বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪

ডিঙি নৌকায় পর্যটকরা ঘুরছেন, ভেসে ভেসে কিনছেন পেয়ারা

রোববার, আগস্ট ৬, ২০২৩
ডিঙি নৌকায় পর্যটকরা ঘুরছেন, ভেসে ভেসে কিনছেন পেয়ারা

জেলা প্রতিনিধি:

ডিঙির আদলে বানানো। সবগুলোর আকার এক নয়। বিভিন্ন ধরনের ডিঙি নৌকায় করে পর্যটকরা ঘুরছেন । সুন্দর আসন দিয়ে বানানো হয়েছে বসার জায়গা। উপরে নেই ছাউনি, পাশেও নেই বেড়া। আসন ঠেকিয়ে বসে পর্যটকরা সব দিকেই সমানভাবে নজর দিয়ে সবুজের সমারোহ উপভোগ করেন।ভাসমান পেয়ারা বাজার বিখ্যাত থাকলেও পেয়ারা রাজ্যের সবচেয়ে বড় মোকাম ভীমরুলীতে।

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার সুবাদে সড়কপথে সকালের পেয়ারা বিকেলের মধ্যেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যায়।  
ভাসমান হাট হিসেবে বিখ্যাত হলেও ভীমরুলীর বড় মোকাম ডিঙি নৌকায় করে পেয়ারা নিয়ে আগের চেয়ে আনাগোনা কম। ঝালকাঠি শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরত্বের সড়কের পাশে ১০টিরও বেশি মোকামে পেয়ারা কেনাবেচা হচ্ছে। পেয়ারার দাম প্রতি বছরের চেয়ে ভালো পেলেও ফলন কম হওয়ায় কৃষকের আনন্দ নিরানন্দই থেকে যাচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টিতে ফুল ঝরে যাওয়ায় ফলন বিপর্যয়ে এ বছর পেয়ারার সমারোহ কম। পেয়ারা উৎপাদনে বিখ্যাত ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বানারিপাড়ার ৫৫টি গ্রাম। আষাঢ়-শ্রাবণের ভরা বর্ষায় এ অঞ্চলের নদী-খালের পাড়ে সজ্জন পদ্ধতিতে সৃজিত পেয়ারা গাছে ঝোলে সবুজ ফল।

জানা যায়, ঝালকাঠি, বানারিপাড়া ও স্বরূপকাঠি উপজেলার ৫৫ গ্রামে ফলন হয় পেয়ারার। এলাকার হাজার হাজার মানুষের কাছে ‘পেয়ারা’ অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য ও জীবিকার অবলম্বন। আষাঢ়-শ্রাবণের ভরা বর্ষায় এসব এলাকার নদী-খালজুড়ে পেয়ারার সমারোহ। দেরিতে ফুল এলেও অনাবৃষ্টিতে সেই ফুল অনেকটাই ঝরে গেছে। আষাঢ়ে পেয়ারা পাকার মৌসুম হলেও শ্রাবণের শুরুতে পেয়ারা পরিপক্ক হওয়ায় এখন জমে উঠেছে পেয়ারার হাট। ভিমরুলী, শতদলকাঠী, খাজুরিয়া, ডুমুরিয়া, কাপুড়াকাঠী, জগদীশপুর এলাকা ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

বরিশাল বিভাগের কম-বেশি সব জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পেয়ারার চাষ হলেও বরিশাল জেলার বানারিপাড়া, ঝালকাঠি সদর ও পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি ঘিরেই মূলত পেয়ারার বাণিজ্যিক চাষ। বরিশাল জেলার বানারিপাড়ার ১৬ গ্রামে ৯৩৭ হেক্টর, ঝালকাঠি জেলার ১৩ গ্রামে ৩৫০ হেক্টর, স্বরূপকাঠির ২৬ গ্রামের ৬৪৫ হেক্টর জমিতে পেয়ারা চাষ হয়। 

স্থানীয় চাষিরা জানান, আনুমানিক ২০০ বছরেরও বেশি সময় আগে বিচ্ছিন্ন আবাদ হলেও ১৯৪০ সাল থেকে শুরু হয়েছে পেয়ারার বাণিজ্যিক আবাদ। এ আবাদ ক্রমশ বাড়ছে। ২০২২ সালে অন্তত ১৯৩২ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিক পেয়ারার আবাদ হয়েছে। এ সময় ফলন হয়েছে প্রায় ২০ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু এ বছর ফলন কম হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ১০ হাজার মেট্রিক টন পেয়ারা উৎপাদন হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বলে হতাশা প্রকাশ করেন পেয়ারা চাষিরা।

কৃষক পঙ্কজ বড়াল বলেন, ‘মাঘ-ফাল্গুন মাসে পেয়ারা গাছের গোড়া পরিষ্কার করে সার প্রয়োগ করতে হয়েছে। এরপরে কাদা মাটি দিয়ে গোড়া ঢেকে দিয়েছি। তাতে প্রতিটা গাছের গোড়ায় গড়ে তিন শতাধিক টাকা ব্যয় হয়েছে। পেয়ারা গাছে যে পরিমাণ ফুল এসেছিল, বৃষ্টি না হওয়ায় তা অনেকটাই ঝরে গেছে। লাভ তো দূরের কথা, আসল খরচের টাকাই ওঠে কি না তাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’

পর্যটক ব্যবসায়ী নিশিথ হালদার শানু বলেন, ‘পেয়ারার মৌসুমকে ঘিরে দেশি-বিদেশি পর্যটক আসেন। আগে শুধু নৌপথে আসতো। এখন পদ্মা সেতু হওয়ার পর সড়কপথে অল্প সময়ের মধ্যেই যাতায়াত করা যায়। তাই পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। পেয়ারা বাগানের ক্ষতি হওয়ায় আমরা নান্দনিক ভ্রমণের সুযোগ করে দিয়েছি। পর্যটক বা দর্শনার্থীরা যাওয়ার সময় কিছু পেয়ারা কিনে নিয়ে যান বাড়ির জন্য।’

ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘জেলার সদর উপজেলায় ১৩ গ্রামে ৩৫০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে পেয়ারা চাষ হয়। পেয়ারা মৌসুমে এলাকার মানুষের কাছে ‘পেয়ারা’ অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য ও জীবিকার অবলম্বন। এবার ফলন কম হলেও চাষিরা ভালো দাম পাচ্ছেন।’

সময় জার্নাল/এলআর


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল