কবি নজরুল সরকারি কলেজ প্রতিনিধি
সংবাদ প্রকাশের জেরে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) অর্থ সম্পাদক ও দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি ইকবাল মনোয়ারের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার ও ক্যাম্পাসে গণমাধ্যমকর্মীদের স্বাধীন ও সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের দাবিতে মানববন্ধন করেছে পুরান ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাস সাংবাদিকরা।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে এ মানববন্ধনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতি ও কবি নজরুল কলেজ সাংবাদিক সমিতির (কনকসাস) সাংবাদিকবৃন্দ অংশ নেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চৌধুরী ও সদস্য সচিব অপূর্ব চৌধুরী, সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ইয়াছিন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, কবি নজরুল কলেজ সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক হাসান শুভ, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রাবণী কবির এ্যামি, অর্থ সম্পাদক বাইজীদসা’দ কার্যনির্বাহী সদস্য সুদেব রায় সহ ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকরা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির অর্থ সম্পাদক মো. ইকবাল মনোয়ারকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের অন্তর্নিহিত কারণ হলো— ভিসি আব্দুল মঈনের ‘দুর্নীতির পক্ষে সাফাই গাওয়া’ সংবাদ করায় তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অবিলম্বে ইকবাল মনোয়ারের ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দিতে হবে।
সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ইয়াছিন মোল্লা বলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড.এ এফ এম, আব্দুল মঈনের বক্তব্যটি সম্পূর্ণ বিতর্কিত বক্তব্য। তিনি যেভাবে দুর্নীতির পক্ষে সাফাই গেয়েছেন দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকা তা-ই তুলে ধরেছে। এ নিয়ে ইকবালকে বহিষ্কার করা একেবারেই নীতিবহির্ভূত। আমি চাই, অতি দ্রুত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস সাংবাদিক ইকবাল মনোয়ারের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করে তার স্বাভাবিক শিক্ষা জীবন ফিরিয়ে দেওয়া হোক।
কবি নজরুল কলেজ সাংবাদিক সমিতির (কনকসাস) সাধারণ সম্পাদক আতিক হাসান শুভ বলেন, মনোয়ার ইকবাল দীর্ঘদিন ধরেই ক্যাম্পাসে তার লেখনীর মাধ্যমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা ও অনিয়মের সংবাদ তুলে ধরেছেন। সম্প্রতি ‘দুর্নীতি হচ্ছে বলেই উন্নতি হচ্ছে’ শীর্ষক যে প্রতিবেদন ইকবাল করেছেন, সেখানে যদি কোনও অসঙ্গতি থেকে থাকে, তাহলে কুবি উপাচার্যের উচিত ছিল প্রতিবাদলিপি দেওয়া। এভাবে হুট করে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে একজন শিক্ষার্থীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে সরাসরি বহিষ্কারাদেশ দেওয়া সুস্পষ্টভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ক্ষমতার অপব্যবহার।
তিনি আরও বলেন, আমি উপাচার্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে বলতে চাই, অবিলম্বে ইকবাল মনোয়ারের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে ক্যাম্পাসে তার স্বাভাবিক অবস্থান ফিরিয়ে দেন। আগামী সাত দিনের মধ্যে যদি বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা না হয়, তাহলে আমরা সামনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা দেবো।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের নবীনবরণ ও প্রবীণ বিদায় অনুষ্ঠানে কুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন বলেন, ‘অনেকেই বলে দেশে দুর্নীতির কারণে উন্নয়ন হচ্ছে না। কিন্তু আমি বলবো উল্টো কথা। দেশে দুর্নীতি হচ্ছে বলেই উন্নতি হচ্ছে।’ পরে বিষয়টি নিয়ে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে সাংবাদিক ইকবালকে সাময়িক বহিষ্কারাদেশ দেয় প্রশাসন।
সময় জার্নাল/এলআর