জেলা প্রতিনিধি:
১৫ ঘণ্টা অভিযান চালানোর পর মুন্সিগঞ্জের পদ্মা নদীতে ডুবে যাওয়া ট্রলারটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো নিখোঁজদের সন্ধানে কাজ চলছে।
রোববার (৬ আগস্ট) সকাল পৌনে ১০টার দিকে বিআইডব্লিউটিএ’এর সঙ্গে নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ডের ডুবুরি দল যৌথভাবে কাজ করে এটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
সকালে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে জানানো হয়, সকাল থেকে নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছে নৌবাহিনী ডুবুরি দল। এদিকে ভোর থেকেই নিখোঁজের স্বজনরা নিজ উদ্যোগে ট্রলার নিয়ে তালতলা, গৌরগঞ্জ খালে খোঁজাখুঁজি শুরু করেছেন।
এদিকে, দুর্ঘটনার কারণ উদঘাটনে জেলা প্রশাসন থেকে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে বালু বহনকারী ঘাতক বাল্কহেডটি। পদ্মার শাখা নদীতে বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ করা করার পরও কেন রাতে চলছিল তা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন নদী তীরে আসা ভুক্তভোগীরা।
বিআইডব্লিউটিএ উপ পরিচালক ওবায়দুল করিম খান জানান, দুর্ঘটনা কবলিত ট্রালারটির প্রায় ৭৫ ফুট দীর্ঘ ছিল। এর ওজন প্রায় ৭ মেট্রিক টন। নিখোঁজদের উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে।
এর আগে শনিবার (৫ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মার শাখা নদীতে বাল্কহেডের ধাক্কায় একটি পিকনিক করতে যাওয়া যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া মরদেহগুলোর পরিচয় মিলেছে। মৃতদের মধ্যে শিশুসহ ৪ জন নারী ৪ জন পুরুষ রয়েছে।
উদ্ধার হওয়া মৃতরা হলেন— মোকসেদা (৪২), পপি (২৬), শাকিব (৮), হ্যাপি (২৮), রাকিব (১২), সাজিবুল (৪), ফারিহান (১০) ও সজীব। তারা সবাই সিরাজদিখান উপজেলার লতাব্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা।
এ দুর্ঘটনায় ৩৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও এখনও নিখোঁজ রয়েছেন পাঁচজন। তাদের উদ্ধারে কাজ চালাচ্ছে উদ্ধারকারী দল।
জানা যায়, পদ্মা নদীর মাওয়া পয়েন্ট থেকে সিরাজদিখানের দিকে যাচ্ছিলো পিকনিকের যাত্রীবাহী ট্রলারটি। রাত ৮টার দিকে ঈদের পাড়া ইউনিয়নের রসকাটি এলাকায় পৌঁছালে অন্ধকারে একটি বালুবাহী বাল্কহেড ট্রলারটিকে ধাক্কা দেয়। এতে যাত্রীসহ ডুবে যায় ট্রলারটি। এসময় অনেকে সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও নিখোঁজ হয় বাকিরা। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে রাতেই।
ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক জানান, ট্রলারটিতে ৪৬ জন যাত্রী ছিল। এ ঘটনায় প্রথমে ছয়জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। পরে আরও দুই মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতদের মধ্যে ৪ নারী ও ৪ জন পুরুষ। এদের মধ্যে শিশুও রয়েছে।
দুর্ঘটনার পর পরই ট্রলারের যাত্রীদের স্বজনরা নদী পাড়ে ভিড় করছেন। সেখানে নিহত ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনরা আহাজারি করছেন।
এমআই