এম.পলাশ শরীফ, বাগেরহাট:
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে একটি সরকারি রাস্তা কেটে ৮০ বিঘার মৎস্য ঘেরে পানি তুলছেন প্রভাবশালী ঘের ব্যবসায়ী মো. কামরুল হাসান বাবলু। এতে স্থানীয় দুটি ওয়ার্ডের ৫শ’ পরিবারের প্রায় ২ হাজার মানুষের চলাচলে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
সরেজমিনে (১১ মার্চ শনিবার) খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার বহরবুনিয়া ইউনিয়নে উত্তর ফুলহাতা গ্রামের ৬ ও ৭ নং এ দুটি ওয়ার্ডের চলাচলের ১৪০ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সামনে থেকে নারিকেল বাড়িয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় অভিমুখি সিমান্তবর্তী জিউধরা ইউনিয়নের কালামের মোড পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার কাঁচা এ রাস্তাটি ব্যক্তি স্বার্থে মৎস্য ঘেরে পানি উঠানোর জন্য হিন্দু পাড়ার নিরঞ্জন তাফালীর বাড়ির সামনে থেকে কেটে সাঁকো তৈরি করে দিয়েছে প্রভাবশালী ঘের ব্যবসায়ী কামরুল হাসান বাবুল। ৫ বছর ধরে এ কাটা রাস্তার সাঁকো পেরিয়ে যাতায়েত করতে হচ্ছে স্থানীয়দের। তার ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারছে না। প্রতিনিয়ত চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্কুল শিক্ষার্থীসহ বৃদ্ধদের।
রাস্তাটির দু’মাথায় দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এক কিলোমিটার পায়ে হেটে ওই সাঁকো পেরিয়ে নারিকেলবাড়িয়া সরকারি পুকুরে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয় ৪ মহল্লার শত শত নারী পুরুষের। এ রাস্তাটি থেকে ওই ঘেরের মাটি কাটার জন্য (এস্কেভেটর) ভেকু মেশিন চালিয়ে রাস্তাটির বিভিন্নস্থানে খানা খন্দে পরিনত করেছে। সরকারি অর্থ বরাদ্দের সংস্কারকৃত রাস্তার পাইলিং ধসে ঘেরের পেটে চলে গেছে। বছরের পর বছর জুড়ে সরকারি রাস্তা ক্ষত-বিক্ষত। এতে স্থানীয়দের চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা উত্তর ফুলহাতা গ্রামের কৃষক বাচ্চু খান (৩২), দুলু খান (৫৫), মজিদ শিকদার (৫৩), গিয়াস হাওলাদার ( ৫১), স্বপন ফকির (৫০), মিন্টু হাওলাদার (৪৫), শান্তি রানি তাফালী (৬৫), শিখা রানী (৪৭), দুলালী রানী (৪০)সহ ক্ষতিগ্রস্ত একাধিক গ্রামবাসীরা বলেন, গ্রামের কোন মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়লে চিকিৎসার জন্য তাকে উপজেলা শহরে নিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। তার পরেও ব্যক্তি স্বার্থে সরকারি রাস্তা এভাবে কি করে কেটে বছরের পর বছর জুড়ে ঘের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। দেখার কি কেউ নেই?। আমাদের এ ভোগান্তি লাঘবের জন্য উর্দ্ধতন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. ফরিদ হোসেন ফকির বলেন, ৫ বছর পূর্বে সরকারি অর্থ বরাদ্দে এ মাটির রাস্তাটি করা হয়েছিলো। রাস্তা কেটে প্রভাবশালী ঘের ব্যবসায়ী কামরুল হাসান বাবুল সাঁকো দিয়ে ভোগান্তি সৃষ্টি করে রেখেছে। এ বিষয়ে তিনি নিজে বাদি হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আশা করছেন জনগুরুত্বপূর্ন এ বিষয়টি প্রশাসন নজরদারিতে নিয়ে জনভোগান্তি অচিরেই লাঘব করবে।
এ বিষয়ে মো. কামরুল হাসান বাবুল বলেন, উত্তর ফুলহাতার রাস্তাটি তিনি কেটেছেন। শ্রীঘই ওখানে একটি কাঠের পুল তৈরী করে দিবেন।
এ সর্ম্পকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম তারেক সুলতান বলেন, বহরবুনিয়ার সরকারি রাস্তা কাটার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ খবর নিয়ে ঘের ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। রাস্তা কেটে জনভোগান্তি সৃষ্টি করা কারও অধিকার নেই।
এমআই