নিজস্ব প্রতিনিধি:
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর পার হচ্ছে আজ শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি)। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত সংস্থা ডিএনএ টেস্টের অপেক্ষায় ছিল ১১ বছর।
অনেক প্রতীক্ষার পর যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগার থেকে ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) পরীক্ষার রিপোর্টগুলো হাতে পেয়েছে এলিট ফোর্স র্যাপিড আ্যকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
রিপোর্ট ও অপরাধচিত্রের প্রতিবেদন (ক্রাইম সিন রিপোর্ট) পর্যালোচনায় দুজনের ডিএনএর পূর্ণাঙ্গ প্রোফাইল পেলেও সন্দেহভাজন খুনি শনাক্ত হয়নি।
ফলে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত খুনিদের শনাক্ত বা গ্রেফতারের আশা প্রায় ক্ষীণ। ডিএনএ রিপোর্ট পাওয়ার পরও সন্দেহভাজন খুনিদের শনাক্ত করতে না পারায় খোদ হতাশায় রয়েছে র্যাব কর্মকর্তারা।
এদিকে অতীতের মতো আদালতে কোনো প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি র্যাব। উল্টো ৯৫ বার পেছানো হয়েছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ। ফলে নিহতদের স্বজনদের প্রশ্ন, ৪৮ ঘণ্টা শেষ হবে কবে। আর কবে খুনিরা ধরা পড়বে। কবে রহস্যের জট খুলবে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, যে কোনো হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে নেমে তদন্ত কর্মকর্তা প্রথমে হত্যাকাণ্ডের পেছনের কারণ খোঁজেন। এরপর আসামি শনাক্তকরণের চেষ্টা করেন, কোনো ধরনের ক্লু পেতে জব্দকৃত আলামত পরীক্ষা ও হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তির খোয়া যাওয়া মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা করেন।
এসব একটি মামলা তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ের কার্যক্রম। ১১ বছর তদন্তের পরও সাগর-রুনি হত্যা মামলা ঠিক এরুপ প্রাথমিক পর্যায়েই রয়েছে।
এখনো আসামি শনাক্তকরণ, জব্দকৃত আলামত পরীক্ষা ও নিহতদের খোয়া যাওয়া ল্যাপটপ উদ্ধারের চেষ্টায় রয়েছে তদন্ত সংস্থা।
র্যাব মামলার তদন্তে নেমে গ্রেফতারকৃত ৮ আসামি, নিহত দুজন এবং স্বজনসহ মোট ২৫ জনের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠায়।
তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের পরীক্ষাগার থেকে ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) পরীক্ষার রিপোর্টগুলো হাতে পেয়েছে র্যাব। সে রিপোর্ট ও অপরাধচিত্রের প্রতিবেদন (ক্রাইম সিন রিপোর্ট) পর্যালোচনায় দুজনের ডিএনএর পূর্ণাঙ্গ প্রোফাইল পাওয়া গেছে। তবে এসব পরীক্ষায় সন্দেহভাজন খুনি শনাক্ত হয়নি।
এ মামলায় গ্রেফতার ৮ জনের মধ্যে পাঁচজন-রফিকুল, বকুল, সাইদ, মিন্টু ও কামরুল হাসান ওরফে অরুণ মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক নারায়ণচন্দ্র রায়। গ্রেফতার দেখানো হয় পারিবারিক বন্ধু তানভীর এবং বাসার নিরাপত্তাকর্মী পলাশ রুদ্র পাল ও হুমায়ূন কবীরকে। তাদের মধ্যে সবাই হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক গোলাম মোস্তফা সারোয়ার ওরফে সাগর সারোয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন নাহার রুনা ওরফে মেহেরুন রুনি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় খুন হন। তখন বাসায় ছিল তাদের সাড়ে চার বছরের ছেলে মাহির সারোয়ার মেঘ। হত্যাকাণ্ডের পর রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন।
সময় জার্নাল/এলআর