নিজস্ব প্রতিনিধি:
রাজধানীর বংশাল থানার সিদ্দিকবাজারের ক্যাফে কুইন ভবনের নিচে ছিল গ্যাসের লাইন। সেখানে পর্যাপ্ত ভেন্টিলেশন না থাকায় লাইনের লিকেজ থেকে বের হওয়া গ্যাস জমা হয়। সেই গ্যাস থেকেই শর্টসার্কিট বা দিয়াশলাইয়ের কাঠি জ্বালানোর মধ্য দিয়ে হয় বিস্ফোরণের সূত্রপাত। ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটি জানায় এমন তথ্য। তবে বিষয়টি মানতে নারাজ তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
গ্যাসের লাইনে লিকেজ থাকা বা অবৈধ গ্যাসলাইন ও পর্যাপ্ত ভেন্টিলেশন না থাকার বিষয়ে নতুন করে কোনো মন্তব্য করতে চায় না তিতাস।
নতুন করে কিছু না বলতে চাইলেও বিস্ফোরণের পাঁচদিন পর ১২ মার্চ সংস্থাটির একটি প্রতিনিধিদল ওই ভবন পরিদর্শন করে। তখন তিতাসের জেনারেল ম্যানেজার (মার্কেটিং দক্ষিণ) শামসুদ্দিন আল আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, তিতাসের গ্যাস থেকে ভবনে বিস্ফোরণ হয়নি। আমরা এখনো গ্যাসের আলামত পাইনি। এ দুর্ঘটনা প্রাকৃতিক গ্যাস সৃষ্ট নয়।
ঘটনার পরদিনই ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
এর আগে কমিটির প্রধান ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন লিখিত আকারে আমরা জমা দেবো। সেখানে বিস্তারিত সব কিছু লেখা থাকবে।
বিস্ফোরণের পর রাজউক ভবনের নকশা খুঁজে পাচ্ছিল না। নকশার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জমির মালিকের কাছ থেকে ভবনটির নকশা মিলেছে। বিল্ডিং কোড মেনে করেছে কি না সেটা নকশায় থাকে না।
ভবনটির ডিটেইল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যাসেসমেন্টের (ডিইএ) পর জানা যাবে বিল্ডিং কোড মানা হয়েছে কি না। আর আমাদের দেশে বিল্ডিং কোড হওয়ার আগে এ ভবন অনুমোদন নেওয়া হয়েছিল। ভবনটি বাণিজ্যিক ভবন হিসেবে পাঁচ তলার অনুমোদন ছিল।
বিস্ফোরণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির ২৪টি কলামের ৯টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরই মধ্যে চারটি কলাম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেগুলো মেরামত করা হয়েছে।
রাজউকের তদন্ত কমিটির সুপারিশের পর গত মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সকাল থেকেই ভবনটির সামনের সড়কের দুটি লেন দিয়ে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। বেরিয়ার দিয়ে রাখা হয়েছে ভবনের সামনের অংশ। ভবনের নিরাপত্তার জন্য দায়িত্বে রয়েছে পুলিশ। তবে ভবনটি ঝুঁকিতে থাকায় এখনো ভবনের বেজমেন্টে উদ্ধারকাজ চালাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস।
এদিকে গত ৭ মার্চ বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে ভবনটিতে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৫ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও দেড় শতাধিক। তাদের মধ্যে এখনো বেশ কয়েকজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ ঘটনায় ভবনের দুই মালিক ওয়াহিদুর রহমান ও তার ভাই মতিউর রহমান এবং ভবনের বেজমেন্টের স্যানিটারি ব্যবসায়ী মিন্টু কারাগারে।
সময় জার্নাল/এলআর