স্পোর্টস ডেস্ক:
পা হড়কালেই শিরোপার আশা শেষ হয়ে যেতে পারে। আথলেতিক বিলবাওয়ের বিপক্ষে রিয়াল মাদ্রিদের লড়াইটা তাই শুধু প্রতিপক্ষের ১১ জনের বিপক্ষে ছিল না, স্নায়ুচাপ ধরে রাখার কঠিন পরীক্ষাও। অনেক কষ্টে চ্যালেঞ্জটা জিতে লা লিগার শিরোপা ধরে রাখার আশা বাঁচিয়ে রাখল জিনেদিন জিদানের দল।
প্রতিপক্ষে মাঠে রোববার লিগ ম্যাচটি ১-০ গোলে জিতেছে রিয়াল। কম সুযোগের ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধে সৌভাগ্যের ছোঁয়ায় গোলটি করে তারা।
একসঙ্গে মাঠে নেমেছিল শিরোপা লড়াইয়ে থাকা তিন প্রতিদ্বন্দ্বী। সেল্তা ভিগোর বিপক্ষে ঘরের মাঠে ২-১ গোলে হেরে ছিটকে গেছে বার্সেলোনা। তবে ছুটে চলেছে আতলেতিকো মাদ্রিদ। ওসাসুনার বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও শেষ ১০ মিনিটে দুবার জালে বল পাঠিয়ে ২-১ গোলের অসাধারণ এক জয় তুলে নেয় দিয়েগো সিমেওনের দল।
এতে শিরোপা-ভাগ্য নিজেদের হাতে নিয়েই শেষ রাউন্ডে মাঠে নামবে আতলেতিকো।
৩৭ রাউন্ড শেষে ৮৩ পয়েন্ট নিয়ে সবার ওপরে আতলেতিকো। ২ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে রিয়াল।
আসরে প্রথম দেখায় গত ডিসেম্বরে ঘরের মাঠে বিলবাওকে ৩-১ গোলে হারিয়েছিল রিয়াল। তবে পরের মাসে স্প্যানিশ সুপার কাপের সেমি-ফাইনালে এই দলের কাছেই ২-১ গোলে হেরে যায় জিদানের দল।
প্রথমার্ধ জুড়ে একের পর এক আক্রমণ করে রিয়াল। তবে পারেনি তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে। প্রতি আক্রমণে সুবিধা করতে পারেনি বিলবাও-ও।
২৭তম মিনিটে বিলবাওয়ের ডি-বক্সে তাদের ফরোয়ার্ড হোন মোর্সিলোর হাতে বল লাগলে পেনাল্টির আবেদন করে রিয়াল। রিপ্লেতে দেখা যায় শরীর থেকে মোর্সিলোর হাত দূরে ছিল। তবে ভিএআর দেখে খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রেফারি।
বিরতির আগের কয়েক মিনিটে পাল্টা চাপ দেয় বিলবাও। ৪৩তম মিনিটে গোল পেতেও পারতো তারা; কিন্তু আলেহান্দ্রো রেমিরোর ফ্রি কিকে বল পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়।
ম্যাচে প্রথম লক্ষ্যে শট দেখা যায় দ্বিতীয়ার্ধের পঞ্চম মিনিটে। দুরূহ কোণ থেকে জোরালো শট নেন মোর্সিলো; তবে সোজাসুজি থাকায় ঠেকাতে সমস্যা হয়নি থিবো কোর্তোয়ার। আট মিনিট পর লুকা মদ্রিচের শট ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ফেরান স্বাগতিক গোলরক্ষক উনাই সিমোন।
এরপর ম্যাচে গতি বাড়তে থাকে। ৬১তম মিনিটে ভাগ্যের ফেরে গোলবঞ্চিত হয় রিয়াল; কাসেমিরোর হেড বাধা পায় ক্রসবারে। এর সাত মিনিট পর এগিয়ে যায় তারা, যদিও গোলটি নিয়ে বিতর্ক ছড়াতে পারে।
ছোট করে নেওয়া কর্নারের পর সতীর্থের পা ঘুরে ডি-বক্সে ডান দিকে বল পান কাসেমিরো। এক-দুই পা এগিয়ে ছয় গজ বক্সের মুখে ক্রস বাড়ান তিনি, বল ঠাই দাঁড়িয়ে থাকা নাচো ফের্নান্দেসের পায়ে লেগে জালে জড়ায়। অফসাইড পজিশনে থাকা বেনজেমা বলে পা লাগানোর চেষ্টা করেছিলেন, তবে ভিএআরে গোলের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে।
এদিকে রিয়ালের গোল উদযাপন আর একই সময়ে শুরু হওয়া আরেক ম্যাচে আতলেতিকোর জালে বল। জমজমাট শিরোপা লড়াই পায় নতুন মাত্রা। যদিও ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানোর ওই ম্যাচে একটু পরই স্কোরলাইনে সমতা টানে আতলেতিকো।
একটু পর গোল খেতে বসেছিল রিয়ালও। ৮৩তম মিনিটে মিকেল ভেসগার দারুণ হেড পোস্ট ঘেঁষে বাইরে গেলে সে যাত্রায় হাফ ছেড়ে বাঁচে রিয়াল।
নির্ধারিত সময় শেষের আগের মিনিটে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন রাউল গার্সিয়া। তাতে ঘুরে দাঁড়ানোর আশাও প্রায় শেষ হয়ে যায় বিলবাওয়ের। বাকিটা সময় পার করে শিরোপা লড়াইয়ের শেষ ধাপে পা রাখে রিয়াল।
শেষ দিনে আতলেতিকোর প্রতিপক্ষ স্বাগতিক রিয়াল ভাইয়াদলিদ। আর রিয়াল ঘরের মাঠে খেলবে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে।
সব আশা শেষ হয়ে যাওয়া বার্সেলোনা ৭৬ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে আছে। তারপরেই থাকা সেভিয়াও হেরেছে। ভিয়ারিয়ালের মাঠে ৪-০ গোলে হারা সেভিয়ার পয়েন্ট ৭৪।
৫৯ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানে রিয়াল সোসিয়েদাদ। ৫৮ পয়েন্ট নিয়ে ছয় নম্বরে রিয়াল বেতিস। সমান পয়েন্ট নিয়ে ইউরোপা লিগে জায়গা করে নেওয়ার লড়াইয়ে আছে ভিয়ারিয়াল।
সময় জার্নাল/এমআই