আব্দুল কাইয়ুম,সাভার প্রতিনিধি:
স্থানীয় একটি সড়কের অংশ দখল করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী জমি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। এতে বন্ধ হয়ে গেছে কবরস্থানের যাওয়ার পথটিও। ইতিমধ্যে সড়কের মাটি কেটে সরোনা হয়েছে। এ ঘটনার পর ক্ষোভ প্রকাশ করলেও আতঙ্কে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না ভুক্তভোগীরা।
শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে সাভার উপজেলার আশুলিয়া ইউনিয়নের কাঠগড়া নয়াপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায় সড়কে অন্তত ৬ ফুট মাটি কেটে দখল করা হয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়, কাঠগড়া-জামগড়া সড়কের ব্যাপারী বাড়ি মসজিদ পয়েন্ট থেকে জিয়া হাউজিং-রংমালা হাকিম কারবালা হয়ে কান্দাইল গ্রামের সংযোগ সড়কটির একাংশে মাটি কেটে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে গত ৩১ জানুয়ারি থেকে স্থানীয় আব্দুর রহমান নবী তার জমির সামনে থাকা সড়কের অংশ কেটে নিজের জমির সাথে মিলিয়ে উঁচু করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, এই কারবালা আমাদের এলাকার কবরস্থান। সড়কের পূর্বদিকে কান্দাইল গ্রাম ও পশ্চিম দিকে নয়াপাড়া গ্রামের সাথে সংযুক্ত। কবরস্থানে কান্দাইল ও নয়াপাড়া গ্রামের মানুষ লাশ দাফন করে। স্থানীয় জমি ব্যবসায়ী নবীর জমির পাশ দিয়ে এই সড়কের অবস্থান। শুনেছি তিনি এই জমি একটি কারখানার কাছে বিক্রি করেছেন। আমরা এলাকাবাসী যার যার বাড়ির পাশের জায়গা ছেড়ে রাস্তা বানিয়েছি। যেই অংশে রাস্তা কাটা হয়েছে সেই অংশের উলটো পাশে যার জমি সে কিন্তু ৬ ফুট জায়গা ছেড়েছে।
স্থানীয় আনোয়ার বলেন, নবী জমির ব্যবসা করে। এই রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে পেছনের জমিগুলোর মানুষ ভোগান্তিতে পড়বে। এই সুযোগে নবী কম দামে সেই জমিগুলো কিনে নেয়ার পায়তারা করছে। উক্ত কবরস্থানের জমিদাতা পরিবারের সদস্য এ্যাডভোকেট ফরিদুর রহমান লিটন বলেন, রাস্তা ব্যবহারকারীদের আবেদনের ভিত্তিতে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদের সহযোগীতায় এই রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। জমি ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান নবীর সম্মতিতেই প্রায় আড়াই বছর আগে এই রাস্তা নির্মাণ হয়। রাস্তা কেটে বেশি জমি বিক্রি করাই এখন তার উদ্দেশ্য। আমরা সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই সমস্যার দ্রুত সমাধানের দাবি জানাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুর রহমান নবী বলেন, আমি এই জমি একটি পোশাক কারখানার কাছে বিক্রি করেছি। তাদের এখনও জমিটি বুঝিয়ে দেইনি। জমির উপর মাটি ফেলে রাস্তা বানানো হয়েছে তা আমি জানিনা। জমি বুঝিয়ে দিতে চাইলে আমার তো পুরো জমি লাগবে। ১ শতাংশ জমিও যদি কম পরে আমি কিভাবে বুঝিয়ে দিব। সরকারি মাটি কেন নিজের জমিতে নিলেন জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি মাটির ব্যাপারে কিছুই জানিনা। কবে এই মাটি ফেলা হয়েছে তাও আমি জানিনা। আমাকে জিজ্ঞাসা না করেই আমার জমিতে মাটি ফেলেছে। স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য মোহাম্মদ আলী সরকার বলেন, আমি শুনেছি রাস্তার মাটি কেটে ফেলা হয়েছে। কয়েক বছর আগে টিআর-কাবিখার ৪০ দিনের প্রকল্পের মাধ্যমে এই সড়কে মাটি ফেলা হয়েছিল। আমি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানিয়েছি। আমরা আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করব যেন মানুষ ভোগান্তিতে না পরে।
আশুলিয়া রাজস্ব সার্কেলের সহ-কমিশনার(ভূমি) এসিল্যান্ড আনোয়ার হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী জনগণ ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে ইউএনও মহোদয়ের কাছে আবেদন করলে আমরা ইউএনও মহোদয়ের নির্দেশনায় অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
/আইপি