শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

ডিবির ‘ডিপ ফ্রিজে’ বিএম ডিপোর মামলা,মামলাটি আদৌ আলোর মুখ দেখবে কি না তা নিয়ে সংশয়!

মঙ্গলবার, জানুয়ারী ৩, ২০২৩
ডিবির ‘ডিপ ফ্রিজে’ বিএম ডিপোর মামলা,মামলাটি আদৌ আলোর মুখ দেখবে কি না তা নিয়ে সংশয়!

নিজস্ব প্রতিবেদক :

প্রায় চার দিন স্থায়ী ওই অগ্নিকাণ্ডে নিভে গেছে ৫১ জনের প্রাণ। হাসপাতালের মর্গে এখনও পড়ে আছে মরদেহের ১০টি অংশ। শনাক্ত না হওয়ায় সেগুলো স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা যায়নি। একই ঘটনায় অঙ্গহানি হয়েছে অনেকেরই। সবমিলিয়ে ফায়ার সার্ভিসকর্মী ও ডিপোতে কর্মরত দুই শতাধিকের বেশি শ্রমিক আহত হয়েছিলেন।সীতাকুণ্ডের আলোচিত বিএম ডিপোর আগুনের ঘটনাটি চট্টগ্রামের স্মরণকালের অন্যতম ভয়াবহ বলে ধরা হচ্ছে।


দেশজুড়ে আলোচিত ওই ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানায় মামলা দায়ের হয়। তবে, মামলার কোনো কূলকিনারা করতে পারেনি থানা পুলিশ। শেষে মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) স্থানান্তরিত হয়। সেখানেও মামলার দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। ঘটনার প্রায় সাত মাস পার হলেও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। ঠিক কবে নাগাদ তদন্ত কার্যক্রম শেষ হতে পারে, সেই প্রশ্নেরও উত্তর নেই তদন্ত কর্মকর্তার কাছে। শুধুমাত্র ‘তদন্ত চলমান আছে’ বলে কোনোমতে দায় সারছেন সংশ্লিষ্টরা।


আলোচিত মামলাটি আদৌ আলোর মুখ দেখবে কি না— তা নিয়ে সংশয় আইনজীবী ও বিশিষ্টজনদের। তাদের মতে, যাদের অবহেলায় এত প্রাণ হারাল, অথচ মামলায় তাদের কাউকেই আসামি করা হয়নি। এতে শুরু থেকে গলদ তৈরি হয়েছে। আবার নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করতে পুলিশের ইচ্ছা আছে কি না— সেই প্রশ্নও থেকে যাচ্ছে। কারণ, ঘটনার সাত মাস পার হলেও মামলাটির তদন্তে কোনো অগ্রগতি হয়নি। সবমিলিয়ে ভুক্তভোগীরা ন্যায়বিচার, না কি লোক দেখানো বিচার পাবে— সেই প্রশ্নও অনেকের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে।


dhakapost

গত বছরের ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকায় অবস্থিত বিএম ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন লাগার ঘণ্টা খানেকের মধ্যে সেখানে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এরপর টানা ৮৬ ঘণ্টা আগুন জ্বলতে থাকে। একপর্যায়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।


দুর্ঘটনায় আশপাশে থাকা ফায়ার সার্ভিসকর্মী ও শ্রমিকসহ ৫১ জন নিহত হন। এছাড়া আহত হন প্রায় দুই শতাধিক। পাশাপাশি ১৫৬টি আমদানি-রপ্তানি কনটেইনার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্ঘটনার পরপরই বন্ধ করে দেওয়া হয় ডিপোর কার্যক্রম। এরপর আলাদাভাবে ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত শুরু করে প্রশাসন, বন্দর কর্তৃপক্ষ, ফায়ার সার্ভিস ও কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে সীতাকুণ্ড থানায় ডিপোর আট কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করা হয়।


পুলিশের পক্ষ থেকে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন সীতাকুণ্ড থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফ সিদ্দিকী। ওই মামলায় ডিপোর জিএম (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) নাজমুল আকতার খান, ডিজিএম (অপারেশন) নুরুল আকতার, ম্যানেজার (অ্যাডমিন) খালেদুর রহমান, সহকারী অ্যাডমিন অফিসার আব্বাস উল্লাহ, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ মো. নাসির উদ্দিন, সহকারী ব্যবস্থাপক (ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো) আবদুল আজিজ, কন্টেইনার ফ্রেইট স্টেশনের ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম ও সহকারী ডিপো ইনচার্জ নজরুল ইসলামকে আসামি করা হয়।


মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ডিপোটিতে অন্যান্য সাধারণ কনটেইনারের পাশাপাশি ড্রামভর্তি কেমিক্যাল ছিল। অগ্নিকাণ্ডের কিছুক্ষণের মধ্যেই কেমিক্যালের কারণে বিস্ফোরণ হয় এবং আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হলেও তাদের কেমিক্যালের বিষয়টি জানানো হয়নি। এতে সাধারণ আগুন ভেবে পানি দিয়ে তা নেভানোর চেষ্টা করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। যার কারণে আগুন নেভেনি এবং উল্টো বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণে আশপাশের দুই-তিন কিলোমিটারের মধ্যে থাকা অনেক ভবনের কাচ টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ে। আগুন নেভাতে যথেষ্ট সময় লাগে, এমনকি প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনাও বাড়ে। এছাড়া ডিপোর দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও কর্তব্যরতদের দায়িত্বে অবহেলার কারণে দুর্ঘটনাটি সংঘটিত হয়।

dhakapost

বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছেন চট্টগ্রাম জেলা ডিবির পরিদর্শক মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মামলার তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে তাকে ফোন করা হয়। পরে তিনি ছুটিতে আছেন জানিয়ে আরও ১০ দিন পর যোগাযোগ করতে বলেন। তবে একইদিন দুপুর ১টার দিকে জেলা ডিবির কার্যালয়ে গেলে তাকে পাওয়া যায়। যদিও তিনি ছুটিতে আছেন এবং একটি কাজে অফিসে এসেছেন বলে দাবি করেন।



এসএম



Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল