আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে অভ্যুত্থানে জড়িত কর্নেল আমাদু আবদোরাহমানে চিয়ানির বলেন, উৎখাত হওয়া প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমকে মুক্ত করে তার সরকারকে ক্ষমতায় পুনর্বহাল রাখতে সাবেক উপনিবেশে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে ফ্রান্স। ফ্রান্সের বিরুদ্ধে নাইজারে হামলার পরিকল্পনা করার অভিযোগ তুলেছে গত সপ্তাহে দেশটির ক্ষমতা দখল করা জান্তা বাহিনী।
তিনি আরও বলেন, বাজোম সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসোউমি মাসোউদুর সই করা একটি বিবৃতির মাধ্যমে ফ্রান্সকে নাইজারের বর্তমান কর্তৃপক্ষের উপর হামলা চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে নিজের বক্তব্যের পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি বা ঠিক কী ধরনের হামলা চালাতে বলেছে সে বিষয়েও সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি আবদোরাহমানে।
অন্যদিকে, ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জান্তা বাহিনীর অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। তবে দেশটি বলেছে, তরা শুধুমাত্র বাজোম সরকারকেই নাইজারের বৈধ কর্তৃপক্ষ বলে স্বীকৃতি দেয় ও সে দেশে থাকা ফরাসি নাগরিকদের সুরক্ষার দিকেই তাদের একমাত্র মনোযোগ।
গত বৃহস্পতিবার ভোরে বাজমকে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ থেকে আটক করে নাইজারের প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড বাহিনী। পরে দেশটির সামরিক বাহিনীও অভ্যুত্থানে সমর্থন জানায়।
এদিকে, নির্বাচিত সরকারকে এভাবে উৎখাতের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে আফ্রিকান ইউনিয়ন, জাতিসংঘ ও ফ্রান্সসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী। পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার দেশগুলোতে তিন বছরের কম সময়ে সপ্তম সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের ঘটনা এটি। বলা হচ্ছে, ওই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়ার প্রতি ঝুঁকে পড়ার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে।
ফ্রান্সের এ পরিকল্পনার বিষয়ে নাইজারের জান্তা অভিযোগ করার একদিন আগে পশ্চিম আফ্রিকান আঞ্চলিক ব্লক-ইসিওডব্লিউএএস থেকে সামরিক অভ্যুত্থানের জেরে নাইজারের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। প্রেসিডেন্ট বাজোমকে মুক্ত করে ক্ষমতায় পুনর্বহাল করতে প্রয়োজনে সামরিক হস্তক্ষেপের হুমকিও দিয়ে রেখেছে তারা।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে বন্দি থাকা প্রেসিডেন্ট বাজোমকে সোমবার (৩১) প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে দেখা গেছে। এদিন তিনি রাজধানী নিয়ামেতে প্রতিবেশী দেশ চাদের নেতা মোহমাত ইদ্রিস ডেবির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। চাদের প্রেসিডেন্ট দপ্তর তাদের সাক্ষাতের একটি ছবি প্রকাশ করেছে। ছবিতে একটি সোফায় ডেবির পাশে বসে থাকতে দেখা যায় হাস্যোজ্জ্বল বাজোমকে।
তাছাড়া অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের প্রধান জেনারেল আবদোরাহমানে চিয়ানির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন বাজোম। তিনি বলেন, চিয়ানির সঙ্গে বৈঠকে তিনি বর্তমান সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজে পেতে চেষ্টা করেছেন।
নাইজারের ক্ষমতা দখল করা জান্তা বাহিনী আগেই বিদেশি কোনো হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে। তারা বলেছে, বিদেশি শক্তির আক্রমণে শুধু রক্ত ঝরবে, বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। সংকট সমাধান হবে না।
সময় জার্নাল/এলআর