বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪

বঙ্গবন্ধু ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে বসে ঐতিহাসিক ৬ দফা প্রণয়ন করেন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বৃহস্পতিবার, মার্চ ২, ২০২৩
বঙ্গবন্ধু ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে বসে ঐতিহাসিক ৬ দফা প্রণয়ন করেন:প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

স্টাফ রিপোর্টার :

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চাকরি করার সময় ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীর অফিসে বসেই ঐতিহাসিক ছয় দফা প্রণয়ন করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘জাতির পিতা আলফা ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে বসেই ছয় দফা প্রণয়ন করেছিলেন। পুরো বিষয়টা টাইপ করেছিলেন মোহাম্মদ হানিফ (ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র)। পরে এটা একজন বিজ্ঞজন, তৎকালিন ঢাকা কলেজের প্রিন্সিপাল জালালু্িদ্দন সাহেবকে দিয়ে অনুবাদ করানো হয়। গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বীমা দিবস-২০২৩-এর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।


তিনি বলেন, আমাদের যে স্বাধীনতা অর্জন বা ছয় দফা প্রণয়ন, ছয় দফার ভিত্তিতে ৭০ এর নির্বাচন-সবই কিন্তু ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে বসেই করা হয়। তাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে ইন্স্যুরেন্সের একটা যোগসূত্র রয়ে গেছে, এটাই বাস্তবতা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষতি করে বীমার অর্থের দাবিদারদের ব্যাপারে বীমা কোম্পানিগুলোকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে বলেন, যথাযথ তদন্ত না করে যে কোনো স্থানের বা প্রভাবশালীদের চাপের মুখে অগ্নিকান্ডে কোনো সম্পত্তির ক্ষতির জন্য বীমার অর্থ ছাড় করবেন না। কারো চাপের কাছে আপনারা মাথা নত করবেন না। আমিই বলেন বা আমাদের মন্ত্রি পরিষদের সদস্যদের কাছে নানা ধরনের লোক আসে, তদবিরও করতে পারে সেক্ষেত্রেও আপনাদের দেখতে হবে প্রকৃত ক্ষতি কতটুকু। দাবিদার দাবি করবে বড় একটা কিন্তু তার প্রকৃত ক্ষতি যাচাই-বাছাই করেই আপনারা অর্থ পরিশোধ করবেন।


বীমার অর্থ দাবির ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য প্রদান করে স্বার্থান্বেষী মহলের অতিরিক্ত অর্থ হাতিয়ে নেয়ার বিষয়েও বীমা কোম্পানিগুলোকে সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি আগে থেকেই ভেবে রেখেছিলেন আজকে এ কথা বলবেন, কারণ, তিনি যেহেতু এই পরিবারেরই একজন সদস্য (জাতির পিতাও বীমা কোম্পানিতে চাকরি করেছিলেন) তাই এর বদনাম হোক তা তিনি চান না। এক সময় তৈরি পোষাক কারখানাগুলোতে ঘন ঘন অগ্নিকান্ড ঘটার প্রসঙ্গ টেনে তদন্ত করে তিনি বীমার মোটা অংকের মিথ্যা অর্থ দাবির প্রমাণ পেয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ঘন ঘন একটা জায়গায় আগুন লাগবে কেন? ইন্সুরেন্সের দাবিদার হয়ে যায়, টাকা পায়। সেক্ষেত্রে আমার অনুরোধ থাকবে বিভিন্ন ইন্সুরেন্স কোম্পানি এবং কর্তৃপক্ষ করে দিয়েছি তাদের এ ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকা দরকার। কতটুকু ক্ষতি হলো তার যথাযথভাবে তদন্ত হওয়া দরকার। যথাযথভাবে তদন্ত না করে কারো চাপে পড়ে কোন টাকা দিবেন না।


১৯৬০ সালের ১ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন আলফা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন। তাই সরকার প্রতিবছর ১ মার্চকে জাতীয় বীমা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং গত বছর একে ‘ক’ ক্যাটাগরি ভুক্ত দিবস হিসেবে উন্নীত করে। তিনি বলেন, স্বৈরশাসক আইয়ুব খান ১৯৫৮ সালে সকল রাজনীতির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। সেই সময় জাতির পিতা ১৯৬০ সালের ১ মার্চ যোগ দেন আলফা ইন্সুরেন্স কোম্পানির বাংলাদেশ অঞ্চলের প্রধান হিসেবে। 

জনমুখী এ পেশাটিকে তিনি শুধু চাকুরি নয়, রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে গ্রহণ করেন। দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গেও বীমা কোম্পানির যোগসূত্র রয়েছে। বঙ্গবন্ধু ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে বসেই ৬ দফা প্রণয়ন করেছিলেন এবং তাঁদের চড়াই উৎরাইভরা জীবনে এবং ’৬২ সালে বঙ্গবন্ধুর পুণরায় গ্রেফতারের আগে ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির চাকরিকালীন প্রায় দুই বছর সময় তারাও একটু স্থিতিশীল হতে পেরেছিলেন। কাজেই ইন্সুরেন্স কোম্পানির সাথে আমাদের আত্মার একটা যোগাযোগ আছে, এতে কোন সন্দেহ নাই।


প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ওপর আইয়ুব খানের সরকার বিধিনিষেধ থাকায় তিনি চাইলেই যেকোনো জায়গায় যেতে পারতেন না। কিন্তু ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরির সুবাদে বঙ্গবন্ধু জেলায় জেলায় যেতেন। এর মাধ্যমে তিনি মুক্তি সংগ্রামের পক্ষে মানুষকে সংগঠিত করেন এবং স্বাধীনতার চেতনাকে ধীরে ধীরে মানুষের মাঝে জাগরুক করারও একটা সুযোগ পান। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে বীমা ব্যবস্থার উন্নয়নে ‘বীমা আইন-২০১০’ এবং ‘বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আইন-২০১০’ প্রণয়ন করে। এর আওতায় বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ গঠন করা হয়। তার সরকার ইন্স্যুরেন্স কর্পোরেশন অ্যাক্ট-১৯৭৩ রহিত করে বীমা কর্পোরেশন আইন-২০১৯ এবং জাতীয় বীমা নীতি-২০১৪ প্রণয়ন করেছে। পাশাপাশি বীমা খাতে ‘একচুয়ারি’ নিয়োগের ব্যবস্থা করেছে। দেশের বীমা কোম্পানি এখন অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কাজেই আমি মনে করি যত বড় বড় মেগা প্রকল্প আমাদের তৈরি হচ্ছে এর সবক্ষেত্রেই বীমা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


স্বাস্থ্য বীমা, জীবন বীমা এবং বঙ্গবন্ধুর নামে বীমাসহ বহুমুখি বীমার উদ্যোগ নেয়ায় তিনি সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে এর প্রচারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রবাসী কর্মী বীমা’, ‘শস্যবীমা’, ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা, খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ‘বঙ্গবন্ধু স্পোর্টস ম্যান’স কম্প্রিহেনসিভ ইন্স্যুরেন্স,’ ‘বঙ্গবন্ধু সুরক্ষা বীমা’। এছাড়া, কৃষি, স্বাস্থ্য, ভবন, মোটরযান ও রেলযাত্রীদের জন্য বীমা চালু হয়েছে যেগুলো মানুষকে সুরক্ষা দিবে। কিন্তু এগুলো মানুষ করলো কি-না সেটাও দেখতে হবে।


অর্থমন্ত্রণালয় এবং বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) যৌথভাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, আইডিআরএ’র চেয়ারম্যান জয়নুল বারী এবং বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইএ) সভাপতি শেখ কবির হোসেন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বীমা খাতের ওপর একটি ভিডিও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সকে লাইফ ইন্স্যুরেন্স ক্যাটাগরিতে এবং নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্স ক্যাটাগরিতে গ্রিন ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং সোনার বাংলা লাইফ ইন্স্যুরেন্সকে সম্মাননা প্রদান করেন।



সময় জার্নাল/এসএস



Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল