রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

সরকারের ঋণ ১৪.৪৮ লাখ কোটি টাকা

মঙ্গলবার, আগস্ট ৮, ২০২৩
সরকারের ঋণ ১৪.৪৮ লাখ কোটি টাকা

সময় জার্নাল ডেস্ক :

সরকারের মোট ঋণের (অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক) দায় মার্চ পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৪ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা। মূলত কাঙ্ক্ষিত হারে রাজস্ব আদায় কম, ব্যয় নিয়ন্ত্রণে কৃচ্ছ্রসাধনের নির্দেশনা পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়া এবং ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণেই ঋণের অঙ্ক দ্রুতগতিতে বাড়ছে। বিশেষ করে ডলারের মূল্যবৃদ্ধি বৈদেশিক ঋণ ব্যয়কে উসকে দিয়েছে। দায় এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, এটি চলতি বাজেটের প্রায় দ্বিগুণের সমান। আবার ঋণের বিপরীতে সুদ পরিশোধ ব্যয়ও বাড়ছে। শুধু গেল অর্থবছরে (এক বছরের জন্য) ৮০ হাজার ৪৭৬ কোটি টাকার সুদ গুনতে হয়েছে। অর্থ বিভাগের সর্বশেষ হিসাবে উঠে আসছে ঋণের তথ্য। 


সূত্রমতে, অর্থ বিভাগ চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত সরকারের মোট ঋণের হিসাবটি তৈরি করেছে। এটি অর্থ বিভাগের সর্বশেষ হিসাব। ওই হিসাবে দেখা যায়, মোট ঋণের মধ্যে অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে অর্থাৎ ব্যাংক খাতে সরকারের দায় ৪ লাখ ৯৪ হাজার ১০১ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য খাতে ঋণের দায় ৪ লাখ ২১ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। আর বৈদেশিক ঋণের অঙ্ক ৫ লাখ ৩৩ হাজার ১৯৮ কোটি টাকা।

অর্থ বিভাগের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকারের মোট ঋণ ছিল ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৮৯৮ কোটি টাকা। সেখান থেকে বেড়ে গত মার্চ পর্যন্ত ঋণের অঙ্ক দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৪৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ তিন মাসে দায় বেড়েছে ৮৮ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা।

জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম  বলেন, রাজস্ব আদায়ের পারফরমেন্স সন্তোষজনক নয়। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রাজস্ব আদায়ের অঙ্ক অনেক নিচে আছে। অপরদিকে সরকারের ব্যয়ও কমছে না। ব্যয় কমাতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রসাধন কর্মসূচি দিলেও অনেক ক্ষেত্রে পুরোপুরি নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। ব্যয় মেটাতে ঋণ করছে বেশি। তিনি আরও বলেন, এই অধিক ঋণ নেওয়ায় বেসরকারি খাতে ঋণ কমবে। ফলে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের ওপর বিরূপ প্রভাব আসবে।

জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, সরকারের ঋণের দায় বাড়ছে, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। এটি পরিশোধ করার জন্য বৈদেশিক মুদ্রার আয় সেভাবে বাড়ছে না। এটি খুবই বিপজ্জনক একটা পরিস্থিতি। এছাড়া অভ্যন্তরীণ আয় এমন পর্যায়ে যায়নি যে রাজস্ব আদায় বাড়ছে। এ প্রেক্ষাপটে সরকারের ঋণ পরিস্থিতি নিয়ে একটি পর্যালোচনা করা দরকার আছে। বিশেষ করে ঋণের মধ্যম মেয়াদি প্রাক্কলন করে একটি কৌশল বের করতে হবে। ঋণ পরিস্থিতি যেমন আছে, তেমন রাখার সুযোগ এখন আর নেই।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ঋণের ঝুঁকি স্কোর নির্ণয় করেছে। এই সংস্থার হিসাবে একটি দেশ তার মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। এর ওপরে গেলে দেশটি ঝুঁকিতে পড়বে। ওই হিসাবে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ঋণ নিয়েছে জিডিপির ৩২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের অনুপাত ২০ দশমিক ৫৭ শতাংশ এবং বৈদেশিক ঋণের অনুপাত ১২ দশমিক ০১ শতাংশ। ফলে অর্থ বিভাগের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে ঋণ গ্রহণে বাংলাদেশ ঝুঁকিমুক্ত আছে।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন জানান, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ-এর বিশ্লেষণ ধরে বলতে গেলে দীর্ঘ মেয়াদে এখনো ঋণ ঝুঁকিতে নেই বাংলাদেশ। কিন্তু ঋণ পরিশোধ করতে হচ্ছে ডলারে। এখন ডলার সংকট, অন্য জায়গায় ডলার দেওয়া যাচ্ছে না। তখনই ঋণটি বোঝা হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকি না থাকলেও নগদ ডলারের সংকটের কারণে স্বল্পমেয়াদে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে কোনো হস্তক্ষেপ সম্ভব নয়। কারণ, মেয়াদ হয়েছে, এখন শোধ করতেই হবে। না দিলে আবার ভবিষ্যতে ঋণ গ্রহণে বিপদ আসবে।

সূত্র জানায়, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় জরুরিভাবে স্বাস্থ্য খাতের ব্যবস্থাপনা, টিকা দেওয়া কার্যক্রমসহ অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে একদিকে প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়, অপরদিকে বৈদেশিক সহায়তা পাওয়ার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার। ফলে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিদেশ থেকে ২৪০ কোটি মার্কিন ডলার, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬৫৫ কোটি ডলার এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ঋণ পাওয়া গেছে ৪৫৯ কোটি ডলার।
 

এস.এম


Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.

উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ

যোগাযোগ:
এহসান টাওয়ার, লেন-১৬/১৭, পূর্বাচল রোড, উত্তর বাড্ডা, ঢাকা-১২১২, বাংলাদেশ
কর্পোরেট অফিস: ২২৯/ক, প্রগতি সরণি, কুড়িল, ঢাকা-১২২৯
ইমেইল: somoyjournal@gmail.com
নিউজরুম ই-মেইল : sjnewsdesk@gmail.com

কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল