সর্বশেষ সংবাদ
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নানামুখী আলোচনার মধ্যে পশ্চিমা কূটনীতিকদের তৎপরতাও বেড়েছে। এতে মূল ভূমিকায় আছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। নিয়মিত কূটনৈতিক বৈঠক করছেন তিনি। গত ১৬ আগস্ট ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ব্রেন্ড স্পেনিয়েরের সঙ্গে তার বাসভবনে মধ্যাহ্নভোজ ও বৈঠক করেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশের নির্বাচন ঘিরে বাইডেন প্রশাসনের নীতির পক্ষে পশ্চিমা সমর্থন জোরালো করার চেষ্টা করছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত। আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও।বাংলাদেশের নির্বাচন ঘিরে মার্কিন তৎপরতা প্রসঙ্গে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ার শিলার বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য আন্তর্জাতিক মানের অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে বাংলাদেশকে সমর্থন করা। যেখানে এদেশের জনগণ তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারবেন। আমরা কখনোই কোনো পক্ষ নিই না। আমরা কোনো রাজনৈতিক দল বা কোনো বিশেষ প্রার্থীর পক্ষেও নই।’
তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বাইডেন মানবাধিকারকে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে রেখেছেন। আমরা প্রকাশ্যে ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারসহ মানবাধিকারের জন্য সংগ্রামরত মানুষের সমর্থনে কথা বলতে দ্বিধা করব না। আমরা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশকে সমর্থন করি, যেখানে সব বাংলাদেশি উন্নতি করতে পারবে।’
ভিসা নীতি প্রসঙ্গে ব্রায়ান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে মূল্যায়ন করে। ভিসা নীতির উদ্দেশ্য, যারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে চায় তাদের সমর্থন করা। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ, মিডিয়াসহ সবার।’ ভিসা নীতি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানকে সমর্থন করবে বলেও আশা করেন তিনি।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের রাজনীতি ও নির্বাচন ইস্যুতে সব রকম আলোচনায় থাকছে যুক্তরাষ্ট্র। আর বড় রাজনৈতিক দলগুলোও যেন আমেরিকার দিকে তাকিয়ে আছে। এই পরাশক্তি সরকারকে চাপ দিলে বিরোধী দলের আন্দোলন চাঙ্গা হয়, আর তারা স্বাভাবিক সম্পর্কের পথে অগ্রসর হলে সরকারি দলে স্বস্তি আসে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ না জানানো, নির্বাচন ইস্যুতে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের তৎপরতা, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিকে ফেরত না দেওয়া, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ইস্যু এবং নতুন ভিসা নীতি, কংগ্রেসম্যানদের চিঠিসহ নানা কারণে যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ে সরকারের মধ্যে অস্বস্তি রয়েছে। তবুও দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, নিয়মিত অংশীদারি সম্পর্ক এবং কূটনৈতিক যোগাযোগ স্বাভাবিক গতিতেই রয়েছে। মানবাধিকার ইস্যু ছাড়াও গণতন্ত্র খর্ব, রাজনৈতিক নিপীড়ন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, দুর্নীতি ও অর্থ পাচারসহ মার্কিন উদ্বেগের বিষয়ে কূটনৈতিক চ্যানেলে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। গত বছর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একের পর এক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করছেন। গত জুলাইয়ে বাংলাদেশে ঘুরে গেলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নাগরিক নিরাপত্তা, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি আজরা জেয়া। তার সঙ্গে গত দেড় বছরে তৃতীয়বারের মতো ঢাকা সফর করে যান দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু। এরপর এ মাসেই দুই কংগ্রেসম্যান রিচার্ড ম্যাকরমিক ও এড কেইস এবং বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিষয়ক মার্কিন সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউ ঢাকা সফর করেন। সেপ্টেম্বরের মধ্যে আরও উচ্চ পর্যায়ের কমর্কতাদের সফরের বিষয়ে যোগাযোগ চলছে।
এদিকে আগামী ৮ অক্টোবর প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র। আর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় দুই দেশের নিরাপত্তা সংলাপের তারিখ নির্ধারণের কাজও চলমান রয়েছে। এত কিছুর পরও দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন কমছে না বলে মনে করেন পর্যবেক্ষকরা।২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের সময়ও মার্কিন তৎপরতার কারণে ঢাকা-ওয়াশিংটন টানাপোড়েন ছিল। তবে ওই দুই নির্বাচনের পরপর সম্পর্ক স্বাভাবিক গতি পেয়েছিল। তবে এবার জাতীয় নির্বাচনের নির্ধারিত সময়ের অনেক আগে থেকেই এ নিয়ে তৎপরতা শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। আর এ তৎপরতার কারণে গত দেড় বছরে গণমাধ্যমে বারবার খবরের শিরোনাম হয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
তিনি গত বছর মার্চে ঢাকায় আসার পরপরই সফরে আসেন রাজনীতি বিভাগের মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি ভিক্টোরিয়া নুল্যান্ড এবং ডোনাল্ড লু। ওই সফরে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টি আলোচনার পাশাপাশি গুরুত্ব পায় বাংলাদেশের নির্বাচন ইস্যু। এরপর থেকেই স্পষ্ট হতে থাকে বাংলাদেশের নির্বাচনকেন্দ্রিক মার্কিন তৎপরতা। মানবাধিকার, সুশাসন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ দেওয়া শুরু করে। পিটার হাস সরকারি, বেসরকারি নানা আলোচনায় এ ব্যাপারে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন। তবে তিনি শুরু থেকেই বাইডেন প্রশাসনের অবস্থান জানিয়ে বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনই তাদের ফোকাস।
এদিকে পিটার হাস গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে ঢাকার শাহীনবাগে নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বাড়িতে গিয়েও আলোচিত হন। সেখানে ‘মায়ের কান্না’ নামে আরেকটি সংগঠন তার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তিনি দ্রুত চলে আসেন। ফলে সেখানে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয়। অন্যদিকে নির্বাচন ইস্যুতে তিনি রীতিমতো পশ্চিমা দুনিয়ার নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, গত দেড় দশকে ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক বন্ধুত্ব, চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক দৃঢ় সম্পর্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্পর্ক আরও জোরদার করার পাশাপাশি ভারসাম্যের কূটনীতি বজায় রেখেছে শেখ হাসিনার সরকার। করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট বৈশ্বিক অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেও এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ভৌগোলিক অবস্থান, ভূ-রাজনীতি, ভূ-অর্থনীতি ও কৌশলগত নানা কারণ ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা বাংলাদেশকে নিজেদের বলয়ে রাখতে মরিয়া বিশ্বের দুই পরাশক্তি চীন ও যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে চীন থেকে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি আমদানি করে এবং যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি করে। দুই শক্তিধরের সঙ্গে সম্পর্কের রসায়নও ভিন্ন। তবুও যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, বাংলাদেশের সরকারের প্রভাব বলয়ে এবং নীতিনির্ধারক মহলে চীনের প্রভাব একচেটিয়া হয়ে গেছে।এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা-সংক্রান্ত অ্যাকুজিশান অ্যান্ড ক্রস-সার্ভিসিং এগ্রিমেন্ট (আকসা) ও জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট (জিসোমিয়া) সই করতে চায়। এই দুটি চুক্তির অধীনে মার্কিন বাহিনী খাদ্য, জ্বালানি, গোলাবারুদ, সামরিক সরঞ্জামাদি সামরিক গোয়েন্দা তথ্যের বিনিময় করতে চায়। অন্যদিকে, বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি অংশীদার যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন বহুজাতিক জ্বালানি করপোরেশন শেভরন স্থানীয় গ্যাসের সিংহভাগ উৎপাদন করে। জ্বালানি খাতে মার্কিন বিভিন্ন কোম্পানির প্রস্তাবও সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে। এমন বাস্তবতায় নির্বাচন ঘিরে বাংলাদেশকে চাপে রেখে যুক্তরাষ্ট্র তাদের স্বার্থ আদায় করে নিতে চাইছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদ ও বিভিন্ন আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের কড়া সমালোচনা করেছেন। গত বুধবার জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায়ও তিনি বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আসলে বাংলাদেশকে ব্যবহার করে বঙ্গোসাগরের নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়।’যদিও এ ধরনের অভিযোগ বার বার অস্বীকার করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তো স্পষ্টই যুক্তরাষ্ট্রের চাওয়া ও মনোভাব প্রসঙ্গে বলেছেন। সবাই বোঝে তাদের চাওয়ার অনেক কিছু রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ সরকার দেশ ও জনগণের স্বার্থ বিবেচনা করেই যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র এখন আর আগের মতো কঠোর মনোভাব প্রকাশ করছে না। তাদের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক আছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন ইস্যুতে বাইডেন প্রশাসন ও বাংলাদেশ সরকারের চাওয়া অভিন্ন।’ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের (আইপিএস) কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেছে বলে মনে করছেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘ভূরাজনীতি ও কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দেশ। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান শক্তি ও প্রভাব ঠেকানো, এ অঞ্চলে বাণিজ্য সম্প্রসারণসহ নানা কারণে মার্কিন স্বার্থেই বাংলাদেশকে প্রয়োজন। আইপিএসের কারণে বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের তাৎপর্যও বেড়েছে। তাই যেভাবেই হোক বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের মতো করে নিজেদের পাশে নিতে চাইবে।’
অভিজ্ঞ এই কূটনীতিক মনে করেন, ‘মার্কিন প্রশাসন এখন আর ভারতের দৃষ্টিতে নয়, তারা নিজস্ব নীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশকে দেখে।’এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচন ইস্যুতে বিদেশি তৎপরতা বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলছে বিএনপি ও সমমনাদের এক দফার আন্দোলনের কর্মসূচি। যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন ইস্যুতে কখনো সোচ্চার, আবার কখনো নীরব।এ বিষয়ে মন্তব্য চাওয়া হলে বিএনপির প্রচার সম্পাদক ও মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র একটি গণতান্ত্রিক দেশ। তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের কাজ করছে। আর বিএনপি জনগণকে সম্পৃক্ত করে এক দফা দাবি বাস্তবায়নে আন্দোলন আরও জোরদারের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করবেন এবং সংসদ ভেঙে দেবেন। এরপর নির্বাচনী পরিবেশ তৈরির জন্য যে কোনো নামে একটি নির্দলীয় সরকার হবে, যার অধীনে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
এস.এম
এ বিভাগের আরো
Somoy Journal is new coming online based newspaper in Bangladesh. It's growing as a most reading and popular Bangladeshi and Bengali website in the world.
উপদেষ্টা সম্পাদক: প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পারভেজ
কপিরাইট স্বত্ব ২০১৯-২০২৪ সময় জার্নাল