মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

অগ্নিসন্ত্রাস, অস্থিতিশীল পরিবেশই কি টেক ব্যাক

সোমবার, জুলাই ৩১, ২০২৩
অগ্নিসন্ত্রাস, অস্থিতিশীল পরিবেশই কি টেক ব্যাক

মো: কামরুল হুসাইন:

১৯৭১সালে বাঙালির রাখালরাজা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে স্বপ্নের সোনার বাংলা গঠনের লক্ষ্যে এদেশের আপামর জনতার সংগ্রামে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়, শুরু হয় নতুন একটি দেশের অগ্রযাত্রা, সেই অগ্রযাত্রা ছিল উন্নয়নের, স্বাবলম্বী হওয়ার, মাথা উঁচু করে দাড়ানোর। ১৯৭৫সালের মর্মান্তিক আগস্ট থেকে শুরু হয় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে অপশাসন শুরু হয়, সর্বশেষ সংস্করণ ২০০১সালে বিদেশি ষড়যন্ত্রে বিএনপি জামাতের ক্ষমতায় আসা। বর্তমান প্রজন্ম হয়তো জানে না এদেশের স্বাধীনতা বিরোধী, মৌলবাদী গোষ্ঠীর আস্ফালন,  পেপার পত্রিকা কিংবা তথ্যচিত্রে যা দেখা যায় তার চেয়েও হাজারগুণ ভয়াবহ ছিল তখনকার চিত্র।

বাংলাদেশে রাজনীতি দুই পক্ষের রাজনীতি দৃশ্যমান,  একপক্ষ হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যেটি এদেশের স্বাধীনতা নেতৃত্বদানকারী,   বাঙালি জাতীয়তাবাদ তীব্র ধারণকারী। অপরপক্ষে রয়েছে এদেশের অস্তিত্বে অস্বীকারকারী,  মৌলবাদ, সন্ত্রাসবাদের এক সম্মিলিত ঐক্যজোট যার নেতৃত্বে রয়েছে বিএনপি।  স্বাধীনতা,জাতীয়তাবাদ, অস্তিত্ববাদে অস্বীকার করা বিএনপি যার জন্ম হয়েছে এদেশ স্বাধীনকারী মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তের উপর হোলি খেলা করে। বিভিন্ন সময়ে গনবিরোধী ম্যান্ডেটে গণতন্ত্রকে কলুষিত করেছে, টানা ৫বার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে যাদের শাসনামলে সেই দলের বর্তমান নায়ক, দেশপলাতক, মৌলবাদ ও সন্ত্রাসবাদের আশ্রদাতা, চিরতরে রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার মুচলেকা দিয়ে দেশ ত্যাগকারী তারেক রহমান গত বছর হঠাৎ লন্ডন থেকে শুরু করেছেন ❝টেক ব্যাক বাংলাদেশ ❞। বাচ্চা থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক সকল স্তরের মানুষ তাদের জীবনকে সম্মুখে তথা ভালো অগ্রযাত্রার জন্য ❝টেক ফরোয়ার্ড ❞ নীতি গ্রহণ করে, সেখানে কিভাবে তারেক জিয়া পিছনে যাওয়ার নীতি গ্রহণ করে সেটা সকলের কাছেই প্রশ্নবিদ্ধ। দেশ-বিদেশে প্রশ্ন উঠেছে, টেক ব্যাক নীতি কেন??? এটা কি বাংলাদেশকে আবারও ২০০১-০৬ বিএনপি সরকারের দুঃসময়কে ফিরিয়ে আনার স্বপ্ন, আবারও বাংলাদশকে কয়েক দশক পিছনে নেওয়ার ম্যান্ডেট!

আমাদেরও আরেকটু পিছনে চোখবুলাতে হবে,বেশি দূরে নয়, শুধু নিকট অতীতের ২০০১-০৬সালে, ১লা অক্টোবরের প্রহসনের নির্বাচনের রাতে,সেই রাত্রেই শুরু হয়ে গেছিল এদেশকে মধ্যযুগ, আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা। সারা দেশে কয়েকশো হিন্দু মেয়েসহ অনেক আওয়ামী ঘরানার মেয়ে ধর্ষিত হয়েছিলো। এমনকি মা- মেয়েকে একসাথে ধর্ষণ , নির্বাচনের প্রথম কয়েক মাসেই,বানিয়ার চরে গির্জায় গ্রেনেড হামলা, বাশখালীতে ১৩ জন হিন্দুকে পুড়িয়ে মারা, অসংখ্য মন্দিরে লুটপাটসহ বিভিন্ন ধরনের  অমানুষিক অত্যাচার যা অনেককে দেশত্যাগ করিয়ে ছিল।

২১ অগাস্ট আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা ও জজ মিয়া সাজানো নাটক, আইভি রহমানসহ আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মীর নির্মম মৃত্যু এবং ৩ শতাধিক লোক আহত হয়। সারা বাংলাদেশে ৫০০ জায়গায় সুপরিকল্পিতভাবে বোমা হামলা একই সময়ে। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট ৬৩ জেলায় প্রায় একই সময়ে ঘটানো জেএমবি সারা দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলা করে,বগুড়ার কাহালু ও  ময়মনসিংহে পাঁচ লাখ পিছ গুলি পরিত্যক্ত উদ্ধার করা হয়।

সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দখলে নিয়ে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য তৈরি করা, বিসিএস প্রশ্নপত্র ফাঁস প্রতিবার,সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে সকল সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের নামে বেঁছে বেঁছে ছাত্রদল-শিবিরের ক্যাডারদের আস্তানা গড়া।

আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া, সংসদ সদস্য আহসানুল্লাহ মাস্টার, হাটহাজারী কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী,অধ্যাপক হুমায়ূন আজাদ , অধ্যাপক ইউনুস, ডা: মোজাম্মেল  প্রমুখ হত্যাকাণ্ড, তৎকালীন ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত আনোয়ার হোসেনের ওপর গ্রেনেড হামলা করে গুণী, বুদ্ধিজীবীদের জন্য  দেশঅনুপযোগী করতে চেয়েছিল।

খালেদা জিয়ার ৪০০ সুটকেস নিয়ে সৌদি গমন,তারেক রহমানের মালয়েশিয়াতে ২৮ হাজার কোটি টাকা ধরা খেয়ে অধিকাংশ   মালয়েশিয়া সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত হওয়া, গিয়াস আল মামুন,হারিছ চৌধুরীদের উত্থান,  রাজাকারের গাড়িতে পতাকা, স্বাধীনতা বিরোধীদের মন্ত্রীত্ব দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয় পতাকাকে কলংকিত করা হয়েছিল।

এককথায় আইয়ামে জাহেলিয়াত তথা  সন্ত্রাসবাদ ও অপশাসনের এক উর্বর ভূমি ছিল এই বাংলাদেশ। লন্ডন পলাতক বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রক্সি প্রধানমন্ত্রীত্বে অরাজক,নিরাপত্তাহীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল ২০০১-০৬সময়ে।

বাংলাদেশের মানুষ এখনো ভুলেনি সেই দুঃসময়ের, সংখ্যালঘুরা আতকে উঠে, উন্নয়ন অগ্রযাত্রার সৈনিকরা ভয়ে কেপে উঠে। বাংলাদেশ কখনো ফিরতে চায় না সেই দুঃসময়ে, যারা স্বাধীন স্বনির্ভর বাংলাদেশ দেখতে চায়নি তাদের পরামর্শে আবার শুরু হয়েছে বাংলাদেশকে পিছনে নেওয়ার ষড়যন্ত্র। 

এর নেতৃত্বে রয়েছেন মাফিয়াখ্যাত সন্ত্রাস ও মৌলবাদের প্রশ্রয় দাতা মিঃ ১০পার্সেন্টখ্যাত তারেক রহমান অসংখ্য দুর্নীতি ও হত্যাকাণ্ডের আসামী হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিকট  প্রাণভিক্ষার মুচলেকা দিয়ে দেশত্যাগ করেছেন।
তারই পরামর্শে আবার অস্থিতিশীল পরিস্থিতির চেষ্টা করার চেষ্টা করা হচ্ছে বহুদিন ধরে, বরাবরের মতো  বিএনপি সমাবেশ থেকে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে গতকাল  মহাসচিব ও অন্যান্য নেতাদের হুঙ্কারের নমুনাও তাই, সেই ধারাবাহিকতায়  আন্দোলনের নামে অগ্নিসংযোগ,ভাংচুর, হামলা করা হচ্ছে, আজ বিএনপির অবস্থান কর্মসূচির নামে রাজধানী ঢাকার সাতটি প্রবেশমুখে রাস্তা অবরোধ, বাসে অগ্নিসংযোগ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা এককথায় জনজীবন বিপর্যস্ত। বাংলাদেশের মানুষ শান্তি চায়, শান্তিতে ঘুমাতে চায়, স্বাধীনভাবে বাচতে চায়।।

বর্তমান বাংলাদেশের মানুষ দেশরত্ন শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ, দু'বেলা ভাত খেতে পারে, শান্তিতে বাড়িতে ঘুমায়, জীবনের নিরাপত্তা আছে, আর দেশের উন্নয়নের  জন্য মেগাপ্রকল্প ৬৪জেলা জুড়ে চোখে পড়ে, দেশ ছাড়িয়ে বিদেশি মিডিয়াও বর্তমান সরকারের উন্নয়নের প্রশংসায় পঞ্চমুখ, বাংলাদেশের মানুষ এখন আর পিছনে যেতে চায় না, সবাই শুধুই সম্মুখপানে এগিয়ে যেতে চায়।

লেখক: মো: কামরুল হুসাইন
সহ-সভাপতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল