ইসাহাক আলী, নাটোর প্রতিনিধি:
নাটোরে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচী ও আওয়ামীলীগের শান্তি সমাবেশকে ঘিরে গুলি বর্ষণ , ঘন্টাব্যাপী ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পরিস্থিতি শান্ত করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। দুপক্ষের ইটপাটবেল নিক্ষেপে কাফুরিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সহ সভাপতিসহ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। দুই পক্ষই দুই স্থানে সমাবেশ ও পাল্টাপাল্টি অবস্থান করে এবং মাঝখানে পুলিশ বিশেষ নিরাপত্তা বেস্টনি তৈরি করে অবস্থান করে।
পূর্ব ঘোষিত কর্মর্সূচী অনুযায়ী শনিবার দুপুর দুইটার দিকে শহরের আলাইপুরে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচী পালন করছিল নেতাকর্মিরা। সেখানে বক্তব্য রাখছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ অন্যরা। তিনি বলেন , নাটোরকে উত্তপ্ত করতে ও বিএনপির কর্মসূচী পন্ড করতে আওয়ামীলীগ এসব করছে। তারা বিরোধী পক্ষের কন্ঠরোধ করতে চায়। তার বক্তব্য চলা অবস্থায় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিরা একটি মিছিল নিয়ে তাদের শান্তি সমাবেশের জন্য শহরের উপশহর মাঠের দিকে রওনা হয়। অপর দিকে বিএনপির সমাবেশ চলায় পুলিশ তাদের বাধা প্রদান করে। আর পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মিদের বিএনপি অফিসের সামনে থেকে সরিয়ে দেয়। এ সময় আওয়ামীলীগের কর্মিরা বিএনপির কার্যালয়কে লক্ষ্য করে ঘিরে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে বিএনপি নেতাকর্মিরাও পাল্টা প্রতিরোধ করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। দুলুর বাসার ছাদ থেকে বিএনপি নেতাকর্মিরা আর আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিদের রাস্তা থেকে ইটপাটকেল নিক্ষেপের সময় কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ পাওয়া যায়। এ সময় পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে , রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ওই এলাকা। প্রায় ঘন্টাব্যাপী এই পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে। সংঘর্ষে নাটোর সদর উপজেলার কাফুরিয়া ইউনিয়ন যুবদলের সহ সভাপতিসহ শরিফুল ইসলাম শরিফ আহত হলে তাকে পুলিশের সহায়তায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে পুলিশি বাধা পেয়ে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিরা রাস্তায় সমাবেশ করে। এ সময় বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীহের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান, সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য রতœা আহমেদ সহ অন্যরা। এ সময় আওয়ামীলীগ নেতারা অভিযোগ করেন , তাদের মিছিল লক্ষ্য করে গুলি করা হয়েছে। জেলা বিএনপির আহবায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু নিজে গুলি করেছেন বলে তারা দাবি করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বাচ্চুকে আটকের আল্টিমেটাম দেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান।
এদিকে এ ঘটনার পর পরই জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন আহবান করে জেলা বিএনপি। এতে জেলা বিএনপির আহবায়ক শহিদুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, আমাদের পূর্ব নির্ধারিত শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগ হামলা করে ইটপাটকেট নিক্ষেপ করেছে। তাদের অভ্যন্তরনীন ম্বন্দ্ব বিরাজমান। তারা পেশী শক্তি প্রদর্শন করে নিজেদের জাহির করার চেষ্টা করছে। তিনি পুলিশ ও প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকা দাবি করেন। বাচ্চু বলেন, পুলিশের সামনে হামলা তারা সবাইকে চেনেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। পুলিশকে মনে রাখতে হবে তারা কোন দলের কর্মি নন তারা সরকারের দেশের নিরাপত্তা কর্মি। একই অনুষ্ঠানে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ দাবি করেন, তাদের নেতাকর্মিদের উপর ইটপাটকেট নিক্ষেপ ছাড়াও গুলি চালানো হয়েছে এতে যুবদল নেতা রণি খন্দকার গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এছাড়া তাদের অন্তত ১০ নেতাকর্মি আহত হয়েছে জানান তিনি। বিএনপি নেতারা জানান, তাদের কর্মসূচীতে হামলা করায় তারা প্রতিরোধের চেষ্টা করেছেন মাত্র।
এর আগে উপশহর মাঠে বিএনপির ইফতার মাহফিলের মঞ্চ ভাংচুৃর হলে বৃষ্টির কারণ দেখিয়ে তা স্থগিত করে বিএনপি তবে ওই মাঠেই শান্তি সমাবেশের ঘোষণা দিয়ে মাইকিং করে আওয়ামীলীগ।
এ ব্যাপারে নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছিম আহমেদ জানান, বিএনপির অবস্থান কর্মসূচী চলাকালে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
সময় জার্নাল/এলআর