মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর সোমবার প্রথমবারের মতো তাকে দেখলেন তার আইনজীবীরা। এ দিন তার বিরুদ্ধে নতুন করে দুটি মামলা করা হয়েছে। (খবর বিবিসির)।
সু চির আইনজীবী জানান, রাজধানী নেপিদোর আদালতে হাজির হওয়া ৭৫ বছর বয়সী সু চিকে দেখে তিনি শারীরিকভাবে ভালো আছে বলে মনে হয়েছে।
আইনজীবী মিন মিন সোয়ে বলেন, আমি তাকে ভিডিওতে দেখেছি, তাকে সুস্থ দেখাচ্ছিল। তিনি তার আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন।
সোমবার তার বিরুদ্ধে আরও দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর একটি ঔপনিবেশিক আমলের দণ্ডবিধির একটি ধারায়, যেখানে ‘আতঙ্ক বা উদ্বেগ’ তৈরি করতে পারে এমন তথ্য প্রকাশে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
অপরটি টেলিযোগাযোগ আইনের অধীনে। ওই আইনজীবী জানান, আগামী ১৫ মার্চ এসব মামলায় পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে তার বিরুদ্ধে আমদানি-রপ্তানি আইন ভঙ্গ এবং অবৈধভাবে যোগাযোগ ডিভাইস ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
সে সময় আদালতে সু চির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগপত্রে বলা হয়, তিনি ওয়াকিটকি অবৈধভাবে আমদানি ও ব্যবহার করেছেন, যা তার নেপিদোর বাড়িতেই পাওয়া গেছে।
এদিকে সু চি আদালতে হাজির হওয়ার আগেই সোমবার সকাল থেকে মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনসহ বেশ কয়েকটি শহরে তার সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
ইয়াঙ্গুনে কয়েকশ প্রতিবাদকারীকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করেছে।
এর আগে রোববার সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে ১৮ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় জাতিসংঘের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইন্দোনেশিয়া নিন্দা জানিয়েছে।
মিয়ানমারে গত নভেম্বরের নির্বাচনে অং সান সু চির ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বিপুল জয় পায়। কিন্তু নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলে সেনাবাহিনী।
তারা পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশন শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে সামরিক অভ্যুত্থান করে। এদিন সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী সু চির সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে।
এরপর দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। সেনাবাহিনী সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। জান্তা শাসকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দিন দিন জোরালো হচ্ছে। সঙ্গে দমন-পীড়নও জোরদার করছে নিরাপত্তা বাহিনী।