নিজস্ব প্রতিনিধি:
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালগুলোতে অব্যবস্থাপনা রয়েছে । এসব হাসপাতালে অর্ধেকেরও কম মেশিন কার্যকর। সে কারণে হাসপাতালে আসা রোগীদের সব পরীক্ষা বাইরে করতে হয়। এর দায় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ও সিভিল সার্জনদের।
সোমবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের কনফারেন্স রুমে জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে চিকিৎসকদের চ্যালেঞ্জ বিষয়ক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সারাদেশে সরকারি হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনের তুলনায় চিকিৎসকের সংখ্যা অনেক কম জানিয়ে জাহিদ মালিক বলেন, অনেক হাসপাতালে রোগী বেশি হওয়ায় চিকিৎসকদের কাজের চাপ বেশি থাকে। যেখানে ২০ জন চিকিৎসক থাকার কথা, সেখানে যদি ১০ জন বা আটজন থাকে, তাহলে চাপতো বাড়বেই। যত চিকিৎসক থাকার কথা কথা, সেখানে আমাদের কিছু ঘাটতি রয়েছে, এটা অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই।
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যবিভাগ নিয়ে আমরা গর্ব করি। আমাদের সবার সম্মিলিত ইচ্ছা থাকলে চিকিৎসাব্যবস্থা আরও ভালো এবং পরিবর্তন করতে পারি। এই পরিবর্তন আমাদেরই করতে হবে। অন্যকেউ এসে পরিবর্তন করবে না। চিকিৎসকরা যেন জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে থাকেন সেজন্য যা যা করা প্রয়োজন, আমরা পর্যায়ক্রমে সেটা করে দেওয়ার চেষ্টা করবো।
হাসপাতালগুলোর নোংরা পরিবেশ ও অস্বাস্থ্যকর টয়লেটের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, হাসপাতালে একজন পরিচালক রয়েছেন, টয়লেট যদি অপরিষ্কার থাকে, হাসপাতাল যদি অপরিচ্ছন্ন থাকে, হাসপাতালে যদি পানি না থাকে, তাহলে সেই পরিচালকের কাজ কী, তিনি কী করেন। হাসপাতালের যন্ত্রপাতি যদি ফাংশনাল না থাকে তাহলে তার কাজটা কী? বেশিরভাগ রোগী পরীক্ষা-নিরীক্ষা কেন বাইরে করে?
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রোগীরাও যেন হাসপাতালে এসে ভালো পরিবেশ এবং চিকিৎসা পায়। হাসপাতালে মুমূর্ষু রোগী নিয়ে এসে কেউ যদি দেখে ডাক্তার নাই, তাহলে তার অনুভূতিটা কেমন হবে? পরীক্ষা-নিরীক্ষা কিংবা এক্সরে করতে গিয়ে যদি দেখে মেশিন খারাপ, এই বিষয়গুলো যেন না ঘটে সেই দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। আমরা হাসপাতাল তৈরি করেছি মানুষের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য। মানুষ চিকিৎসা পেলে আমাদের চাকরি থাকবে। জনগণের চিকিৎসাব্যবস্থা নিশ্চিত করলে আগামীতে স্বাস্থ্যব্যবস্থা আরও ভালো হবে।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ এবং সমাজকল্যাণ বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. টিটো মিয়া। জেলা হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে চিকিৎসকদের চ্যালেঞ্জ বিষয়ক ফলাফল উপস্থাপন করেন বিএসএমএমইউ পাবলিক হেলথ ও ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং প্রধান গবেষক ডা. মো. খালেকুজ্জামান।
সময় জার্নাল/এলআর