লাবিন রহমান:
প্রতি বছর ১মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসাবে পালন করা হয়। শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক নীতি আদর্শ বজায় রেখে কলকারখানায় উৎপাদন ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার নিয়ে সারাদেশে শ্রমিক সংগঠনগুলো নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে।
কি এই মে দিবস। কেন পালিত হয়। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসের ইতিহাস এবং গুরুত্ব সম্পর্কে আমাদের সকলেই অল্প বিস্তর অবগত আছি। মে দিবসের ইতিহাস সম্পর্কে আরো কিছু তথ্য চলুন জেনে নেয়া যাক।
মে দিবসের ইতিহাস
১৮৮৬ সালে ১ মে আমেরিকায় প্রথম পালত হয়েছিল মে দিবস (May Day)। সেদিন দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে আমেরিকার শিকাগো শহরের হে মার্কেটে পথে নেমেছিল শ্রমিকরা। জমায়েত করে অতিরিক্ত শ্রমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিল তাঁরা।
শ্রমিকদের জমায়েত ভাঙতে এলোপাথাড়ি বোমা, গুলি ছোড়েন পুলিশ। নিহত হয়েছিলেন বহু শ্রমিক। সেই সমস্ত শ্রমিকদের আত্মত্যাগ স্মরণে রেখেই ১ মে দিনটি আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসাবে পালিত হয়।
এই ঘটনার তিন বছর পর ১৮৮৯ সালে ফরাসি বিপ্লবের ১০০ বছর পূর্তিতে প্যারিসে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিকের প্রথম কংগ্রেস গঠিত হয়। সেখানেই ১৮৯০ সাল থেকে শিকাগো শ্রমিক আন্দোলনের দিনটিকে বার্ষিক দিবস হিসাবে পালনের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
যদিও ভারতে এই দিনটি পালিত হচ্ছে ১৯২৩ সাল থেকে। ভারত সহ মোট ৮০ টি দেশে পালিত হয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস (May Day)। বিশ্বের রাজনৈতিক ইতিহাসে মে দিবসের অসীম গুরুত্ব রয়েছে।
মে দিবসের তাৎপর্য
উনিশ শতাব্দীর আগে কারখানার শ্রমিকদের দৈনিক ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা করে কাজ করানোর চল ছিল। কিন্তু সেই তুলনায় তাঁদের বেতন ছিল যত সামান্য। যা তাঁদের জীবন ধারণের জন্যে যথাযথ ছিল না। দীর্ঘদিন ধরে এই অতিরিক্ত শ্রমের বিনিময়ে অল্প পারিশ্রমিকে খাটিয়ে নেওয়া মালিক শ্রেণীর এই ভাবধারা ভেঙে চূড়ে দিতে সক্ষম হয়েছিল মে দিবস (May Day)।
আমেরিকা থেকে ধীরে ধীরে চিন, রাশিয়া, বাংলাদেশ, ভারত সহ বিভিন্ন দেশে মে দিবসের তাৎপর্য ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠা পায় শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টা কাজ করার দাবি।
মহান মে দিবস শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের চরম আত্মত্যাগে ন্যায্য অধিকার আদায়ের এক অবিস্মরণীয় দিন। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে শ্রমজীবী মানুষেরা তাদের শ্রম দিয়ে যাবেন। তবে মালিকরাও শ্রমিকদের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়গুলো সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন; এটাই প্রত্যাশা সকলের।
সময় জার্নাল/এলআর