নিয়াজ ইসলাম আরিফ:
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)’র অর্থায়নে, ডিনেট এবং ফ্রেডরিক নওম্যান ফাউন্ডেশন ফর ফ্রিডম যৌথভাবে ‘Foster Responsible Digital Citizenship to Promote Freedom of Expression in Bangladesh’ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে দায়িত্বশীল ডিজিটাল সিটিজেন হতে সহায়তা করা এবং তাঁদের মাঝে গঠনমূলকভাবে স্বাধীন মত প্রকাশের চেতনা গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে এই প্রকল্পের সূচনা। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ তারিখে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ‘ভয়েস অফ ফ্রিডম’ শীর্ষক একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
এই প্রতিযোগীতায় প্রতিযোগী হিসেবে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন বিভাগ থেকে বাছাইকৃত চারটি দলে মোট ১২ জন শিক্ষার্থী এবং দর্শক হিসেবে উপস্থিত ছিল বিভিন্ন বিভাগ থেকে শিক্ষকসহ প্রায় ১০০ জনের অধিক শিক্ষার্থী। দর্শকদের জন্যও সেশনে রাখা হয় আকর্ষণীয় কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন।
আয়োজনের শুরুতেই বক্তব্য রাখেন এফআরডিসি প্রকল্প পরিচালক আসিফ আহমেদ তন্ময়। প্রকল্প সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করতে গিয়ে তিনি বলেন- “এফআরডিসি প্রকল্প মূলত দেশের তরুণ সমাজকে ডিজিটাল সিটিজেনশিপ শিক্ষার ধারণাসমূহ সাথে পরিচিত করে তাদের ডিজিটাল দুনিয়ায় স্বাধীনভাবে ও গঠনমূলক উপায়ে দায়িত্বশীল মতপ্রকাশে সক্ষম করতে কাজ করে যাচ্ছে। আজকের এই বিতর্ক প্রতিযোগিতাও সেই উদ্যোগের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করছে।”
এর সাথে বক্তব্য রাখেন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম ওসমান গনি তালুকদার। তিনি বলেন- “বর্তমান যুগ হল তথ্য প্রযুক্তির যুগ। আগে ছিল জ্ঞানই শক্তি তবে এখন এর সাথে যুক্ত হয়েছে তথ্য। আর তাই বাংলাদেশ সরকার তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর একটি সমাজ তৈরির প্রত্যয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। আর সেই লক্ষ্যে কার্যকরভাবে অবদান রাখতে পারবে ডিজিটাল সিটিজেনশিপ শিক্ষায় শিক্ষিত আজকের বিতর্কে উপস্থিত সকল শিক্ষার্থীরা।”
প্রতিযোগিতায় দুই ধাপে বিতর্কের আয়োজন করা হয়। প্রথম ধাপের দুই বিজয়ীর মাঝে চূড়ান্ত পর্বের বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। চূড়ান্ত পর্বের বিষয় ছিলো- ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের ভালোর চেয়ে ক্ষতিই বেশি করে।’ প্রতিযোগিতায় তাদের অসাধারণ বাগ্মিতায় বিজয়ী হয়: মো: মাহফুজুর রহমান, মো: মাহমুদুল হাসান ও মো: সোলায়মান শাকিল। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিচারকের ভূমিকা পালন করেন: মো: সাথিল সিরাজ এবং মো: মারুফ ইসলাম।
প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী ঘোষণা, পুরস্কার বিতরণী এবং ডিনেটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক এম. শাহাদাৎ হোসেন-এর সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে সুন্দর এই আয়োজন শেষ হয়। তিনি বলেন- “আজকের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সকল প্রতিযোগী এবং উপস্থিত সকলেই হলেন প্রকৃত বিজয়ী। কারণ তারা প্রত্যক্ষ করেছেন প্রাণবন্ত একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতা যার মাধ্যমে আমাদের সমাজে শুরু হবে সমাজ পরিবর্তনের জন্য ইতিবাচক প্রচেষ্টা।”
এফআরডিসি প্রকল্পের নানান সচেতনতা কর্মকান্ডের পাশাপাশি রয়েছে একটি বিনা মূল্যের অনলাইন কোর্সের ওয়েবসাইট এই ওয়েবসাইট https://www.digitalcitizenbd.com/-এ আছে তরুণ সমাজবান্ধব বিভিন্ন উদ্যোগ যা থেকে শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল সিটিজেনশিপ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষণীয় বিষয় জানতে পারবেন এবং একটি গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে বিশ্লেষণধর্মী চিন্তা চর্চার পদ্ধতি সম্পর্কে জানবেন। এই ওয়েবসাইট তাঁদের ডিজিটাল দুনিয়ায় বিচরণের ক্ষেত্রে আচরণগত পরিবর্তন এনে একজন গর্বিত ডিজিটাল নাগরিকে পরিণত হতে সহায়তা করবে।
সময় জার্নাল/এলআর