বিনোদন ডেস্ক:
পর্দা ও মঞ্চ দুটিতেই দাপিয়ে বেড়িয়েছেন সমানতালে। মাঝখানে পেশাবদল করে চলে গিয়েছিলেন রাজনীতিতে। তারপর আবারও সেই পুরোনো ভালোবাসা অভিনয়ে ফেরা। এবার সব কিছু ছেড়ে পাড়ি দিলেন না ফেরার দেশে। হ্যাঁ, বলা হচ্ছে অস্কারজয়ী ব্রিটিশ অভিনেত্রী গ্লেন্ডা জ্যাকসনের কথা।
অসুস্থতায় ভুগে নিজ বাড়িতেই মারা গেলেন এই অভিনেত্রী। জ্যাকসনের সহকারী লিওনেল লার্নার জানিয়েছেন, লন্ডনের বাড়িতে বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) স্বল্প অসুস্থতার পর মারা যান গ্লেন্ডা। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
১৯৩৬ সালে উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের বার্কেনহেডে জন্ম গ্লেন্ডার। লন্ডনের রয়্যাল অ্যাকাডেমি অব ড্রামাটিক আর্ট-এ অভিনয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি। ১৯৬০ থেকে সত্তরের দশকের সবচেয়ে বড় ব্রিটিশ তারকাদের একজন হয়ে উঠেছিলেন গ্লেন্ডা। পরপর দুটি বছর অস্কার জিতেছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে ‘উইমেন ইন লাভ’-এর জন্য এবং ১৯৭৪ সালে ‘আ টাচ অব ক্লাস’ ছবির জন্য এই সম্মান পেয়েছিলেন।
পুরস্কৃত হলেও ব্যস্ততার অজুহাতে অস্কারের কোনো অনুষ্ঠানেই যোগ দেননি তিনি। এ ব্যাপারে গত বছর বিবিসি রেডিওকে গ্লেন্ডা বলেন, ‘পুরস্কার পাওয়া খুবই ভালো ব্যাপার। কিন্তু এগুলো আপনাকে উত্তম করে তোলে না।’
এরপর তিনি রাজনীতিতে আসেন। ১৯৯২ সালে সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করেন। তিনি লেবার পার্টির একজন আইনপ্রণেতা হিসেবে ২৩ বছর অতিবাহিত করেন। ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের প্রথম সরকারে পরিবহন মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণের জন্য ব্লেয়ারের সঙ্গে মতবিরোধে গিয়েছিলেন গ্লেন্ডা। জাতিসংঘের অনুমোদন ছাড়াই আমেরিকার সঙ্গে যুদ্ধে নামার সিদ্ধান্ত তাকে ব্যথিত করে।
২০১৫ সালে পার্লামেন্ট ছেড়ে অভিনয়ে ফিরে আসেন গ্লেন্ডা। শেক্সপিয়রের নাটক ‘কিং লিয়ার’-এ তাকে দেখে মুগ্ধ হন নাট্যপ্রেমীরা। বিপুল জনপ্রিয় হয় সেই প্রযোজনা। থিয়েটার ছিল গ্লেন্ডার প্রাণ। তবে অভিনয়ে প্রত্যাবর্তনের পর সিনে পর্দায় এসেছিলেন একটু দেরিতেই। ২০১৯ সালে ‘এলিজাবেথ ইজ মিসিং’-এ প্রায় তিন দশক পর গ্লেন্ডাকে দেখা গিয়েছিল। আবারও পুরস্কৃত হন ‘বাফটা’ সম্মানে।
সদ্য ‘দ্য গ্রেট এস্কেপার’ ছবির শুটিং শেষ করেছিলেন অভিনেত্রী। মাইকেল কেন ছিলেন তার সহ-অভিনেতা। ছবির মুক্তি আর দেখে যাওয়া হলো না গ্লেন্ডার। বর্ষীয়ান এই অভিনেত্রীর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন বিনোদন এবং রাজনীতি জগতের সহকর্মীরা।
এমআই