শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

নোটিশ ছাড়া বসত ঘরে উচ্ছেদ অভিযান, অসহায় কয়েকটি পরিবার

শনিবার, আগস্ট ৫, ২০২৩
নোটিশ ছাড়া বসত ঘরে উচ্ছেদ অভিযান, অসহায় কয়েকটি পরিবার

নোয়াখালী প্রতিনিধি:

নোয়াখালীর সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ভাটিরটেক গ্রামে কোন প্রকার পূর্ব নোটিশ ছাড়া বসত ঘর-ভিটিতে উচ্ছেদ অভিযানের অভিযোগ করেছেন কয়েকটি ভুক্তভোগী পরিবার।

সরেজমিনে জানাযায়, বুধবার (২ আগষ্ট) বিকেল ৩ টার সময় নোয়াখালী সদর উপজেলার সহকারী কমশিনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজেস্ট্রিট মোঃ বায়েজীদ বিন আখন্দ এ অভিযান পরিচালনা করেন। 

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কবিরহাট উপজেলার নলুয়া গ্রামের ছালা উদ্দিন গংদের সাথে আমাদের যায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলছিলো, হটাৎ কোন প্রকার পূর্ব নোটিশ বা কোন ধরনের খবর ছাড়া আজকে প্রশাসন এসে আমাদের বাড়িঘর সহ সব কিছু ভেঙ্গে তচনচ করে ফেলেছে।

তারপরেও আমরা তাদের কাছে আধা ঘন্টা সময় চেয়েছিলাম যাতে করে ঘরের ভিতরে থাকা আসবাবপত্র গুলো বাহির করে নিতে পারি। কিন্তু আমাদের সেই সময়টুকুও দেয়নি প্রশাসন। আমাদের ঘরের এমন অবস্থা করা হয়েছে যে আমরা অন্যত্র নিয়ে ঘরটা বসিয়ে বাচ্চাদের নিয়ে কোন রকম থাকবো সেই ব্যবস্থা টুকুও রাখেনি তারা।

এসময় ঘরের ভিতরে থাকা চাল-ডাল সহ কাথা-বালিশ থেকে শুরু করে সব কিছু পানির মধ্যে ফেলে দিয়েছে অভিযানে অংশ নেওয়া ভাড়া করা অনেক গুলো মানুষ, যাদেরকে আনা হয়েছে ঘর ভাঙার জন্য, এমন অস্থায় সবাই না খেয়ে থাকতে হচ্ছে।

এধরনের অভিযান দেখে হতাশ এলাকা বাসি। চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে পুরো এলাকা জুড়ে। এসময় এলাকাবাসী বলেন, কাউকে যদি উচ্ছেদ করতে হয় রাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী তাকে আগে নোটিশ করে একটি সময় বেঁধে দেওয়া হয়। আর আইন অনুযায়ী নোটিশে উল্লেখিত সময়ের মধ্যে জায়গা খালি না করা হলে এবং নোটিশের অমান্য করলে তার পর এধরনের অভিযান করা হয়।

কিন্তু এটা কোন ধরণের অভিযান? কোন প্রকার নোটিশ ও আগাম লাল পতাকা দিয়ে সংরক্ষিত চিহৃ না দিয়ে এ ধরণের অভিযান করে অসহায় পরিবার গুলোকে রাস্তায় এনে দাঁড় করানো পুরোটাই মানবাধিকার লঙ্গন করা ছাড়া আর কিছু নয়। হটাৎ করে এসে সন্ত্রাসীদের মত নিরীহ পরিবার গুলোর সব ভাঙচুর করে ঘরের আসবাবপত্র নষ্ট করে দিয়ে তাদের বাড়িতে থাকা নারিকেল গাছের নারিকেল, কলা গাছের কলা গুলোও নিয়ে যায়। অন্তত তাদেরকে এক ঘন্টা সময় দিলে তারা আসবাবপত্র গুলো বাহির করতে পারতো বা ঘরের চাল গুলো আলাদা করে খুলে অন্যত্র নিয়ে থাকতে পারতো।

অভিযুক্ত ছালা উদ্দিনের কাছে মুঠোফোনে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বলেন, আপনারা যা শুনার শুনেছেন আবার আমার কাছ থেকে কি জানতে চান, আমি নিজেও একজন সাংবাদিক। তিনি কিসের সাংবাদিক বা কোন পত্রিকার সাংবাদিক জানতে চাইলে তিনি আর কোন উত্তর না দিয়ে কলটা কেটে দেন। 

এই বিষয় জানতে চাইলে বিকাল ৫টায় মুঠোফোনে ধর্মপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান সাবু দায়সারা ভাবে বলেন, আমি কিছুক্ষণ আগে শুনেছি।   এবিষয়ে আমার কিছু করার নাই। উল্টো সাংবাদিকের সাথে উত্তেজিত হয়ে তিনি বলেন আমার এখন গ্রাম আদালত চলতেছে আমি এখন কিভাবে সেখানে যাবো? অপর প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, তিনি ভুক্তভোগী পরিবারের আইনজীবী, কিন্তু কোর্ট থেকে এমন আদেশ দেওয়া হয়েছে সেটা তিনি নিজেও জানেন না। তবে এটা আদালতের বিষয় তার কোন কিছু করার ছিলোনা, তিনি আরো বলেন, ঘটনাস্থলে পরে এসে দেখে যাবেন।  

অভিযান পরিচালনার দ্বায়িত্বে থাকা সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজেস্ট্রিট বায়জীদ বিন আখন্দ বলেন, আদলতের নির্দেশে আজকে এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। আদালত জেলা ম্যাজেস্ট্রিটকে নির্দেশ দিয়েছেন যে একজন ম্যাজেস্ট্রিট যেনো পুলিশকে সহযোগিতা করেন। পরে আমাকে দ্বায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যে পুলিশকে সহযোগিতা করতে। তাই আমি উপস্থিত থেকে এই উচ্ছেদ অভিযানটি পরিচালনা করি। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, নোটিশের বিষয়টি একান্ত আদালতের বিষয়। ভুক্তভোগী পরিবারকি নোটিশ পেয়েছে নাকি পায়নি সেটা আদালত দেখবে। নোটিশের বিষয় আমার দেখার বিষয় নয়। আমার কাজ হলো ফৌজদারি কোন কাজ হরে ব্যবস্থা নেওয়া, এবং পুলিশকে সহযোগিতা করা।

এবিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে জেলা ম্যাজেস্ট্রিট (ডিসি) মাহবুবুর রহমান জানান, আদালতের নির্দেশ ছিলো। কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী প্রশাসন দ্বায়িত্ব পালন করেছে। এতে ওনার কিছু করার ছিলোনা। আদালতের আদেশতো মানতে হবে।

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল