জেলা প্রতিনিধি:
সু-স্বাদু আর বাহারী জাতের আমের কথা উঠলেই চলে আসে মেহেরপুর জেলার নাম। রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে আমের জন্য বিখ্যাত বলা হলেও ইতোমধ্যেই আম প্রধান অঞ্চল হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছে মেহেরপুর। গত কয়েক বছরে দেশ ও বিদেশে বেশ সুনাম অর্জন করেছে এ জেলার আম।
আম গাছগুলোতে এখন মৌ মৌ গন্ধ। এই সুঘ্রাণে প্রাণ জুড়িয়ে যায়। মুকুল থেকে আমের গুটি আসা শুরু। বাগান পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন গাংনীর বিভিন্ন এলাকার বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারো আমের ভালো ফলনের আশা করছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
গাংনীর আমচাষীরা জানান, বিগত বছরের তুলনায় এবার আমের মুকুল খুব বেশি ভালো না হলেও মোটামুটি হয়েছে।
গত কয়েকদিনে সরেজমিনে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার পশ্চিম মালশাদহ, চৌগাছা, চেংগাড়া, জোড়পুকুরিয়া, ধর্মচাকী, ভোমরদহ, হিজলবাড়ীয়া, হিন্দা, পলাশীপাড়া, তেঁতুলবাড়ীয়া, কাজীপুর, হাড়াভাঙ্গা, বেতবাড়ীয়া, চর গোয়ালগ্রাম, মটমুড়া, ভবানীপুর, হোগলবাড়িয়া, মহাম্মদপুর, সহড়াতলা, মাইলমারী, নওপাড়া, বামুন্দী, গোপালনগর, সাহারবাটী, গাঁড়াডোব, ধানখোলা ও জুগিরগোফাসহ কয়েকটি গ্রামের বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাঘের শুরুতে আম গাছের ডালে ডালে মুকুল ফুটতে শুরু করে। তখন থেকেই তারা মুকুলের পরিচর্যা শুরু করেন।
তাদের মতে, গাছে গাছে যে পরিমাণ মুকুল এসেছে, তাতে অর্ধেক টিকে গেলেও আমের বাম্পার ফলন হবে। তবে গত বছরের তুলনায় এবার আম গাছে তুলনামূলকভাবে মুকুল কম এসেছে।
যেমন- একটি ডালে মুকুল এসেছে চারটি। আরেকটিতে কোনো মুকুল আসেনি। এই কারণে মৌসুম শুরুর আগে থেকেই কিছুটা চিন্তিত রয়েছে আম চাষীরা। তারপরও প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আশানুরূপ ফলন হবে বলে আশা করছেন তারা।
জুগিন্দা গ্রামের আম চাষী নুর ইসলাম জানান, গাছে মুকুল আসার পর থেকে আম পাড়া পর্যন্ত পাঁচ থেকে ছয়বার কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। তাতে হেক্টরে ৩৮ থেকে ৫০ হাজার টাকার বালাইনাশক লাগে।
ঢেপা গ্রামের মুজাহিদুল আলম জানান, দাদার আমলে ফজলি, ল্যাংড়া, গোপালভোগ আম দেখলেও এখন হিমসাগর, আম রুপালি, মল্লিকা, বিশ্বনাথ, সখিনা, বারি-৪, কাটিমন জাতের আমসহ হাইব্রিড জাতের বিভিন্ন নামে আমের চাষ হচ্ছে।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শংকর কুমার মজুমদার জানান, জেলায় প্রায় দুই হাজার পাঁচ শ’ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আম চাষ করলে উৎপাদন যেমন বাড়বে, তেমনি সঠিকভাবে সংরক্ষণ এবং পরিবহন, রফতানিসহ বাজারজাত করলে কৃষকরা ব্যাপক হারে লাভবান হবেন।
তিনি আরো জানান, উন্নত পদ্ধতিতে আম চাষ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের নানা পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা।
সময় জার্নাল/এলআর