লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চরশাহীতে সিরাজ হোসেন মিয়াজী (৫৮) নামে এক ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতার উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (১ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পূর্ব সৈয়দপুর গ্রামের মিয়াজী বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সিরাজ ওই বাড়ির মৃত সৈয়দ আহম্মদের পুত্র এবং চরশাহী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
হামলাকারীরা হলেন, একই বাড়ির বোরহান (৩৬), আবদুস সালাম (৫৮), নজরুল (৩০), জিহাদ (১৯), শাহজাহান (৬০), শাওন (১৭), হৃদয় (২৫) সহ ২০-২৫ জন। তাদের হাত থেকে সিরাজ মিয়াজীকে উদ্ধার করতে গেলে তার ভাই জহিরুল ইসলাম মিয়াজীও হামলার শিকার হন। এ সময় তার সাথে থাকা একটি টাকার ব্যাগ থেকে টাকা লুটের অভিযোগ করেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিরাজ হোসেন মিয়াজী গত কয়েক বছর থেকে বাড়ির পাশের ‘কালী গঙ্গা চৌধুরী রানী দিঘি’ ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করেন। দিঘিটি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের জয়াগ এলাকার গান্ধী আশ্রম ট্রাষ্টের মালিকানাধীন।
সর্বশেষ তিন বছরের জন্য ওই আশ্রম থেকে তিনি দিঘি ইজার নিয়ে মাছ চাষ করে আসছেন। দিঘির কিছু অংশের মালিকানা দাবি করে স্থানীয় আবুল খায়ের গং। জটিলতা নিরসনে গান্ধী আশ্রমের পক্ষ থেকে আদালতে মামলাও করা হয়, সেগুলো এখনো চলমান রয়েছে। এসব নিয়ে বিভিন্ন সময়ে তাদের সাথে সিরাজ মিয়াজীর বিরোধ দেখা দেয়। সম্প্রতি গান্ধী আশ্রম ট্রাষ্টের পক্ষ থেকে দিঘিটি পরিদর্শন করা হয়। সেটাকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন যাবৎ থেকে ইজারাদার আওয়ামীলীগ নেতা সিরাজ মিয়াকে আবুল খায়েরের ভাই মৃত আতিক উল্যার পুত্র শাহজাহান, সোলেমান, আবদুস সোবাহান এবং সোলেমানের পুত্ররাসহ তাদের লোকজন হুমকি দিয়ে আসছে। এছাড়া একটি বৈদু্যুতিক খুঁটি স্থাপনকে কেন্দ্র করে সিরাজের সাথে বিরোধ করে হামলার নেতৃত্বে থাকা বোরহান।
হামলার শিকার সিরাজ মিয়া জানান, সোমবার সকালে কেউ একজন দিঘি থেকে মাছ শিকার করছে- এমন খবরে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন। বাড়ির সামনে আসামাত্র বোরহানের নেতৃত্বে তার উপর হামলা চালানো হয়। বিভিন্নস্থান থেকে তারা ভাড়াটে লোক এনে তার উপর হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীরা চাকু দিয়ে তার মাথার একাধিকস্থানে আঘাত করে এবং শরীরের বিভিন্নস্থানে জখম করে।
সিরাজের ভাই জহিরুল ইসলাম বলেন, আমি দাসেরহাট বাজারে আমার দোকানে যাবার উদ্দেশ্যে রওনা হই। এ সময় দেখি আমার ভাইকে মারধর করতেছে। আমি হামলাকারীদের হাত থেকে তাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে গেলে তারা আমাকেও মারধর করে। আমার সাথে একটি টাকার ব্যাগ ছিলো, সেখান থেকে ৩০ হাজার টাকার মতো খোয়া গেছে। তাদের হাত থেকে বাঁচতে আমরা ঘরের ভেতরে অবস্থান নিলে তারা আমাদেরকে অবরূদ্ধ করে রাখে। পরে দাসেরহাট পুলিশ ফাঁড়িতে খবর দিলে পুলিশ আসলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পুলিশ আমাদেরকে উদ্ধার করে দাসের হাট বাজারে নিয়ে আসে। সেখান থেকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসি।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের কারো সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
দাসেরহাট পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মফিজ উদ্দিন বলেন, সিরাজ মিয়াজী এবং আবুল খায়ের মিয়াজিগং মারামারি করেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের শান্ত করি। থানায় অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সময় জার্নাল/