির্বাচনে চারদলীয় জোটের শীর্ষ নেতা ইসলামী ঐক্যজোটের তৎকালীন মহাসচিব মুফতি ফজলুল হক আমিনীকে আসনটি ছেড়ে দেন আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। ওই সময়ে বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার গঠন করলে তাকে টেকনোক্র্যাট প্রতিমন্ত্রী করা হয়।
সময় জার্নাল/এলআর