আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
দুই ব্রিটিশ স্বেচ্ছাসেবী ক্রিস প্যারি ও অ্যান্ড্রু বাগশোর মরদেহ ইউক্রেনে ফিরিয়ে দিয়েছে রাশিয়া।বন্দি বিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে মরদেহ ফিরিয়ে দিয়েছে রাশিয়া । এ বছরের জানুয়ারিতে পূর্ব ইউক্রেনে এ দুজন স্বেচ্ছাসেবক নিহত হন।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির চিফ অব স্টাফ অ্যান্ড্রি ইয়ারমাক এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তবে ঠিক কবে ক্রিস (২৮) ও বাগশোর (৪৭) এর মরদেহ নিজ দেশে ফিরিয়ে আনতে ব্রিটিশ দূতাবাসে হস্তান্তর করা হবে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানানো হয়নি।
নিহত দুজনের পরিবার জানায়, ইউক্রেনে মানবিক উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়ার সময় তাদের হত্যা করা হয়েছে। গত ৬ জানুয়ারি শেষবারের মতো তাদের সোলেদার শহরে যেতে দেখা যায়। বাগশোর পরিবার বলছে, এক বৃদ্ধাকে সাহায্য করার সময় কামানের একটি শেল তাদের গাড়িতে এসে পড়ে।
ক্রিস ও বাগশো ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক অঞ্চলে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছিলেন। গত মাসে মৃত্যুর খবর জানার পর ক্রিসের পরিবারের সদস্যরা বলেন, রুশ আগ্রাসনের শিকার হওয়া ইউক্রেনীয় নাগরিকদের সাহায্য করতে গিয়েছিলেন তিনি। তার নিঃস্বার্থ আত্মত্যাগ আমাদের গর্বিত করেছে।
তারা আরও বলেন, ক্রিসের সামনে একটি সম্ভাবনাময় জীবন ছিল। এর মধ্যেই তাকে বিদায় জানাতে হবে, তা কখনো আমাদের কল্পনাতেই আসেনি। তিনি একজন দায়িত্ববান ছেলে, চমৎকার ভাই, অনেকের খুব ভালো বন্ধু ও ওলগার প্রেমিক ছিলেন।
এদিকে, গবেশক অ্যান্ড্রু বাগশো ব্রিটিশ নাগরিক হলেও নিউজিল্যান্ডে থাকতেন। গত বছরের এপ্রিলে তিনি ইউক্রেনে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। মৃত্যুর খবর শোনার পর এক বিবৃতিতে তার পরিবার বলে, অ্যান্ড্রু নিঃস্বার্থভাবে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনন্ত ৪০০ এরও বেশি মানুষের জীবন বাঁচিয়েছেন। তার জন্য আমরা সত্যিই খুব গর্বিত।
গত মাসে পূর্ব ইউক্রেনের লবণখনির শহর হিসেবে পরিচিত সোলেদারের দখল নিয়ে রাশিয়া আর ইউক্রেনের সেনাদের মধ্যে ব্যাপক যুদ্ধ হয়। পরে শহরটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করে রাশিয়া।
এদিকে, ইউক্রেনের চিফ অব স্টাফ অ্যান্ড্রি ইয়ারমাক বলেন, শনিবার (৪ জানুয়ারি) পর্যন্ত ১১৬ ইউক্রেনীয় সৈন্যকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে মারিওপোল, খেরসন ও বাখমুত শহরের সেনারাসহ বিশেষ অভিযানে জড়িত দুজন কর্মকর্তা রয়েছেন।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, জটিল মধ্যস্থতা প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ৬৩ জন ইউক্রেনীয় সেনাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যস্থতার কারণেই ‘সংবেদনশীল বিভাগের’এ বন্দি লোকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
চলতি বছর দুই দেশের মধ্যে দ্বিতীয় বন্দি বিনিময় এটি। অ্যান্ড্রি ইয়ারমাক জানিয়েছেন, ইউক্রেন মুক্তিপ্রাপ্ত সবাইকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সময় জার্নাল/এলআর