নিজস্ব প্রতিবেদক:
আরও এক বছর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন—র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) থাকছেন এম খুরশীদ হোসেন। তার চাকরির মেয়াদ বাড়িয়ে মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
আগামী ৪ জুন সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার কথা ছিল এম খুরশীদ হোসেনের। এর মধ্যেই তার চাকরির মেয়াদ একবছর বাড়ানো হলো।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, র্যাব মহাপরিচালক হিসেবে কর্মরত বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক এম খুরশীদ হোসেনকে সরকারি চাকরি আইন ২০১৮-এর ধারা ৪৯ অনুযায়ী তার অবসরোত্তর ছুটি ও তদসংশ্লিষ্ট সুবিধাদি স্থগিতের শর্তে আগামী ৫ জুন অথবা যোগদানের তারিখ পরবর্তী এক বছর মেয়াদে স্ববেতনে র্যাবের মহাপরিচালক পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো। এই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অন্যান্য শর্ত অনুমোদিত চুক্তিপত্র দ্বারা নির্ধারিত হবে।
বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের ১২তম (পুলিশ) ব্যাচে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন খুরশীদ হোসেন। র্যাব ডিজি হওয়ার আগে তিনি পুলিশ সদরদপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন।
২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর র্যাবের নবম মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান খুরশীদ হোসেন। চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি গ্রেড-১ পদে পদোন্নতি পান। চাকরি জীবনে ঢাকা মহানগর পুলিশের বেশ কয়েকটি পদে চাকরি করেছেন এম খুরশীদ হোসেন।
মেধাবী ও চৌকস পুলিশ অফিসার হিসেবে পরিচিতি এম খুরশীদ হোসেনের গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে। ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি দুইবার পুলিশের সর্বোচ্চ পদক 'বিপিএম' এবং একবার 'পিপিএম' পেয়েছেন।
খুরশীদ হোসেন নায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার তদারকি কর্মকর্তা ছিলেন। সেসময় খুরশীদ হোসেন আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। র্যাবপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর খুরশীদ হোসেন অনেক কাজে সফল ও প্রশংসিত হয়েছেন।
এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য—নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারকীয়ার’ সন্ধান এবং তাদের মূলোৎপাটন, সিরাজগঞ্জে ৩১৫ জন সর্বহারা দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসী ২২৯টি দেশি ও বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল গোলাবারুদসহ আত্মসমর্পণ করেছে।
সাধারণ মানুষের সেবায় সব সময় র্যাবের সহযোগিতা সহজ করার জন্য নিরলস চেষ্টা করছেন এম খুরশীদ হোসেন। সম্প্রতি ঢাকা টাইমসের সঙ্গে আলাপকালে এম খুরশীদ হোসেন বলেন, ‘র্যাব এলিট ফোর্স। সমস্ত বাহিনী থেকে চৌকস সদস্যদের নিয়ে র্যাব গঠন করা হয়েছে। র্যাবের মূলমন্ত্র হলো বাংলাদেশ আমার অহংকার। এই মূলমন্ত্র আমরা ধারণ করি, লালন করি, পালন করি।’
‘আমরা দেশের মানুষের জন্য কাজ করি। এজন্য র্যাবের প্রতি মানুষের আস্থা, ভালোবাসা এবং মানুষ র্যাবকে নিরাপত্তার প্রতীক মনে করে। আমরা অপশক্তি, সন্ত্রাসী, জঙ্গি, মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে আতঙ্কের প্রতীক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চাই।’
র্যাবকে নিয়ে তার পরিকল্পনা তুলে ধরে র্যাব ডিজি বলেন, ‘আমি এই বাহিনীকে আরও স্মার্ট বাহিনী হিসেবে কাজ করছি। কারণ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের কাজ করছেন। আমি চাই, র্যাব স্মার্ট বাহিনী হিসেবে কাজ করবে।’
‘আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি, র্যাবের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। আমরা আইনের মধ্যে থেকে মানুষের পাশে থাকি, র্যাব বেআইনি কোনো কাজ করে না। এজন্যই মনে করি র্যাব ভালো কাজ করছে।’
খুরশীদ হোসেন বলেন, ‘পুলিশি কর্মজীবনে জেলার পুলিশ সুপার, ডিআইজি বা যে পদেই কাজ করেছি, যারাই আমার কাছে বিপদে এসেছে তাদেরকে আমি ফেরত দেইনি। পাবলিক হেয়ারিংটা আমি নিজে দেখেছি। একটা মানুষ অনেক দূর থেকে আশা করে আসে। তাই অন্তত তার সমস্যাটা শুনি।’
‘কারণ, আমার অফিস, ডিসির অফিস, এসপির অফিস এগুলো পাবলিক অফিস। আমরা তো জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেকথা প্রায় বলেন, আমরা শাসক হতে চাই না, সেবক হতে চাই।’
এমআই