রেজাউল করিম রেজা, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
বিপদসীসমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ধরলা ও দুধকুমারের পানি। অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার নদীর পানি বৃদ্ধি পেলেও
এখনো বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে প্লাবিত হয়ে পড়েছে জেলার নিম্নাঞ্চলসহ চরাঞ্চলেগুলো। পানি বন্দী
হয়ে পড়েছে অন্তত ৬০ হাজার মানুষ। অনেক চরাঞ্চলের ঘর বাড়ি ও নিচু এলাকার কাঁচা পাকা সড়ক তলিয়ে থাকায় দুর্ভোগ
বেড়েছে এসব এলাকার মানুষের। অনেকে উঁচু স্থান ও নৌকায় বসবাস করছেন।
শনিবার (১৫ জুলাই) দুপুরে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস জানায়, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদ সীমার
২৫ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার ও কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ১৫
সেন্টিমিটার বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে ধরলা নদীর পানি সদর পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার ও দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উলিপুর উপজেলা বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বালাডোবা চরের আব্দুল মজিদ জানান, আমার বাড়ির চাল থেকে পানি হয়েছে।
বউ বাচ্চাকে উঁচু স্থানে রাখছি। নৌকা যোগে ঘরের অন্যন্য জিনিস পত্র খুলে নিচ্ছি। গতকাল ১০ কেজি চাল পাইছি। চাল
পেলে কি হবে রান্না করা খুব কষ্ট। খাবার পানিরও খুব কষ্ট, কনেক দুর থেকে পানি এনে খাইতে হয়। সবমিলিয়ে অনেক কষ্টে
আছি ভাই।
একই ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাডোবা চরের হাসিনা বেগম বলেন, রাত থেকে আমার ১ বছর বয়সী বাচ্চাটা অসুস্থ। প্রচুর জ্বর
সর্দি আসপাশে কোন ডাক্তার নাই। বাচ্চাটা শুধু কান্না করছে। তার কান্না দেখে খুব কষ্ট লাগছে। তাই আজ নৌকা যোগে
মোল্লার হাটে নিয়ে যাচ্ছি। কই আমাদের এখানে তো কোন সরকারি মেডিকেল টিম আসে নাই।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, কুড়িগ্রামের নদ নদীর পানি বৃদ্ধির পর
বর্তমানে কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় থাকলেও এখনো দুধকুমার ও ধরলার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে
আগামী ২-১ দিনের মধ্যে ধরলা, দুধকুমারের পানি কমতে শুরু করলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়তে পারে বলে জানান এই
কর্মকর্তা।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাঈদুল আরীফ জানান, পানিবন্দী মানুষের জন্য ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে।
আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে। গতকাল ৬শ পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে। আজও ত্রাণ কার্যক্রম
চলমান রয়েছে।
এমআই