শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪

একটি গ্রামীন প্রবচন ও বর্তমান তরমুজ বাজার

শনিবার, মে ১, ২০২১
একটি গ্রামীন প্রবচন ও বর্তমান তরমুজ বাজার

মোঃ ফরহাদ সরকার : এক গ্রামে একটি একান্নবর্তী পরিবারে মা বাবার আদুরে একটি মেয়ে বউ হয়ে এলো। শাশুড়ি বেশ কড়া মেজাজী ও বুদ্ধিমতি।সদা নতুন বউ কে শাসনে ব্যাস্ত থাকেন। পান থেকে চুন খসার ফুরসত টুকু জোটেনা বউয়ের কপালে। সাংসারিক সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ ও হিসাব নিকাশ খোদ শাশুড়িই করেন।

নতুন বউ শাশুড়ীর মন মত সব কাজই করেন। ঠিক যেন মরা সাপ। যেমনি নড়ায় তেমনি নড়ে তবু চাঁদে কলংকের মত একটি আদুরে অভ্যাস তার রয়েই গেছে আর তা হলো নিত্যদিনের রোজ করা গরুর দুধ বাটি ভরে খাওয়া।

হিসেবী শাশুড়ী খাবার বেলায় সবার জন্য দুধ বিতরনে গিয়ে হিসেব মেলাতে পারছেন না ইদানীং। কিন্তু যে বউ মরা সাপের মত সব মেনে চলছে তাকেই বা দোষ দেন কি করে। তার উপর গরম করা দুধ চুলা থেকে মিটসেফে সরাসরি চালান হয় তাই বিড়ালের উপদ্রব অসম্ভব। বাড়ির পুরুষেরা সারাদিন মাঠের কাজে থাকেন তাহলে দুধ কমে কিভাবে। জ্বাল দেয়ার পর যতটুকু দুধ থাকার কথা তা কেন থাকেনা? না কিছুতেই হিসেব মেলেনা।

শাশুড়ী মনে মনে বউকে সন্দেহ করলেও এখনি কিছু বলতে নারাজ। প্রমানের অপেক্ষা। হঠাৎ তিনি বুদ্ধি বের করলেন। আগামিদিন থেকে একটি কাঠি দিয়ে জ্বাল দেয়া দুধ মেপে রাখবেন মানে গরম দুধের ডেকচিতে কাঠি খাড়া করে মাপ নিবেন আর সবাইকে দুধ বিতরনের সময় পুনরায় আবার মেপে নিয়ে দেখবেন দুধের কমতি হয়েছে কিনা।

যা ভাবা তা কাজ। পরের দিন জ্বাল দেয়া গরম দুধ মিটসেফে রেখে বউ ঘরের বাইরে যেতেই শাশুড়ী ঘরে ঢুকে কাঠি দিয়ে দুধ মেপে ফেলেন, কিন্তু কাঠিটি সরিয়ে নিতে ভুলে যান।

শাশুড়ি গোসলের জন্য পুকুরে গেলে বউ ঘরে এসে মিটসেফ খুলে দুধের পিপাসা মিটাতে যেই না ডেকচি থেকে দুধ পান করতে যাবেন তখনি চোখে পড়ে শাশুড়ীই সেই মাপকাটি। বুদ্ধিমতি বউ কাঠি নেড়ে দেখে তাতে দুধ লেগে আছে তাই তার আর বুঝতে বাকি নেই শাশুড়ী কি ফন্দি করেছেন।

তৎখনাৎ বউ মাথার মগজ খাটিয়ে বুদ্ধি বের করলেন, এবং দুধ পান করে সেই কাঠিটির নিচের দিক থকে ততটুকু ভাঙলেন যতটুকু ভাঙলে কাঠির উপরের অংশের দুধের দাগ অক্ষত থাকে।

আর দিনের মত খাবার বেলায় আজকেও দুধ বিলাতে গিয়ে ডেকচীর কম দুধ দেখে শাশুড়ী হিসেব মেলাতে পারেন না, অগত্যা সেই মাপ কাঠি এনে পুনরায় ডেকচির দুধ মেপে দেখেন। কিন্তু এ কি! মাপ তো ঠিকই আছে কিন্তু দুধ গেলো কই!!!!!

এই গল্প ঘিরে গ্রামীণ একটি প্রবচন আছে -
"শাশুড়ী বড় বুদ্ধিমতি, কাঠি মেপে রাখে দুধ
বউ বড় গুনবতি, কাঠি ভেঙে খায় দুধ।"

ইদানীং কেজি দরে তরমুজ বিক্রির বিষয়টি সবার জানা। প্রশাসন থেকেও পিস হিসেবে তরমুজ বিক্রির বেশ কড়া পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলা যায়।

আমার বাবা খুব তরমুজ ভক্ত। প্রচন্ড গরমে তরমুজ তার খুব খেতে মন চাইছে, তাই বাজারে গেলেন তরমুজ কিনতে।তার মনে প্রশান্তি যে প্রশাসন যেহেতু পদক্ষেপ নিয়েছে কাজেই পিস হিসেবেই তরমুজ কেনা যাবে।

বাজারে গেলেন পিস হিসেবে ছোট একটি তরমুজ কিনলেন। দাম পড়লো ২০০ টাকা। খুশি মনে বাসায় ঢুকার আগে কি জানি কি মনে করে বাসার নিচের মুদি দোকানে তরমুজ টি ডিজিটাল পাল্লায় মাপালেন ওজন দেখলেন ৫ কেজি।

প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপের আগে ব্যাবসায়ীরা জাত ভেদে তরমুজের কেজি ৪০-৬০ টাকা নির্ধারন করেছিলেন। আব্বুর আর বুঝতে বাকি নেই কেন তরমুজের দাম ২০০ টাকা নিয়েছে খুচরা বিক্রেতা।

ধিক্কার দেয়ার বদলে আব্বু হেসে দিলেন, বিষয়টি জেনে আমরাও হেসে দিলাম।
প্রশাসন আর ব্যাবসায়ীদের বউ শাশুড়ী খেলা ভালোই জমেছে বলা যায়। 🤣🤣🤣
(ছবির তরমুজ গুলো একবার ভালো করে দেখুন)

লেখা : ০১/০৫/২১ ইং


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল