ইসাহাক আলী, নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোরের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি কাঁচাগোল্লা জিআই পণ্য হিসাবে স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে। ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি কাাঁচাগোল্লা নিবন্ধনের জন্য জেলা প্রশাসন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। সকালে জেলা প্রশাসক শামিম আহমেদ এফিডেভিটের মাধ্যমে পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর, শিল্প মন্ত্রণালয়, ঢাকা প্রতিনিধির হাতে জি আই পণ্য হিসেবে কাাঁচাগোল্লা তালিকা ভুক্তির জন্য এফিডেভিটের কপি হস্তান্তর করেন ।
জেলা প্রশাসক শামিম আহমেদ জানান , যেহেতু কাঁচা গোল্লার সাথে নাটোরের আবেগ জড়িত । একারণে আমার বিদায়ের পূর্বে আমি কাজটি শুরু করেছি। আশা করছি অল্প দিনের মধ্যে জিআই পণ্য হিসেবে কাচা গোল্লা অন্তুর্ভুক্ত হবে।কারণ আদি কাঁচা গোল্লার প্রকৃতি পরিবর্তন করে বিভিন্ন স্থানে কাঁচা গোল্লা হিসাবে বিক্রি হচ্ছে। এই তালিকা ভুক্তির মধ্য দিয়ে নাটোরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ হবে।
জানা যায়,নাটোরের রানী ভবানী মিষ্টি অনেক পছন্দ করতেন। তার রাজপ্রাসাদে নিয়মিত মিষ্টি সরবরাহ করতেন লালবাজারের মিষ্টি বিক্রেতা মধুসুধন পাল। একদিন মধুসুদন পালের ২০ জন কর্মচারীর সবাই অসুস্থ হয়ে গেলো। দোকানে ২ মণ ছানা রাখা ছিল। ছানাগুলো নষ্ট হয়ে যাবে ভেবে মধুসূদন ছানার উপর চিনির সিরা দিয়ে ভিজিয়ে দেন।
এরপর এগুলো চেখে দেখেন এর স্বাদ হয়েছে অপূর্ব। এদিকে রানী ভবানীর লোকেরা মিষ্টি নিতে আসলে তিনি সিরা দেয়া ছানাগুলো পাঠিয়ে দেন। রানী ভবানী এই মিষ্টি খেয়ে অনেক প্রশংসা করেন এবং এর নাম জানতে চান। মধুসূদন পাল তখন কাঁচা ছানা থেকে তৈরি বলে এর নাম দেন কাঁচা গোল্লা।
এটিই ছিল কাঁচা গোল্লার ইতিহাস। এই গল্প নাটোরের সবার মুখে মুখে ফিরে। নাম গোল্লা হলেও এটি দেখতে গোল নয়। ছানা, চিনি ও এলাচ দিয়ে এই কাচা গোল্লা তৈরি করা হয়।এই কাঁচা গোল্লার সাথে জড়িয়ে রয়েছে নাটোর বাসীর আবেগ।
আজ থেকে ২৫০ বছর আগে কাঁচা গোল্লা আবিষ্কৃত হয়ে আজো তার সুনাম বজায় রেখেছে। নাটোরের বিয়ে এবং বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং অতিথি আপ্যায়নে এই কাঁচা গোল্লা সরবরাহ করা হয়।
সময় জার্নাল/এলআর