রাশেদ শুভ্র: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহানের জামাতা আইবিএ’র প্রভাষক এটিএম শাহেদ পারভেজের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট ভবনের তালা ভেঙে নিয়োগ সংক্রান্ত নথিপত্র চুরি করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার রাত ১০ টার পর এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করছে বিশ্বিবদ্যালয়ের দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষক সমাজ।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এই অভিযোগ তোলেন শিক্ষকরা।
সংবাদ সম্মেলনে দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষক সমাজের আহবায়ক অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, ‘অবৈধভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে উপাচার্যের জামাতা বহিরাগত ক্যাডার বাহিনী নিয়ে রাতের আঁধারে সিনেট ভবনে যান। ভবনের তালা ভেঙ্গে তিনি নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র চুরি করে নিয়ে যান।’
তিনি বলেন, সিনেট ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ও গোপনীয় নথিপত্র থাকে। সেখানে তালা ভেঙ্গে ঢুকে নথি বের করে আনা একটি বড় ধরণের অন্যায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্যের জামাতার এই কাজকে জঘন্য অপরাধ আখ্যা দিয়ে তার শাস্তির দাবি করেন শিক্ষকরা। তারা বলেন, শাহেদ পারভেজকে শাস্তির আওতায় আনা হোক, যেন ভবিষ্যতে কেউ এ ধরণের কাজ করার দুঃসাহস না দেখায়।
সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেন, ‘আজ ভিসির জামাতা সাহেদ পারভেজ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়। দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষকরা ভিসির শেষ সময়ের সিন্ডিকেট শান্তিপূর্ণভাবে বন্ধ করার চেষ্টা করলে ভিসির জামাই ও প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে শিক্ষকদের ওপর হামলা ও লাঞ্ছনা করে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের বিরুদ্ধে দায়িত্বহীনতার অভিযোগ এনে পদত্যাগের দাবিও জানান তারা।’
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহবায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে শিক্ষকরা বলেন, উপাচার্যের বিভিন্ন অন্যায়-অনিয়মের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সোচ্চার থাকলেও প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহবায়ক অধ্যাপক হাবিবুর রহমান এ বিষয়ে একদম নিশ্চুপ হয়ে আছেন। এই চুপ হয়ে থাকার মাধ্যমে তিনি উপাচার্যের দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য ও অনিয়মকে সমর্থন করে যাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজের আহবায়ক ছাড়াও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সফিকুন্নবী সামাদী, প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের যুগ্ন আহবায়ক অধ্যাপক আলী রেজা অপু, জাহাঙ্গীর আলম সাঈদ, তরিকুল হাসান মিলন, সদস্য সচিব অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পান্ডে, সদস্য অধ্যাপক এসএম একরাম উল্লাহ, আবদুল্লাহ আল মামুন ও আসাদুল হকসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক সাহেদ পারভেজের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সিনেট ভবনের তালা ভেঙ্গে নথিপত্র নিয়ে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমানজ বলেন, ‘আমি পুলিশের মাধ্যমে জানতে পেরেছি গতকাল গভীর রাত বহিরাগতসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক সিনেট ভবনের তালা ভেঙ্গে সেখান থেকে নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে আসে।’
সময় জার্নাল/এমআই