শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

খোলপেুটয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ

বৃহস্পতিবার, জানুয়ারী ২৬, ২০২৩
খোলপেুটয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ

মুহা: জিললুর রহমান, সাতক্ষীরা:

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন খোলপেটুয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। গাবুরার চৌদ্দরশি ব্রিজ সংলগ্ন এলাকাসহ খোলপেটুয়া নদীর বিভিন্ন অংশ হতে ড্রেজার মেশিন দিয়ে দিন ও রাতে বালু উত্তোলনের কাজ চলছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জাপান ফাস্ট ট্রেড নামীয় একটি প্রতিষ্ঠানের ক্রয়কৃত জলাকার ভরাটসহ স্থানীয় খুচরা ক্রেতাদের কাছে
বিক্রির জন্য প্রভাবশালী একটি মহল অবৈধভাবে খোলপেটুয়া নদী থেকে এই বালু উত্তোলন করছে। কালিকাপুর এলাকা থেকে কার্গোসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদী ভাড়ায় নিয়ে এসে স্থানীয় শ্রমিকদের কাজে লাগিয়ে প্রায় প্রতিদিন বালু উত্তোলন করা হচ্ছে নদী থেকে। প্রকাশ্যে অব্যাহতভাবে বালু উত্তালন করা হলেও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধিরা।

এদিকে প্রাকৃতিক দুযোর্গ প্রবণ ও পর্যটন এলাকা হওয়ায় খোলপেটুয়া নদী থেকে বালু উত্তোলনের ঘটনায় স্থানীয়রা নিজেদের
উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। ভাঙন কবলিত এলাকার নদী হতে অব্যাহতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা উপকুল রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে পড়বে বলে তাদের দাবি।

পদ্মপুকুর ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক মাসুম বিল্লাহ জানান, শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালীনি ও গাবুরা ইউনিয়নের মধ্যভাগ
দিয়ে প্রবাহিত খোলপেুটয়া নদীর মাঝ বরাবর বিশাল আকারের কার্গো নোঙর করা হয়েছে। কার্গোতে স্থাপন করা ড্রেজার
মেশিনের সহায়তার নদীর তলদেশ হতে ড্রেজিং করে বালু উত্তোলনের পর সেই কার্গো বুড়িগোয়ালীনির মাসুদ মোড় এলাকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এসময় লম্বা পাইপের সহায়তায় কার্গোর বালু স্থানীয়ভাবে গড়ে উঠা আকরাম হাজীর বালুর গাদা ও জাপান ফাস্ট ট্রেডের ক্রয়কৃত জমিতে ফেলা হচ্ছে। এসময় আরও দেখা যায় বালুর কার্গো থেকে বালু নামানোর কাজ সহজ করা স্বার্থে সেখানে সারাক্ষণ প্লাস্টিকের পাইপ স্থাপন করে রাখা হচ্ছে। নদী থেকে বালু উত্তোলনসহ কার্গোর বালু নামিয়ে দেয়ার কাজে সার্বক্ষণিকভাবে ৭/৮জন শ্রমিককে কাজে লাগানো হচ্ছে।

স্থানীরা জানায়, ভাঙন কবলিত এবং দুর্যোগ প্রবন এলাকা হলেও দিব্যি বিনা বাধায় খোলপেুটয়া নদী হতে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৮/৯জন সবার সামনে দিয়ে খোলপেটুয়ার বিভিন্ন অংশ হতে বালু উত্তোলন এবং পরবর্তীতে অবৈধভাবে সংগৃহীত বালু গাদায় নিয়ে বিক্রি করলেও কেউ কিছু বলছে না। বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতরা প্রভাবশালী এবং প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সাথে তাদের সখ্যতার কারণে স্থানীয়দের কেউ এসব ঘটনায় প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। বার বার ভাঙনমুখে পড়া খোলপেটুয়া নদী হতে ড্রেজিং করে বালু উত্তোলনের ঘটনায় ঝুঁকিপূর্ণ উপকুল রক্ষা বাঁধ দিনে দিনে স্থানীয়দের আতংকিত করছে বলে তাদের দাবি।

দাতিনাখালী গ্রামের আব্দুল আজিজ ও গাবুরার চকবারা গ্রামের আব্দুস সালামসহ কয়েকজন জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে প্রতিবছর তাদের এলাকায় নদী ভাঙন হচ্ছে। বছরে একাধিকবার উপকুল রক্ষা বাঁধ ভেঙে সবার জনামালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। এমতাবস্থায় ভাঙন প্রবণ এলাকার নদী থেকে নুতন করে আবার বালু উত্তোলনের ঘটনায় চর ধ্বসে যাওয়াসহ বাঁধ ভাঙনের আতংকে ভুগছে স্থানীয়রা।

পোড়াকাটলা গ্রামের পরীক্ষিত মন্ডল জানান, খোলপেটুয়া নদী হতে বালু উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে কতৃপক্ষের নিরবতায় প্রায় প্রতিদিন রাত দিন অব্যাহতভাবে প্রভাবশালীরা চৌদ্দরশি এলাকায় খোলপেটুয়ার বুক থেকে বালু উত্তোলন করে ব্যবসা করছে। 

বালু উত্তোলনের নেতৃত্বে থাকা হাবিবুর রহমান জানান, শ্যামনগরের কয়েকজন উক্ত এলাকা নির্দিষ্ট করে দিয়ে তাকে বালু উত্তোলনের কাজ দিয়েছেন। বিনিময়ে প্রতি ফুট বালু সাড়ে তিন থেকে চার টাকা পাচ্ছেন তারা। তবে কার্গো ও সরঞ্জামাদীর মালিক হাবিবুর বালু উত্তোলনের কাজ দেয়া ব্যক্তিদের নাম পরিচয় জানাতে অস্বীকৃতি জানান।

বুড়িগোয়ালীনি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম জানান, গোটা এলাকা খুবই ভাঙন কবলিত এবং ঝুঁকির্পুর্ন। বালু উত্তোলনে এসব এলাকা আরও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। নিষেধাজ্ঞা থাকায় অনেকে লুকিয়ে বালু উত্তোলন করায় তাদের আটকানো যাচ্ছে না। সাতক্ষীরা

এমআই 


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল