সাইফুল ইসলাম রুদ্র, নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি:
নরসিংদীর বেলাবতে সাধুর আশ্রমে হামলা চালিয়ে বাদ্যযন্ত্র ভাংচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার পরে আজ মঙ্গলবার সকালে প্রধান আসামী জাহাঙ্গীর শেখ (৩৫)কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর আগে সোমবার দিবাগত রাতে বেলাব থানায় ভুক্তভোগী লালন সংগীত শিল্পী খোকন চিশতী বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলায় যাদের আসামী করা হয়েছে তারা হলেন, বেলাব উপজেলার পাটুলি ইউনিয়নের ভাবলা গ্রামের মজনু শেখের ছেলে জাহাঙ্গীর শেখ (৩৫), ফজলু শেখের ছেলে শাহীন শেখ (৩২) ও শেখ মোতালিবের ছেলে ফজলু শেখ (৫৮)। এছাড়াও অজ্ঞাত আরও ৬-৭ জনকে আসামী করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বাণ চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।
তিনি জানান, শিল্পীদের বাদ্যযন্ত্র ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভুক্তভোগী শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ। পরে এই ঘটনায় সোমবার রাতে ভুক্তভোগী শিল্পী খোকন চিশতী বাদী হয়ে মামলা করেন। জাহাঙ্গীর, শাহীন ও ফজলু নামের তিনজনকে চিনতে পারায় মামলায় তাদের নামোল্লেখ করা হয়েছে। মামলার পর প্রযুক্তি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নিজ বাড়ি সংলগ্ন স্থান থেকে প্রধান আসামী জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে গত রোববার দুপুরে বেলাব উপজেলার পাটুলি ইউনিয়নের বাবলা গ্রামের মো. জাহাঙ্গীর আলমের ড্রাগন বাগানের এক কোনে গড়ে তোলা আশ্রমে সাধু সঙ্ চলাকালীন বাদ্যযন্ত্র ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। গত সোমবার সকাল থেকে এ ঘটনার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে সমালোচনা শুর হয়।
মামলার বাদী খোকন চিশতী জানান, সুমন মিয়া নামের এক লালনভক্তের চল্লিশা আয়োজন উপলক্ষে সাধুসঙ্গ করতে কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ওই আশ্রমে এসেছিলেন ১০–১২ জন লালন সংগীতশিল্পী। রোববার দুপুরে শিল্পীরা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে গান করছিলেন। ওই সময় স্থানীয় এক যুবক মদ্যপ অবস্থায় সেখানে গিয়ে উৎপাত শুর করেন। পরে শিল্পীরা তাঁকে বাগানের বাইরে বের করে দেন। ওই যুবক এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কিছুক্ষণ পর তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হামলা চালিয়ে শিল্পীদের ব্যবহৃত অন্তত ২০টি বাদ্যযন্ত্র গুঁড়িয়ে দেন। গুঁড়িয়ে দেওয়া বাদ্যযন্ত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে হারমোনিয়াম, তবলা, একতারা, ডুগি, হাতবাড়া, খমক, দোতারা, সারিন্দা, গিটার ও বাঁশি।
সময় জার্নাল/এলআর