বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

বীজ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এ ক্ষতির দায় নিচ্ছে না

বুধবার, জানুয়ারী ২৫, ২০২৩
বীজ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এ ক্ষতির দায় নিচ্ছে না

ফরিদপুর প্রতিনিধি:

সারাদেশের মোট পেঁয়াজ ও পেঁয়াজের বীজ উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে ফরিদপুর জেলা। এ জেলায় মোট উৎপাদিত পেয়াজের সিংহভাগই আসে নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা থেকে। যা দেশের চাহিদার অধিকাংশই মিটিয়ে থাকে।

এখানকার কৃষি পন্যের মধ্যে প্রধান অর্থকরী ফসল হিসেবে পেঁয়াজ ও পাটকেই আগে বিবেচনা করা হয়। যা এই এলাকার কৃষকদের অর্থনৈতিক চালিকার মূল চাবিকাঠি। কিন্তু এবছর অসাধু কিছু পেঁয়াজ বীজ ব্যবসায়ীদের প্রতারণার ফাদে পড়ে লোকসানের চিন্তায় দিন পার করছেন জেলার নগরকান্দা উপজেলার কোদালিয়া শহিদনগর ইউনিয়নের আটকাহনিয়া গ্রামের অধিকাংশ কৃষক। তাদের অভিযোগ পাশ্ববর্তী ভাঙ্গা উপজেলার “আশরাফ সীড” নামের এক বীজ ব্যবসায়ীর প্রলোভনে ও নগরকান্দা বাজারের কসমেটিকস ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান মনিরের প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন তারা।


জানাযায়, নগরকান্দা বাজারের কসমেটিকস ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান ওরফে মনিরের দোকান থেকে “আশরাফ সীড” কোম্পানির পেঁয়াজ বীজ সংগ্রহ করে বপন করা বিভিন্ন অঞ্চলের চাষীদের বীজতলার বেশির ভাগ পেঁয়াজ গাছ হলুদ এবং লালবর্ণ ধারণ করে শুকিয়ে মরতে শুরু করেছে। যা কৃষকদের বড় চিন্তার কারন হয়ে দাড়িয়েছে। ভুক্তভোগী এসকল কৃষকরা মনিরের দোকান থেকে নেওয়া বীজকেই দায়ী করছেন। কৃষক রুহুল আমিন জানান,  মনিরের বীজ ছাড়াও আমি বিভিন্ন কোম্পানির বীজ রোপন করেছি। সেখানে কোনো সমস্যা পাইনি শুধু মনিরের দোকান থেকে কেনা বীজের চারাগুলো মরে হলুদ হয়ে যাচ্ছে। মনির আমাদের অধিক ফলনের প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের কাছে নিম্নমানের দুই নম্বর বীজ বিক্রি করেছে। আমরা এই প্রতারকের শাস্তি চাই।


উপজেলার আটকাহনিয়া গ্রামের কৃষক সানোয়ার  জানান, নগরকান্দা বাজারের বিসমিল্লাহ কসমেটিক্স ও বীজ ভান্ডারের অসাধুু ব্যবসায়ী মনিরের প্রলোভনে পড়ে তিনি পাঁচ কেজি বীজ ক্রয় করেন। বীজ বপনের পর চারা গজানোর কিছুদিন পর হটাৎ ক্ষেতের পেয়াজ গাছ হলুদ ও লালচে বর্ণ ধারন করে শুকিয়ে মরতে শুরু করে। বিষয়টি দোকানদার মনিরকে জানালে সে আমাদের কোনো সঠিক সমাধান দিচ্ছে না। আমার মতন বহু কৃষক এখন মহা বিপদের মধ্যে আছি।একই এলাকার কৃষক মোঃ শাহজাহান  জানান, এনজিওর ঋন ও ধারদেনার টাকায় মনিরের কাছ থেকে বীজ কিনেছিলাম। মনির আমাকে আশরাফের বীজের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সাথে প্রতারণা করেছে। মনিরের এই কাজ আমাকে এখন পথের ফকির বানানোর উপক্রম করেছে। এতটাকা ঋণের বোঝা আমি কিভাবে শোধরাবো ? আমি এই প্রতারক মনিরের কঠিন শাস্তি দাবী করছি।


এ ব্যাপারে নগরকান্দা বাজারের কসমেটিকস ব্যবসায়ী বিসমিল্লাহ স্টোরের মনিরুজ্জামান ওরফে মনির বলেন, চারা মরে যাওয়ার খবর শুনেছি, কিন্তু বীজ তো আমি তৈরি করি নাই। আশরাফ সীড কোম্পানি আমাকে যে বীজ দিয়েছে আমি তাই বিক্রয় করেছি। কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিলে আশরাফ দিবে আমি কিছু জানি না।এসময় তার কাছে বীজ বিক্রয়ের ছাড়পত্র দেখতে চাইলে তিনি একটি মেয়াদ উত্তির্ন ছাড়পত্র বের করেন।ঘটনার বিস্তারিত জানতে বীজ উৎপাদনকারী  প্রতিষ্ঠান আশরাফ সীড কোম্পানির মালিক গিয়াসউদ্দিন শরিফের গ্রামের বাড়ি ভাংগা উপজেলার কৈডুবি সদরদি গ্রামে গেলে কথা হয় তার সাথে তিনি জানান,  নগরকান্দার মনির আমার কাছে বাকিতে বীজ কিনতে চেয়েছিলো, কিন্তু আমি তাকে বাকি দেইনি তাই সে আমার কোম্পানির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তাছাড়া আমি এবছর প্রায় পয়ত্রিশ মন বীজ বিক্রয় করেছি যার কিছু অংশ আমার নিজের খামারে উৎপাদিত এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে সংগ্রহ করা। এসময় তার বীজ কিনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি।


তিনি জানান দুই বছর আগে তার কোম্পানীর নাম ছিলো “শরিফ সীড” এখন নাম পরিবর্তন করে ছেলে আশরাফের নামে “আশরাফ সীড” নামকরন করা হয়েছে। ব্যবসা এখন ছেলেই দেখাশুনা করে। তার ছেলে আশরাফ শরিফ, এ বিষয়ে তিনি জানান, দুই পক্ষের লোকদের নিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। সমাধান না হওয়া পর্যন্ত সাংবাদিকদের কাছে কোনো মন্তব্য করবেন না বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান আশরাফ।এ ব্যাপারে  নগরকান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তিলক কুমার ঘোষ জানান, এ বিষয়ে আমাদের কাছে কৃষকরা বীজের প্যাকেট সহ অভিযোগ করলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।




এসএম



Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল